ববিতার জরাজীর্ণ ছাপড়া ঘরে নতুন তিন অতিথি

এক সঙ্গে তিন ছেলে সন্তান জম্ম দেয় ববিতা

ববিতার জরাজীর্ণ ছাপড়া ঘরে নতুন তিন অতিথি

Other

ববিতার জরাজীর্ণ ছাপড়া ঘরে এলো নতুন তিন অতিথি। অতিথিদের বুকে জড়িয়ে হতাশায় জীবন-যাপন করছেন কিরন-ববিতা দম্পতি। অসহায় এই দম্পতি পদ্মা নদীর ভাঙনের শিকার হয়েছেন তিন বার।

সর্বশেষ ২০২১ সালে পদ্মা নদীর ভাঙনের কবলে পরে।

এখন রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলা দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট এলাকায় একটি জরাজীন্ন ছাপড়া ঘরে বসবাস।

সরেজমিন গিয়ে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, দিনমজুর কিরন মুন্সি এক সন্তানের বাবা। গত বর্ষায় পদ্মার নদীর ভাঙনে শিকার হয়ে রাস্তার পাশে একটি জরাজীর্ণ ছাপড়া ঘর তুলে বসবাস করেন।

এই জরাজীর্ণ ছাপড়া ঘরে এক সাথে তিন ছেলে সন্তান জম্ম দেয় ববিতা।

এক সাথে তিন সন্তান জম্ম দেওয়ায় আনন্দের বর্না বয়ে যায় অসহায় পরিবারে।

তিন সন্তান এক সাথে পেয়ে যেমন খুশি হয়েছেন। ঠিক তেমনি হতাশায় দিন পার করছেন স্বামী-স্ত্রী। কিভাবে এই নতুন অতিথিদের মুখে খাবার তুলে দিবেন। কিভাবে এদের সুস্থ্য রাখবেন। এই চিন্তায় দিন-রাত কাঁটাতে হচ্ছে। তিন ছেলে সন্তান জম্ম দেওয়াে পূর্বে ৭/৮ বছরের এক পুত্র সন্তান রয়েছে এই দম্পতির।  

আরও পড়ুন:


ইউপি নির্বাচনের পঞ্চম ধাপে নৌকা পেলেন যারা


না, এমন হতাশা বেশি দিন কাঁটাতে হয়নি। কিরন-ববিতা দম্পতির সংসারে কালো মেঘ কাঁটিয়ে সুন্দর এক ঝলমলে সূর্য উঠেছে। অসহায় এই মায়ের পাশে উপস্থিত হয়েছেন গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আজিজুল হক। দায়িত্ব নিয়েছেন তিন সন্তানের ভরন-পোষনের। দায়িত্ব নিয়েছেন চিকিৎসার। থাকার জন্য দিতে চেয়েছেন মজিব বর্ষের একটি পাকা ঘর।  

এক সাথে তিন ছেলে সন্তান জম্ম দেওয়া ববিতা আবেগ জরীত কণ্ঠে এই নিউজ টোয়েন্টিফোরকে বলেন, সন্তান জম্ম দেওয়া মধ্যে যে আনন্দ, আমি সেটা পেয়েছি। কিন্তু আমার এই নারী কাঁটা সন্তানদের আমি কিভাবে মুখের খাবার তুলে দিব। সেই চিন্তায় দিন-রাত পার করছি। আমার স্বামী কিরন মুন্সি একজন দিনমজুরের কাজ করেন।

সেই আয় দিয়ে সংসারে কোন রকম চলে যাচ্ছে। এর মধ্যে হঠাৎ পদ্মা নদীর ভাঙনের কারণে গৃহহারা হয়ে পড়ি। কোন রকম এই জায়গায় একটি ছাপড়া ঘর তুলে বসবাস করছি।  

আজ আমার এই ভাঙ্গা ঘরে এক সাথে তিন সন্তান। আমি এই শিশু সন্তানদের কিভাবে লালন-পালন করব। তবে, আজ হঠাৎ আমার এই ভাঙ্গা ঘরে স্যার এসে হাজির। স্যারের আশ্বাস পেয়ে সন্তান জম্ম দেওয়ার আনন্দ পেলাম আমি। আনন্দের নিশ্বাস নিতে পারছি আজ।  

তিন ছেলে সন্তান জম্ম দেয় ববিতা

নতুন এই তিন ছেলে সন্তানের বাবা কিরন মুন্সি বলেন, আমার এই ভাঙ্গা ঘরে স্যার এসেছে। আমার সন্তানদের খাবারের দায়িত্ব নিয়েছে। আমার অনাগত সন্তানের মুখের খাবার তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। এই আনন্দ বলে বুঝানো যাবে না। আমি স্যারকে ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করবো না। শুধু দোয়া করি স্যার দীর্ঘজীবি হোক। অসহায় মানুষের পাশে এভাবেই দাঁড়াবে।  

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আজিজুল হক খান মামুন জানান, আমি গোয়ালন্দ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শফিক শামীমের নিকট থেকে সংবাদ পেয়ে ছুটে এসেছি। আমার বেতনের টাকা দিয়ে এই তিন শিশু সন্তানের জন্য কিছু শিশু খাবার নিয়ে এসেছি। আমি আন্তরিকতার সাথে তিন সন্তানের দায়িত্ব নিয়ে বলছি এই অসহায় পরিবারের পাশে আমি আছি, থাকবো। আমার এই সহযোগিতা চলমান থাকবে।  

তিনি আরও বলেন, এই পরিবারের জন্য মজিব বর্ষের একটি পাকা ঘরও দেওয়া হবে। যেন এই পরিবার শিশু বাচ্চাগুলো নিয়ে ভাল একটি জায়গায় নিরপদে থাকতে পারে।  

news24bd.tv/ কামরুল