শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে অনশনরত শিক্ষার্থীদের মেডিকেল সাপোর্ট বন্ধ হয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা দেওয়ার সবকটি মোবাইল ব্যাংকিং নম্বর সোমবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরের পর থেকে কাজ করছে না বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) ভোররাত আড়াইটার দিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের আয়োজিত জরুরি প্রেস ব্রিফিংয়ে এ সব অভিযোগ করা হয়।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের যে মেডিকেল টিম উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অনশনরত শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসেবা দিয়েছিলেন, তারা সেবা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন।
তবে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজের এক চিকিৎসক স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে অনশনরত শিক্ষার্থীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন এবং গুরুতর অসুস্থ রোগীদের পরিবহনের জন্য অ্যাম্বুলেন্সও আছে বলে আন্দোলনকারীদের এক মুখপাত্র সাংবাদিকদের জানান।
শিক্ষার্থীরা জানান, অনশনরতের সবার অবস্থার অবনতি হচ্ছে। তারা ধীরে ধীরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন। তারা সবাই খিঁচুনি, ব্লাডে অক্সিজেন ও সুগার লেভেল কমে যাওয়া, ব্লাড প্রেশারসহ নানা শারীরিক জটিলতায় পড়ছেন।
ওসমানী মেডিকেল কলেজের ইন্টার্ন চিকিৎসক মো. নাজমুল হাসান বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের প্রথম থেকেই চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছি। এখন শিক্ষার্থীদের এবং আমাদের চিকিৎসকদের মধ্য থেকে কয়েকজনের করোনার উপসর্গ দেখা দেওয়ায় আমরা আপাতত সেবাটি বন্ধ রেখেছি। পরবর্তীতে আমরা কী করব? সেটা জানিয়ে দেব।
এদিকে, অ্যাকাউন্ট বন্ধের বিষয়টি নিয়ে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক-বর্তমান শিক্ষার্থীসহ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সাত লাখ ৫৪ হাজার ৮১৮ টাকা সংগ্রহ করেছেন শিক্ষার্থীরা। ‘ফান্ড ফর সাস্ট’ নামের এই তহবিলে সংগৃহীত টাকা আন্দোলনের বিভিন্ন খাতে ব্যয় করা হচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে আর্থিক যোগান নিশ্চিত করতে ইস্টার্ন ব্যাংকের একটি, বিকাশের তিনটি, রকেট ও নগদের একটি করে অ্যাকাউন্ট রয়েছে।
কিন্তু সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে এসব অ্যাকাউন্টে আর কোনো লেনদেন করা যাচ্ছে না। এমনকি এই ফোন নম্বরগুলো থেকে কল দিতে পারছেন না এবং কোনো কলও ঢুকছে না। তবে কে বা কারা অ্যাকাউন্ট বন্ধ করতে পারে এ বিষয়ে কেউ কিছু বলতে পারেননি।
আরও পড়ুন:
বিদেশে সার কারখানা নির্মাণে বিনিয়োগ করা যাবে: প্রধানমন্ত্রী
দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১৩তম
বাসযোগ্য হচ্ছে না পূর্বাচল, ভুল মানুষদের হাতে প্লট
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র সাদিয়া আফরিন বলেন, আমাদের আর্থিক লেনদেনের সব অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এসব ষড়যন্ত্রের অংশ। এভাবে ষড়যন্ত্র করে কেউ আমাদের আন্দোলন বন্ধ করতে পারবে না।
এদিকে, শাবি শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা দেওয়ায় ২ সাবেক শিক্ষার্থী রেজা নূর মুঈন ও হাবিবুর রহমানকে আটকের অভিযোগ ওঠেছে অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সাইবার পুলিশ সেন্টারের বিরুদ্ধে।
গত ১৩ জানুয়ারি একটি ছাত্রী হলে প্রভোস্টের পদত্যাগ দাবিতে ছাত্রীরা আন্দেলন শুরু করলেও শেষ পর্যন্ত সেটি ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদের পদত্যাগের দাবিতে রূপ নেয়। শাবি শিক্ষার্থীরা বলছেন, ভিসির পদত্যাগ-ই এখন একমাত্র সমাধান।