রোহিঙ্গা পরিবারের কাছে মিললো বাংলাদেশের নাগরিকত্ব সনদ!

রোহিঙ্গা পরিবারের কাছে মিললো বাংলাদেশের নাগরিকত্ব সনদ!

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক:

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের ১১ রোহিঙ্গাকে জন্ম সনদ ও নাগরিকত্ব সনদ দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। রোহিঙ্গাদের জন্ম নিবন্ধন ও নাগরিকত্ব সনদ দেওয়ায় তাহিরপুর উপজেলা জুড়ে এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে।  

এদিকে এসব নাগরিক সনদ নিয়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের পাসপোর্ট তৈরি করে বিদেশেও যাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। গত বছর বাংলাদেশের পাসপোর্ট তৈরি করতে গিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে আটক হয় বেশ কিছু রোহিঙ্গা।

শুরুর দিকে এসব রোহিঙ্গা কক্সবাজার থেকে পাসপোর্ট তৈরি করার চেষ্টা করলেও পরে তারা সন্দেহ এড়াতে দূরবর্তী জেলাগুলোতে গিয়ে বসবাস শুরু করে ও সেখানকার পাসপোর্ট অফিসে যোগাযোগ করে। আর অর্থের বিনিময়ে এসব রোহিঙ্গাদেরকে  বাংলাদেশের নাগরিকত্ব সনদ দিচ্ছে কিছু অসাধু জনপ্রতিনিধি। শুধু কাগুজে সনদই নয়, বাংলাদেশি হিসেবে সরকারি ডাটাবেজেও উঠে যাচ্ছে রোহিঙ্গাদের নাম-ঠিকানা।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর থানার বাদাঘাট পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই তপন চন্দ্র দাস উপজেলার বড়দল উত্তর ইউনিয়নের গুটিলা গ্রামে একটি রোহিঙ্গা পরিবার বসবাস করছে এমন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান।

গুটিলা গ্রাম থেকে রোহিঙ্গা একই পরিবাররের ১১ সদস্যকে সন্ধ্যার পর পর বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে আসেন। এসময় রোহিঙ্গা পরিবারটির কাছ থেকে বাদাঘাট উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন ও সচিব ভুপতি ভুষন সরকার স্বাক্ষরিত ৯টি জন্ম নিবন্ধন, ৮টি নাগরিকত্ব সনদপত্র ও দুইটি জাতীয় পরিচয়পত্রের অন্তর্ভুক্তির জন্য আবেদন করা রশিদ উদ্ধার করে পুলিশ।

উদ্ধারকৃত রোহিঙ্গারা হলেন- আব্দুছ ছবুর (৫৪), তার স্ত্রী আমেনা বেগম (৪২), তাদের সন্তান আব্দুল হালিম (২৩), মেয়ে হালিমা (১৮), ছালেহা (১৫), হারিছা (১৩), ফারিছা (১১), আছলম (৭), ওমামা বেগম (২), পুত্রবধূ ওম্মুল খায়ির (২২), নাতনী মোশাররফা (শিশু)।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টায় সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে রোহিঙ্গা পরিবারটিকে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে বাদাঘাট ইউপি চেয়ারম্যান আফতাব জানান, স্থানীয় ইউপি সদস্য জন্ম নিবন্ধন ফরমে স্বাক্ষর করায় আমি তাদের সনদ দিয়েছি।

তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নন্দন কান্তি ধর জানান, পুলিশ সুপারের নির্দেশক্রমে রোহিঙ্গা পরিবারটিকে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক কক্সবাজারের টেকনাফে আশ্রয় কেন্দ্রে শুক্রবার সকালে পাঠানো হবে।

সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার বরকতুল্লাহ খান একই পরিবারের ১১ রোহিঙ্গাকে উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শুক্রবার সকালে তাদের পুলিশি নিরাপত্তার মাধ্যমে কক্সবাজারে পাঠানো হবে।

সম্পর্কিত খবর