বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) আয়োজনে সংবাদ সম্মেলনে ক্যাপসের পরিচালক কামরুজ্জামান মজুমদার বলেছেন, ২০১৬ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত দৈনিক ২৪ ঘণ্টা ভিত্তিতে ঢাকা শহরের বায়ুদূষণের মান সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় থাকে রাতে। বিকেল চারটার পর থেকে বায়ুদূষণের মান খারাপ হতে শুরু করে, যা রাত ১১টা থেকে ২টা সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছায়। রাত তিনটার পর বায়ুর মান উন্নতি হলেও সকাল ছয়টা থেকে নয়টা পর্যন্ত আবার ঊর্ধ্বগতি শুরু হয়। তবে ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত কম দেখা যায়।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্যাপস বায়ুদূষণের প্রাকৃতিক কারণগুলোর মধ্যে আবহাওয়াজনিত ও ভৌগোলিক কারণ উল্লেখ করে।
প্রতিষ্ঠানটি বলছে, মানবসৃষ্টি কারণগুলোর মধ্যে নগর-পরিকল্পনার ঘাটতি, আইনের দুর্বলতা, আইন প্রয়োগের সীমাবদ্ধতা অন্যতম কারণ।
ক্যাপস'র গবেষণা বলছে, অপরিকল্পিত ও অনিয়ন্ত্রিত রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি ও নির্মাণকাজ থেকে সবচেয়ে বেশি বায়ুদূষণ হয়, যা মোট দূষণের ৩০ শতাংশ। এ ছাড়া ইটভাটা ও শিল্পকারখানায় ২৯ শতাংশ, যানবাহনের কালো ধোঁয়া ১৫ শতাংশ, আন্তর্দেশীয় বায়ুদূষণের ১০ শতাংশ, গৃহস্থালি ও রান্নার চুলা থেকে নির্গত দূষণ ৯ শতাংশ, বর্জ্য পোড়ানো থেকে ৭ শতাংশ বায়ুদূষণ হয়।
প্রতিষ্ঠানটি ২০২১ সালে ঢাকা শহরের ১০টি স্থানের বায়ুর মান পর্যবেক্ষণের লক্ষ্যে বায়ুতে বস্তুকণার উপস্থিতির পরিমাণ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পর্যালোচনা করছে বলে জানায়।
এতে উঠে এসেছে সবচেয়ে বেশি দূষিত ছিল রাজধানীর তেজগাঁও এলাকা। যেখানে প্রতি ঘনমিটারে ৭০ মাইক্রোগ্রাম বস্তুকণা ছিল। পরের অবস্থানে রয়েছে শাহবাগ এলাকা। এর পরের স্থানগুলো হচ্ছে পুরান ঢাকার আহসান মঞ্জিল, আবদুল্লাহপুর, মতিঝিল, ধানমন্ডি ৩২, সংসদ এলাকা, আগারগাঁও, মিরপুর-১০ ও গুলশান-২।
গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি বায়ুদূষণ রোধে ১৫টি সুপারিশ উপস্থাপন করে। সুপারিশগুলো ছিল পাঁচটি করে স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ।
স্বল্পমেয়াদি পদক্ষেপগুলো হলো শহরে প্রতিদিন দুই থেকে তিন ঘণ্টা পরপর পানি ছিটানো, ধুলা সংগ্রহে সাকশন ট্রাক ব্যবহার, নির্মাণকাজের সময় নির্মাণ স্থান ঢেকে রাখা, অবৈধ ইটভাটা বন্ধ, ব্যক্তিগত-ফিটনেসবিহীন গাড়ি নিয়ন্ত্রণ।
মধ্যমেয়াদি পদক্ষেপের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে গাছ লাগানো, জলধারা সংরক্ষণ, সাইকেল লেন, সিটি গভর্নেন্স প্রচলন।
news24bd.tv/ তৌহিদ