ইউপি নির্বাচন: শৈলকুপায় নৌকার আরেক সমর্থক খুন

প্রতীকী ছবি

ইউপি নির্বাচন: শৈলকুপায় নৌকার আরেক সমর্থক খুন

অনলাইন ডেস্ক

ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন ঘিরে সহিংসতায় নৌকার প্রার্থীর আরেক সমর্থক খুন হয়েছেন। ঘটনা ঝিনাইদহের শৈলকুপার সারুটিয়ায়। জানা গেছে,   গতকাল শনিবার বিকেল ৫টার দিকে ভাটবাড়িয়া গ্রামে আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীর লোকজন ছুরিকাঘাতে তাঁকে হত্যা করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এর আগে শুক্রবার রাতে সারুটিয়ার কাতলাগাড়ী বাজারে নৌকার প্রার্থী মাহমুদুল হাসান মামুন ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জুলফিকার কায়সার টিপুর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে হারান মণ্ডল নামের এক বৃদ্ধ নিহত হন।

 

অন্যদিকে, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁর সনমান্দী ইউনিয়নে পরাজিত সদস্য (মেম্বার) প্রার্থীর সমর্থককে হত্যার অভিযোগ উঠেছে বিজয়ী প্রার্থী ও তাঁর সমর্থকদের বিরুদ্ধে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে বিজয়ী প্রার্থীকে আটক করে পিটিয়ে পুলিশে দিয়েছে গ্রামবাসী।

এ দুজনকে নিয়ে চলমান ইউপি নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতায় ৯২ জনের মৃত্যু হলো।  

এ ছাড়া গোপালগঞ্জ, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, ভোলা, কুমিল্লার নাঙ্গলকোট ও ঢাকার সাভারে শুক্রবার রাতে এবং গতকাল ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হামলা-সংঘর্ষে ৪১ জন আহত হয়েছেন।

৩০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর এবং নৌকার প্রার্থীর একটি নির্বাচনী কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।

ঝিনাইদহ ও নারায়ণগঞ্জে দুজন নিহত

শৈলকুপায় নিহত জসিম বিশ্বাস (৩৫) উপজেলার ভাটবাড়িয়া গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন একই গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে মিলন হোসেন (৩২)। তাঁরা দুজনই নৌকার সমর্থক। এর আগে শুক্রবার রাতে সারুটিয়ার কাতলাগাড়ী বাজারে নৌকার প্রার্থী মাহমুদুল হাসান মামুন ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জুলফিকার কায়সার টিপুর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে হারান মণ্ডল নামের এক বৃদ্ধ নিহত হন।

নিহত জসিমের ভাই মুক্তার হোসেন জানান, জসিম ও মিলন রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় জুলফিকার কায়সার টিপুর সমর্থকরা তাঁদের ওপর হামলা চালিয়ে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। তাঁদের শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক জসিমকে মৃত ঘোষণা করেন। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় মিলনকে কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

শৈলকুপা ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, ভাটবাড়িয়ার ঘটনায় হামলাকারীকে পুলিশ আটক করেছে।

সোনারগাঁ উপজেলার সনমান্দীর সাজালেরকান্দি গ্রামে শুক্রবার রাতে নিহত নয়ন মিয়া (৩০) মারুবদী গ্রামের আলম মিয়ার ছেলে ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পরাজিত সদস্য পদপ্রার্থী ফিরোজ মিয়ার সমর্থক। তিনি দুটি মেয়ে শিশুর বাবা। অভিযুক্ত আটক বিজয়ী প্রার্থীর নাম দেলোয়ার হোসেন।

নয়ন মিয়ার স্ত্রী মানছুরা আক্তার জানান, তাঁর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সবাই ফিরোজ মিয়ার পক্ষে নির্বাচন করেন। নির্বাচনের আগেই তাঁর স্বামীকে দেলোয়ার ও তাঁর সমর্থকরা প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিল। ২৮ নভেম্বর নির্বাচনে দেলোয়ার জয়ী হওয়ার তাঁর সমর্থকরা রাতে নয়নদের বাড়িতে হামলা চালায় এবং ফের হুমকি দেয়। ভয়ে পরের দিন নয়ন ও তাঁর পাঁচ ভাই বাড়ি ছেড়ে চলে যান। নয়ন স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে পাশের বন্দর উপজেলার কেওঢালা এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে মিশুক চালিয়ে সংসার চালাচ্ছিলেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি মারুবদী আসার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। রাতে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। গতকাল সকালে সাজালেরকান্দি রাস্তার পাশে তাঁর লাশ দেখে বাড়িতে খবর দেয় এলাকাবাসী। এ ঘটনার সঙ্গে দেলোয়ার ও তাঁর লোকজন জড়িত বলে দাবি মানছুরার।

আরও পড়ুন:


রাজধানীতে মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু


নয়নের মা বলেন, ‘দেলোয়ারের ভয়ে আমার ছয় সন্তানসহ এলাকার অনেকেই বাড়িছাড়া। আমার সন্তানকে মেরে ফেলতে সে কয়েকবার বাড়িতে এসে হামলা চালায়। গতকাল (শুক্রবার) আমার ছোট্ট নাতনি না খেয়ে ছিল। নয়ন তার জন্য চাল নিতে গ্রামের বাড়িতে আসে। দেলোয়ার আমার ছেলেকে দেখতে পেয়ে মেরে লাশ ফেলে যায়। আমি বিচার চাই। ’ এরপরই তিনি জ্ঞান হারান।

সোনারগাঁ থানার ওসি মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান জানান, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে স্থানীয় ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেনকে আটক করা হয়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। সূত্র: কালের কণ্ঠ  

news24bd.tv রিমু