ইসলামে আংটি ও হাতের বালার ব্যবহার 

ফাইল ছবি

ইসলামে আংটি ও হাতের বালার ব্যবহার 

মারজিয়া আক্তার  

অলংকার মানুষের রুচিবোধ, ব্যক্তিত্ববোধ, আর্থিক অবস্থা ও জীবনাচারের প্রকাশ ঘটায়। ফ্যাশন ও মডেলিংয়ের এ যুগে অলংকারের নিত্যনতুন ব্যবহারবিধি, রূপ ও পদ্ধতি প্রকাশিত হচ্ছে। ইসলাম বরাবরই সৌন্দর্যবোধকে পছন্দ করে। তবে সব বিষয়েই ইসলামের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা রয়েছে।

এখানে আংটি ও হাতের বালা ব্যবহারের নীতিমালা বর্ণনা করা হলো—

আংটির ব্যবহার

পোশাকের ক্ষেত্রে দেহের সৌন্দর্য বৃদ্ধির অন্যতম মাধ্যম হলো আংটির ব্যবহার। শরিয়তে আংটি ব্যবহার করা শর্ত সাপেক্ষে বৈধ। যেসব ধাতু কাফিরদের সঙ্গে কিংবা তাদের বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে সাদৃশপূর্ণ; যেমন—সিসা, পিতল, কাঁসা ও লোহার আংটি ব্যবহার করা মুসলমানদের জন্য মাকরুহ। পিতল, কাঁসা ইত্যাদি ধাতব কাফিরদের মূর্তি নির্মাণ ও আসবাব নির্মাণের ক্ষেত্রে বেশি ব্যবহৃত হয়।

তাদের অনেকে লোহাকে বিশেষ পূজা-অর্চনায় ব্যবহার করে। [ইসলাম বনাম বিজাতির অনুকরণ, হাকিমুল উম্মত ক্বারী তৈয়্যব সাহেব (রহ.), পৃষ্ঠা ১৭১-১৭]

পুরুষের জন্য দুই শর্তে আংটির ব্যবহার করা জায়েজ। এক. রুপার আংটি ব্যবহার করবে। দুই. পাঁচ মাশা (৪.৮৬ গ্রাম) থেকে কম হতে হবে।

নারীদের জন্য আংটি ছাড়া যেকোনো ধাতুর অলংকার ব্যবহার করা বৈধ। আংটির ক্ষেত্রে কেবল যেকোনো পরিমাণ সোনা ও রুপা ব্যবহার করা জায়েজ। অন্য ধাতুর আংটির ব্যবহার বৈধ নয়। পুরুষের জন্য সোনার আংটির ব্যবহার নিষিদ্ধ। (সূত্র : আহসানুল ফাতওয়া, খণ্ড : ৮, পৃষ্ঠা ৬৯-৭০/রদ্দে মুখতার, খণ্ড : ৫, পৃষ্ঠা ২২৯)

তবে অসুস্থতার কারণে বিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে অন্য ধাতুর আংটি ব্যবহার করা যাবে। আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) রাষ্ট্রীয় দাপ্তরিক কাজে সিলমোহর হিসেবে রুপার আংটি ব্যবহার করতেন। এতে লেখা ছিল ‘মুহাম্মদুর রাসুলুল্লাহ’। আংটি প্রসঙ্গে আল্লামা ইবনে তায়মিয়া (রহ.) আবদুল কাদির জিলানি (রহ.) ও ফিকাহবিদদের থেকে নিম্নরূপ অভিমত নকল করেছেন : বাঁ হাতে আংটি ব্যবহার করা মুস্তাহাব। কেননা এর বিপরীত করা বিদআতি ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন লোকদের অভ্যাস। (ইকতিজাউস সিরাতুল মুস্তাকিম)

হাতের বালা ব্যবহারের বিধান

বিবাহিত-অবিবাহিত নারীদের জন্য হাতে চুড়ি পরা বৈধ। তবে পুরুষদের জন্য হাতে চুড়ি, বালা, রঙিন সুতা, ব্রেসলেট ব্যবহার করা মাকরুহ। (বেহেশতি জেওর, বিদআত-কুপ্রথা অধ্যায়)।

আরও পড়ুন:


গুনাহ হয়ে গেলে যে দোয়া পড়বেন


কারি তৈয়ব (রহ.) লিখেছেন, ‘বর্তমান যুগে শিখ সম্প্রদায় তাদের হাতে একটি চুড়ি তাদের জাতীয় বিশেষ পোশাক হিসেবে ব্যবহার করে। ’ (তাশাব্বুহ ফিল ইসলাম) তা ছাড়া পুরুষরা হাতে চুড়ি ও বালা পরিধান করলে তা নারীদের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ হয়ে যায়। আর ইসলামে নারী পুরুষের এবং পুরুষ নারীর সাদৃশ্য হওয়া নিষিদ্ধ।

হাদিস শরিফে এসেছে, মহান আল্লাহ নারীদের সাদৃশ্য অবলম্বনকারী পুরুষদের এবং পুরুষদের সাদৃশ্য ও বেশভূষা অবলম্বনকারী নারীদের অভিশাপ দিয়েছেন।

news24bd.tv রিমু