মিডিয়া টিমের সামনে বক্তৃতার রিহার্সালও করেন জাস্টিন ট্রুডো

শওগাত আলী সাগর

মিডিয়া টিমের সামনে বক্তৃতার রিহার্সালও করেন জাস্টিন ট্রুডো

শওগাত আলী সাগর

বছরের এই একটা সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তারা অসহায় হয়ে পরেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জাস্টিন ট্রুডো কোনো মিডিয়ায় ইন্টারভিউ দেয়ার সময় তিনি কী বলবেন, কোনো পাবলিক মিটিং এ বক্তৃতা করলে তার বক্তৃতায় কী থাকবে- এসবই ঠিক করে তার মিডিয়া টিম।

এমন কি বক্তৃতা দেয়ার সময় কোন কথাটা বলার সময় তার চেহারার ভঙ্গি কী হবে, কোন কথাটা তিনি জোড়ে বলবেন, কোন কথাটা আস্তে বরবেন,কখন গম্ভীর থাকবেন, কতোটুকু হাসবেন, কখন কোন দিকে তাকাবেন – এসবই ঠিক করে দেয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মিডিয়া টিম। সংসদে বক্তৃতার বেলায়ও।

কখনো কখনো তার মিডিয়া টিমের সামনে বক্তৃতার রিহার্সালও করতে হয়েছে তাকে।  

শুধু বছরে একবার, ক্রিসমাসের সময় একটা ইন্টারভিউতে জাস্টিন ট্রুডো যেনো  স্বাধীনতা ঘোষণাকরেন। এই একটি দিন তিনি মিডিয়া টিমের, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কোনো প্রোটোকলের ধার ধারেন না। এই ইন্টারভিউটাতেই তিনি নিজের ব্যক্তি জীবনের নানা কথা অকপটে বলে ফেলেন, যেই সুযোগটা দেশের আর কোনো সাংবাদিকই পান না।

মন্ট্রিয়লের সাংবাদিক তেরি দিমঁত  যেনো ট্রুডোর জীবনের একমাত্র ব্যতিক্রম।

ট্রুডো আর তেরি দিমঁতের এই আড্ডটা চলছে প্রায় দুই যুগ ধরে, জাস্টিন ট্রুডো প্রধানমন্ত্রী হবার আগ থেকেই। প্রধানমন্ত্রী হবার পরও তার ছেদ পরেনি। এমনকি সক্রিয় সাংবাদিকতা থেকে তেরির অবসরের পর তার  ব্যক্তিগত পডকাস্টেই ইন্টারভিউ দিতে বসে গেছেন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।  

সাংবাদিক তেরি দিমঁতের সাথে যখন পরিচয়, তখন তেরি দিমঁত মন্ট্রিয়ল ভিত্তিক একটি রেডিওর হোস্ট, আর জাস্টিন ট্রুডো তার মুগ্ধ ভক্ত শ্রোতা। নিজের উপস্থাপিত রেডিও অনুষ্ঠানের মুগ্ধ শ্রোতা ট্রুডোর সঙ্গে তেরি দিমঁতের বন্ধুত্বটা গভীর হতে সময় লাগেনি। জাস্টিন ট্রুডো প্রধানমন্ত্রী হবার পরও তাদের বন্ধুত্ব গভীরই রয়ে গেছে।  

তেরি দিমঁত রেডিওতে তার অনুষ্ঠানে ক্রিসমাসে ট্রুডোর সাথে আড্ডাটা যখন শুরু করেন, তখনো ট্রুডো রাজনীতিতে আসেননি। রাজনীতিতে আসার পর, এমন কি প্রধানমন্ত্রী হবার পর ট্রুডোই যেনো এই  ইন্টারভিউটার জন্য অপেক্ষায় থাকেন। আর এই একটা আড্ডা/ ইন্টারভিউর সময়ই তিনি  তার সরকারি সব প্রটোকলকে উপেক্ষা করেন।  

তেরি দিমঁত রেডিও থেকে অবসর নিয়েছেন গত বছর। এখন তিনি নিজে  ব্যক্তিগভাবে একটি পডকাস্ট করেন। প্রায় দুই যুগ ধরে চলে আসা আড্ডাটার পরিণতি কী হবে- তা নিয়ে অনেকের মধ্যেই কৌতূহল ছিল। কিন্তু ট্রুডো তেরি দিমঁতের পডকাষ্টেই ইন্টারভিউর জন্য বসে গেছেন।  

এবারের ইন্টারভিউতে অবশ্য দুই বন্ধু যুক্ত হযেছিলেন ভার্চুয়ালি। ইন্টারভিউর শুরুতেই হোষ্ট জানতে চাইলেন ট্রুডোর হাতে বিয়ার আছে কী না। ক্রিসমাসের দিনেই পঞ্চাশে পা দেয়া জাস্টিন ট্রুডো ’লাবাত ব্রিউইঙ কোম্পানির’ ৫০ ব্র্যান্ডের বিয়ারের বোতলটি উঁচু করে তুলে ধরেন। তার হাতে তখন ৫০ আঁকা বিয়ারের গ্লাস। নিজের বয়স পঞ্চাশ হয়েছে বলেই তিনি ৫০ ব্র্যান্ডের বিয়ার হাতে নিয়ে বসেছিলেন কী না সে ব্যাপারে কোনো কথাবার্তা তাদের আড্ডায় হয়নি।

লেখক- শওগাত আলী সাগর, প্রধান সম্পাদক, নতুনদেশ, কানাডা।

(মত-ভিন্নমত বিভাগের লেখার আইনগত ও অন্যান্য দায় লেখকের নিজস্ব। এই বিভাগের কোনো লেখা সম্পাদকীয় নীতির প্রতিফলন নয়। )

news24bd.tv/ কামরুল