টানা বর্ষণে বিপর্যস্ত বান্দরবান,পাহাড় ধসের শঙ্কা

পুরোনো ছবি

টানা বর্ষণে বিপর্যস্ত বান্দরবান,পাহাড় ধসের শঙ্কা

রাঙ্গামাটির সাথে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ
কবির হোসেন সিদ্দিকী • বান্দরবান প্রতিনিধি

সাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে বান্দরবানে টানা ৩ দিনের ভারি বর্ষণে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বান্দরবান-রাঙ্গামাটি সড়কের পুল পাড়া এলাকায় সড়কে কোমর পানি উঠেছে। এতে বান্দরবানের সাথে রাঙ্গামাটির সড়ক যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়েছে। এছাড়া কোথাও কোথাও ধসে পড়েছে ছোট-বড় পাহাড়।

আরো ব্যাপক হারে পাহাড় ধসের আশঙ্কায় সতর্কতা জারি করেছে প্রশাসন। এদিকে, বর্ষণ অব্যাহত থাকায় বন্যার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।  

৩ দিনের ভারি বর্ষণে বান্দরবান জেলা সদর, নাইক্ষ্যংছড়ি ও লামা উপজেলার নিম্নাঞ্চল এখন পানির নিচে। বন্যা দুর্গতরা এরই মধ্যে আশেপাশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে।

ঝুঁকিপুর্ণ পাহাড়ে বসবাসরতদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে জেলা প্রশাসন, স্থানীয় প্রশাসন ও পৌরসভার পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে।  

বান্দরবানে প্রতি বছর কী পরিমাণ পাহাড় ধস হচ্ছে- এর সঠিক তথ্য সরকারি-বেসরকারি কোনো সংস্থার কাছে নেই। তবে বান্দরবান মৃত্তিকা ও পানি সংরক্ষণ কেন্দ্র বলছে, যেসব এলাকায় পাহাড় কেটে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, ভৌত অবকাঠমো তৈরি করা হচ্ছে, সেসব এলাকাতে পাহাড় ধসের ঘটনা বেশি ঘটছে।  

news24bd.tv

বান্দরবান মৃত্তিকা ও পানি সংরক্ষণ কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মাহাবুবুল আলম নিউজ টোয়েন্টিফোরকে বলেন, অবাধে বনাঞ্চল উজাড়ের ফলে বর্তমানে জেলার অধিকাংশ পাহাড় ‘নগ্ন ভূমিতে’ পরিণত হয়েছে। আর ওইসব পাহাড় কেটে ভূমি ব্যবসায় নেমেছে ক্ষমতাশীন দলের নেতা-কর্মীরা। এছাড়াও পাহাড়ের পাদদেশে অপরিকল্পতভাবে বসতি গড়ে তুলছেন উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত ও দরিদ্ররা।  

স্থানীয়রা জানান, পাহাড়ে বসবাসকারীদের অন্যত্র বসতি গড়ার উপায় নেই। তাই বাধ্য হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও এখানে বসবাস করছেন তারা।  
 
পরিসংখ্যান বলছে, পাহাড় ধসে ২০০৬ থেকে চলতি বছরের মে পর্যন্ত সদর, রোয়াংছড়ি, লামা, ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় নারী-শিশুসহ ১১৮জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ৫ শতাধিক মানুষ।  

প্রতি বছর পাহাড় ধসে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনার ঘটলেও বর্ষা আসলেই প্রশাসন কিছু বৈঠক ও মাইকিংয়ের মাধ্যমে তাদের দায়িত্ব শেষ করে।
 
বান্দরবান জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ ও ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় যাতে লোকজন বসবাস করতে না পারে, সেজন্য নিয়মিত মাইকিং করা হচ্ছে। এসব বিষয়ে সভায় উপস্থাপনসহ উপজেলা পর্যায়েও ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সর্বোপরি জনগণকে সচেতন করার প্রচেষ্টা অব্যহত আছে।    

বনাঞ্চল উজাড়, পাহাড় কাটা বন্ধ, পরিকল্পতভাবে বনায়ন ও ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের পুনর্বাসন করা গেলে পাহাড় ধস কমে আসবে বলে ধারণা স্থানীয় সচেতন মহলের।

কবির/অরিন/নিউজ টোয়েন্টিফোর