লতা-পাতার আগুনে শীত কাটাত আকবর পাগল, পেলেন বসুন্ধরার কম্বল

লতা-পাতার আগুনে শীত কাটাত আকবর পাগল, পেলেন বসুন্ধরার কম্বল

অনলাইন ডেস্ক

‌‘আমাগের চারিদিকে লোনাপানির ঘের। ফসল নেই, অনেক কষ্টে আছি। গ্রামের গরিবদের শীতের কষ্ট দেখার লোক নেই। যারা আমাগের মতো গরিব মাইনষের খোঁজ নিয়ে শীতের কাপড় দিচ্ছে তাগেরে ভগবান মঙ্গল করুক।

আয়-রোজগার বাড়ায়ে দিক। বসুন্ধরা গ্রুপ যেন আমাগের মতো অসহায় মাইনসের পাশে এভাবেই থাকবার পারে সেই আশীর্বাদ করি। ’ দেশের শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের কম্বল পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে কথাগুলো বলছিলেন আশাশুনি উপজেলার দুর্গম ঘাসটিয়া গ্রাম থেকে শীতবস্ত্র নিতে আসেন বৃদ্ধা কিনি রানী সরকার।

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা আনুলিয়ায় ৩০০ অসহায় পরিবারের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়।

শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় কালীবাড়ি মন্দির প্রাঙ্গণ মাঠে বসুন্ধরা গ্রুপের সহযোগিতায় এ শীতবস্ত্র বিতরণ করে কালের কণ্ঠ শুভসংঘ।

শীতের সকালে কুয়াশা ভেঙে কাকবাসিয়া, ঘাসটিয়া, বাগালি, কুইতারবিল, মির্জাপুর বল্লভপুর, বিছট ও একসরা গ্রাম থেকে অসহায় মানুষ শীতবস্ত্র নিতে ছুটে আসেন।

বৃদ্ধা কিনি রানী সরকারের মতো শীতবস্ত্র নিতে ছুটে এসেছিলেন বিধবা বাচাখুকি দাসী।

প্রত্যন্ত এলাকা বাগালি থেকে আসা এ নারী কম্বল পেয়ে আনন্দে আপ্লুত হয়ে বলেন, তীব্র শীতে কম্বলটা খুব উপকারে আসবে। আশীর্বাদ করি বসুন্ধরা গ্রুপ আরো বড় হোক। তাঁদের কামাই-রোজগার আরো বাড়ুক। তারা দেশের সব অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সক্ষমতা অর্জন করুক।

আনুলিয়া গ্রামের আকবর পাগল (৪৫), ভিক্ষা করে জীবন চলে তাঁর। নিজের বলতে আকবরের কিছুই নেই। বসুন্ধরা গ্রুপের শীতবস্ত্র পেয়ে তিনি বলেন, অনেক কষ্ট পাইতেছিলাম। শীত নিবারণের জন্য কোনো কিছু না থাকায় পাতা লতাত আগুন ধরাইয়া কোনো মতে শীত তাড়াইছি। অহন কম্বল পাইয়া মনডা যেমন ভরছে তেমনি কম্বল জড়ায়ে রাখলে মনে হয় শীত নাই।

শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রমের সমন্বয়কারী ও অনুষ্ঠানের সভাপতি বিকাশ চন্দ্র সরকার বলেন, করোনার এই দুঃসময়ে দেশের শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা দেশজুড়ে যেভাবে দরিদ্র ও অসহায় মানুষের সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছে তা সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। সাতক্ষীরার প্রত্যন্ত এলাকায় তাঁদের এই সহযোগিতা ইতিহাস হয়ে থাকবে। বসুন্ধরা গ্রুপ তাঁদের এমন মানবিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে বলে আশা করি।

শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- মাস্টার আব্দুর রশিদ মোল্যা, আছাদুল ইসলাম, আসমাউল, তাওহিদুজ্জামান, কাজল অধিকারী, সুজন দেবনাথ, আবু মুসা রনি, অসিম সরকার, অসিম দাশ, আব্দুল্লাহ, শফি, মাস্টার জাহাঙ্গীর, কাফি, মহসিন, মুছা প্রমুখ।

আরও পড়ুন


‘বসুন্ধরার মালিকে কম্বল পাডাইছে, ইশ্বর তার বালা করুক’

news24bd.tv তৌহিদ