এক গাছে ২০০ জাতের আম

এক গাছে ২০০ জাতের আম

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

আমের রাজধানী খ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জে একটি গাছেই পাওয়া যাবে ২’শ জাতের আম। সার্কিট হাউস চত্ত্বরে পরিরত্যক্ত ও পুরনো গুটি জাতের একটি আমগাছের ডালপালা কেটে ফেলে সেই গাছেই ২’শ জাতের আমের গ্রাফটিং (কলম) করা হয়েছে। ইতিমধ্যে গ্রাফটিং করা একেকটি ডালে বের হয়েছে হরেক জাতের আমের নতুন ডালপালা ও পাতা। আর একটি গাছে ২’শ জাতের আম উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছেন সদ্য নারায়নগঞ্জে বদলী হওয়া চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোঃ মঞ্জুরুল হাফিজ।

 

তিনি জানান, কয়েক দশকের পরিত্যক্ত একটি বড় ও পুরোনো গাছে ২’শ জাতের আমের বিশাল সংগ্রহশালা তৈরির উদ্যোগের ফলে একদিকে যেমন প্রায় সবগুলো আমের সংগ্রহশালা তৈরি হবে, অন্যদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ আমের রাজধানী হিসেবে পর্যটন খাতে আরও ভূমিকা রাখবে। আর গাছে ফল এলে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে জায়গা করে নেবে এই আমগাছ এমনটাই আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।  

তিনি আরও বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব (আম) গবেষণা কেন্দ্র ও বিভিন্ন কৃষকের থেকে সায়ন সংগ্রহ করে করা হয়েছে এই ২’শ জাতের গ্রাফটিং।

 অন্যদিকে আমবিজ্ঞানীরা বলছেন, এতে জটিল কোনো সমীকরণ নেই।

একটি গাছে যত ধরণের কলম করা হবে, ঠিক তত ধরণের বা জাতের আম ধরবে।  

এছাড়া আর কয়েক মাস পরেই আম মৌসুম শুরু হবে এবং আগামী মৌসুম থেকেই ২’শ জাতের আমের ফলন আসবে। তবে এই গাছটিতে গ্রাফটিং বা কলম করার সময় আলাদাভাবে চিহ্নিত করা আছে জাতগুলোর নাম। এর মধ্যে অন্যতম হলো ফজলি, সুরমা ফজলি, বোম্বাই ফজলি,  গোপালভোগ, লখনা, আশ্বিনা, ল্যাংড়া, রানীপছন্দ, লক্ষণভোগ, ক্ষিরসাপাত, হিমসাগর, দুধস্বর, তোতাপুরী, গৌড়মতি, বোম্বাই, হাঁড়িভাঙা, বারি আম-২, বারি-৩, মোহনভোগ, ক্ষিরমণ, সুন্দরী, সুবর্ণরেখা, কালাপাহাড়, অরুনা, চৌষা, রাজভোগ, কোহিতুর, বউ-ভুলানি, জমরুদ, বিলু পছন্দ, কাগরি, চিনিবাসা, দুধকুমার, মন্ডা, সীতাভোগ, শোভাপছন্দ, গৃঠাদাগী, লতিকা, রহনপুরি, হরমতি, জয়শ্রী, গৌড়পছন্দ, গৌড়সুন্দর,  ইলামতি, রানিভোগ, ঘিনা, দিয়াড়, হেনা, পার্সি, আবির, সিন্নি, দিলখোস, শিমুলতলী, জৈষ্ঠ্যমধু, তৃপ্তিভোগ, মনমচকা, জৈষ্ঠ্যিভোগ, লাবণ্য, তরুলতা, চাঁপাই সুন্দরী, কুমড়াজালি, তসলিমপছন্দ, ভোলাভোগ, মধুমঞ্জরি, চিনিখাজা, চন্দন, মনমোহিনী, ফুলকি, স্বর্ণকেশর, চিতাই, মাষকলাই, কলমিলতা, বালাকা, মনময়ুরী, বেরকটি, জায়ান, ক্ষণিকা, অরনি, সিমকি ও মমতাজ।

এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, জেলার আমের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে আরও সমৃদ্ধ করবে এমন উদ্যোগ। দেশ ও দেশের বাইরে ছড়িয়ে পড়বে জেলার আমভিত্তিক পর্যটন এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার জন্য একটি গাছে ২’শ জাতের আম অন্যতম মাইলফলক হয়ে থাকবে।

news24bd.tv/আলী