দুর্নীতি মামলায় সাবেক ওসি কারাগারে

সাবেক ওসি মো. আলতাফ হোসেন

দুর্নীতি মামলায় সাবেক ওসি কারাগারে

ইসমত আরা ইসু • কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজারের কুতুবদিয়া থানার সাবেক ওসি ও ফেনী জেলা পিবিআই-এর পরিদর্শক মো. আলতাফ হোসেনকে  কারাগারে পাঠিয়েছে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত।   

তার বিরুদ্ধে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণ, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ বেশ কয়েকটি দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। সেই অভিযোগের একটি মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানায় আজ (১৯ জুন) তাকে কক্সবাজার কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মীর শফিকুল আলম ।  

দুদক সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ২০ জুলাই তৎকালীন কুতুবদিয়া থানার ওসি আলতাফ হোসেন ও এসআই এবিএম কামাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে ঘুণ গ্রহন, ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতি মামলা করেন কুতুবদিয়া উপজেলার বড়ঘোপ ছিন্নি খাইয়ার পাড়া এলাকার ইস্কান্দার মির্জার স্ত্রী জামিলা আকতার।


 
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, পারিবারিক অভাব অনটনের কারণে  ২০১৪ সালের ১৮ জুন সকালে ছিন্নি খাইয়ার পাড়ায়  মৃত নজির আহম্মদের ছেলে উপজেলার ভূমি অফিসের কর্মচারী ফরিদুল আলমকে হত্যা করে তার স্ত্রী রোকেয়া বেগম ডেজি ও ছেলে অহিদুল আলম রিয়াদ।

এ ঘটনায় নিহতের মা নুরজাহান বেগম বাদি হয়ে মামলা করতে গেলে কুতুবদিয়া থানার ওসি আলতাফ হোসেন এক লক্ষ টাকা দাবি করেন। ছেলে হত্যার ন্যায় বিচার পাওয়ার আশায় এসআই কামাল উদ্দিনের মাধ্যমে আলতাফ হোসেনকে ৫০ হাজার টাকা দেন ওই বৃদ্ধা।

কিন্তু ওসি আলতাফ নুরজাহানের দায়ের করা এজাহারটি আমলে নেননি।

উল্টো নিহতের ছেলে রিয়াদের নিকট থেকে মোটা অঙ্কের ঘুষ গ্রহণ করে একটি মামলা গ্রহণ করেন, যার নং ১৫, জি আর নং ৭৫/১৪। ওই মামলায় নিহত ফরিদুলের বৃদ্ধ মা ও তার দুই ভাই ইস্কান্দর মির্জা এবং মাহবুব আলমকে আসামি করা হয়। সেই মামলায় দীর্ঘদিন কারাগারে ছিল দুই ভাই।  

এ নিয়ে ইস্কান্দর মির্জার স্ত্রী জামিলা আকতার বাদি হয়ে কক্সবাজার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে কুতুবদিয়া থানার ওসি আলতাফ ও এসআই এবিএম কামাল উদ্দিনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করে।

এ বিষয়ে দুদকের পিপি অ্যাডভোকেট আবদুর রহিম জানান, বাদির লিখিত অভিযোগ পেয়ে কক্সবাজার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের তৎকালীন বিচারক সাদিকুল ইসলাম তালুকদার মামলাটি আমলে নিয়ে দুদককে তদন্তের নির্দেশ দেন।  

দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ১৫ মার্চ ওসি এবং এসআইকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা অজয় ঘোষ। এরপর তাদের বিরুদ্ধে আদালত থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। সেই গ্রেফতারি পরোয়ানা মূলে আদালতে আত্মসমর্পণ করে ওসি আলতাফ হোসেন।  

পিপি আবদুর রহিম আরও জানান, ওসি আলতাফ আত্মসমর্পণের সময় বাদিকে সঙ্গে করে নিয়ে আসে। বাদী মামলাটি সামাজিকভাবে সুরাহা করা হয়েছে বলে আদালতে লিখিত আবেদন করেন। তবে আদালত ওসির জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।  

মামলাটির পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২৬ জুন দিন ধার্য করা হয়েছে।

সম্পর্কিত খবর