অভিনয় কি দরকার নেই আজকাল সিনেমাতে?

বন্যা মির্জা

অভিনয় কি দরকার নেই আজকাল সিনেমাতে?

বন্যা মির্জা

এই বছরের শেষ বেলায় আমি পাঁচটি বাংলাদেশের সিনেমা দেখলাম। “কালবেলা” দেখার সুযোগ হলো না। ক্রমানুসারে প্রথম “চন্দ্রাবতী কথা”, “রেহানা মরিয়ম নূর”, “নোনা জলের কাব্য”, “দি ব্যাটল অব কুষ্টিয়া” (ডকুমেন্টরি) এবং “লাল মোরগের ঝুঁটি”।  

সিনেমা দেখে আমি খুব একটা কিছু বলার জায়গাতে থাকি না, কারণ একটা সিনেমা বানাতে যে কাঠখড় পোড়ানোর বিষয় থাকে তাতে সিনেমার গুণাগুণ নিয়ে আর কিছু বলতে ইচ্ছা করে না।

তবু …. “চন্দ্রাবতী কথা”র প্রসংশা করেছেন বাংলাদেশের সিনেমাবোদ্ধারা! আমি কী বলবো! সব কিছু বাদও যদি দিই, তবু অভিনয় নিয়ে কথা বলা বাদ দিতে পারলাম না। অভিনয় কি দরকার নেই আজকাল সিনেমাতে?! আমি এই প্রশ্নের মীমাংসা করতে পারছি বলে মনে হয় না। তবে অভিনেতার করার তেমন কিছু নেই যদি পরিচালকের সেখানে মনোযোগ না থাকে। এইটুকুই।

“রেহানা মরিয়ম নূর” নিয়ে আলাপ যে, আগের সিনেমাটা (লাইভ ফ্রম ঢাকা) নাকি বেশী ভালো! বাহ!! ঐ সিনেমাতো দর্শকের তেমন দেখার সুযোগই হয়নি! আর লোকজনও ছবি ও ছবি নির্মাতাকে লক্ষ্য করেননি। ঐ সিনেমায় অভিনয় ভালো, সিনেমা ভালো; আর এই সিনেমাতেও অভিনয় ভালো, সিনেমাও ভালো। কানে না গেলেও এই ছবি ভালোই লাগতো। ভালো লবিস্ট ছিল, সিনেমা কানে গেছে। আলাপ শেষ।

“নোনা জলের কাব্য”তে আসি। সিনেমা ভালোই, নতুন কিছু মনে হয়নি। অভিনয়ে টুনি ও তার ভাই ছাড়া কাউকেই আলাদা মার্ক দিতে পারলাম না আমার তরফ থেকে। সবার প্রথম সিনেমা হলে পারা যেতো। এমনই দেখেছি আগে। সিনেমাটা আন্তর্জাতিক বাজারে বেচাকেনা ভালো হবে তা বোঝা যাচ্ছে।

“দি ব্যাটল অব কুষ্টিয়া” ভালো লেগেছে। নিজের এলাকা; ভালো লাগারই কথা। এই দোষে দুষ্ট হয়ে চলে আসি “লাল মোরগের ঝুঁটি”তে!

কীসে কীসে ভালো এই সিনেমা সবাই বলেছেন। কীসে আমার ভালো লাগলো না তা বলি। যুদ্ধ না দেখিয়ে যুদ্ধকাল হাজির করা হলো! তাতে আলাদা কী করা হলো? কোন বিহারী রাজাকার না বাংলাদেশের সিনেমাতে? কোন শিং মাছের ছটফটানি বাংলাদেশের সাহিত্যে-চিত্রে নতুন মেটাফর তৈরি করল? বঙ্গসুরে উর্দুভাষী পাকিস্তানি সৈনিক ঠ্যাং তুলে মেহদী হাসান শুনছেন আর শরাব গিলছেন – দেখে তো মনে হলো সেই শর্টফিল্মের কাল থেকে এই একটাই পাকিস্তানি ক্যাম্প দেখে আসছি। আর কোন রাজাকারের বাড়ি দেখে (বারান্দা) মনে হয় যে সেখানে কোনোদিন কেউ থাকে নাই? আরো নানাবিধ আজাইরা প্রশ্ন তৈরি হয়েছে মনে। যিনি নাচলেন আর মার খেলেন তার চরিত্রটা আসলে কী ছিলো? (দোয়েল নন, আরো একজন)। কেবল পাকিস্তানি সৈনিকের নৃশংসতা বোঝাতে? বোঝালো কিছু? তবে আহমেদ রুবেল পাগল হয়ে অনেক হাত-পা ছুঁড়লেও একচুল দেশপ্রেম থেকে বিচ্যুত হন নাই। এটাই এই সিনেমার সব থেকে বড়গুণ বা মেরিট। পাঁচটার মধ্যে এটাই সর্বশেষ দেখা সিনেমা বলে মনে বেশি রয়ে গেছে। নিজগুণে ক্ষমা করবেন।

আরও পড়ুন


হত্যার এক বছর পর পুঁতে রাখা রোহিঙ্গা যুবকের মরদেহ উদ্ধার

news24bd.tv এসএম