পর্যটক ধর্ষণের ঘটনায় মামলা, যা বলছে জেলা ছাত্রলীগ

পর্যটক ধর্ষণের ঘটনায় মামলা, যা বলছে জেলা ছাত্রলীগ

অনলাইন ডেস্ক

কক্সবাজারে স্বামী সন্তান নিয়ে বেড়াতে এসে দলবেঁধে ধর্ষণের শিকার হন এক নারী পর্যটক। এ ঘটনার ১২ ঘণ্টা পর ছয়জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে চারজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে তিনজনই কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি এসএম সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী।

 বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় এ মামলা করা হয়। মামলায় ৭ ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।  

ভুক্তভোগী নারীর স্বামী বাদী হয়ে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মনিরুল গিয়াস।

শনাক্ত হওয়া আসামিরা হলেন, আশিকুল ইসলাম, আব্দুল জব্বার জয়া, বাবু ও রিয়াজ উদ্দিন ছোটন।

এদের মধ্যে রিয়াজ উদ্দিন ছোটন জিয়া গেস্ট ইন হোটেলের ব্যবস্থাপক।

স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, অভিযুক্ত আশিক সম্প্রতি কারাগার থেকে মুক্ত হয়েছেন। ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত তিনজনই কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি এসএম সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী। ঘটনার পর থেকে সাদ্দামের সঙ্গে আশিক ও অন্যদের বিভিন্ন সময় তোলা নানা ধরনের ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এই বিষয়ে  বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর অনেকে আমার কাছে এসে ছবি তুলেছেন। এরাও তাদের মতো। ছবি থাকলে কি ছাত্রলীগ হয়? অভিযুক্তরা কেউ ছাত্রলীগের পদ-পদবিতে নেই বলেও দাবি করেন তিনি।

গতকাল বুধবার কক্সবাজারে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন এক নারী। সংঘবদ্ধ ধর্ষকচক্র ইচ্ছে করে ও নারীর স্বামীর সঙ্গে প্রথমে ঝগড়া বাঁধায়। পরে স্বামী সন্তানকে আলাদা করে ওই নারীকে তুলে নিয়ে যায়।

ধর্ষণের শিকার নারী র‌্যাবকে জানান, ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে বুধবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে শিশু সন্তান নিয়ে কক্সবাজার পৌঁছান ওই নারী ও তার স্বামী। সন্ধ্যায় সমুদ্র সৈকত থেকে উঠে আসার সময় ভিড়ের মাঝে কয়েকজন যুবকের সঙ্গে ধাক্কা লাগে তার স্বামীর। পরে তাদের কাছে ক্ষমা চান ওই নারীর স্বামী। কিন্তু কৌশলে স্বামী-স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া বাঁধায় ওই যুবকরা। পরে ধাক্কাধাক্কি করে ওই নারীর কাছ থেকে স্বামী-সন্তানকে আলাদা করে ফেলে তারা। এক পর্যায়ে ছুরি দেখিয়ে এবং স্বামীকে হত্যা করার ভয় দেখিয়ে ওই নারীকে সিএনজি করে শহরের নির্জন স্থানে নিয়ে যায় তারা। সেখানে তিনজন মিলে তাকে ধর্ষণ করে।

ওই নারী জানান, এরপর দ্বিতীয় দফায় কক্সবাজারের জিয়া গেস্ট ইন নামে একটি হোটেলে নিয়ে আবারও তাকে ধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনা কাউকে জানালে সন্তান ও স্বামীকে হত্যা করা হবে জানিয়ে হোটেলের কক্ষ বাইরে থেকে বন্ধ করে চলে যায় ধর্ষকরা।

পরে জিয়া গেস্ট ইনের তৃতীয় তলার জানালা দিয়ে ডেকে এক যুবকের সহায়তায় কক্ষের দরজা খোলেন ওই নারী। তারপর ফোন দেন ৯৯৯-এ।

আরও পড়ুন:

২০২২ সালে ভিয়েতনামের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে সর্বোচ্চ

মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলে জেড পাথরের খনিতে ভূমিধস

তবে ৯৯৯-এর পক্ষ থেকে কক্সবাজার পুলিশের সাথে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া হলেও দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ওই নারীকে সহায়তায় এগিয়ে যাননি বলে অভিযোগ উঠেছে। পরে ওই নারী আরেকজনের সহায়তায় র‌্যাবকে ফোন দেন। র‌্যাব দ্রুত সাড়া দেয় এবং মধ্যরাতে হোটেল থেকে ওই নারীকে উদ্ধার করে।  

এদিকে ফোন পাওয়ার পর র‍্যাব ভুক্তভোগী নারীর স্বামী-সন্তানকে পর্যটন গলফ মাঠের সামনে থেকে উদ্ধার করে। পরে হোটেলের ক্লোজড সার্কিট (সিসিটিভি) ক্যামেরার ফুটেজ দেখে দুজনকে শনাক্ত করার কথা জানায় র‌্যাব।

news24bd.tv/আলী