ইতালি যাওয়ার পথে ঠান্ডায় মারা যাওয়া বাপ্পীর বাড়ি শরীয়তপুরে

কামরুল হাসান বাপ্পী

ইতালি যাওয়ার পথে ঠান্ডায় মারা যাওয়া বাপ্পীর বাড়ি শরীয়তপুরে

রতন মাহমুদ, শরীয়তপুর

লিবিয়া থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার পথে ঝড় ও বৃষ্টির কারণে ঠান্ডায় প্রাণ হারানো ৭ বাংলাদেশির মধ্যে পাঁচজনের ঠিকানা বলা হয় মাদারীপুরে। গত ২৫ জানুয়ারি ইতালিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে তাদের মৃত্যুর তথ্য জানায়। কিন্তু বাপ্পী নামের যে যুবককের নাম প্রকাশ করা হয়েছে তার বাড়ি শরীয়তপুরের নড়িয়ায় বলে দাবী করছেন বাপ্পীর পরিবার।

বাপ্পীর পরিবার বলেন, গত নভেম্বর মাসে কামরুল হাসান বাপ্পী ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে প্রথমে দুবাই পরে সেখান থেকে লিবিয়া যান।

সেখান থেকে ২৩ জানুয়ারি ট্রলারে উঠেন ইতালির উদ্দেশ্যে। ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টির কারণে ট্রলারে ৭ বাংলাদেশির মৃত্যু হয়।

দুইদিন পর ইতালির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ট্রলারটি উদ্ধার করে। তারপরের দিন ইতালি দূতাবাস মৃতদের নাম প্রকাশ করে।

যার মধ্যে মাদারীপুরের ৫ জনের তালিকায় বাপ্পীর নাম প্রকাশ হয়। তার সাথে কোন কাগজ পত্র ছিল না। আশেপাশের লোক তাকে না চিনায় তার ঠিকানা মাদারীপুর দেখানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বাপ্পীর নাম মাদারীপুর সদর দেওয়া আছে। পিতা মাতার নাম দেওয়া নেই। ইতালিতে বসাবাসরত আত্মীয়স্বজন ওটা বাপ্পীর লাশ বলে জানিয়েছে।

কামরুল হাসান বাপ্পী শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলা চেয়ার আলী মাদবরের কান্দি মুক্তাকার চরে গ্রামের বাড়ি। জাতীয় পরিচয়পত্র ঠিকানা মূলনা গ্রামের মৃধা কান্দি এলাকার আবুল বাসার কাজীর ছেলে দাবী পরিবারের।

ইতালি দূতাবাস বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, গত ২৪ জানুয়ারি ২৮৭ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালির উদ্দেশে রওনা হন। তাদের মধ্যে ২৭৩ জনই বাংলাদেশি নাগরিক। অভিবাসনপ্রত্যাশী অন্যরা মিসরীয় নাগরিক। প্রচণ্ড ঠান্ডায় হাইপোথামিয়া হয়ে মারা যান সাত বাংলাদেশি। গত ২৫ জানুয়ারি বিষয়টি জানতে পারে বাংলাদেশ ইতালির দূতাবাস। বাংলাদেশ ইতালি দূতাবাস থেকে জরুরি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যামে নিশ্চিত করেন যে মারা যাওয়া সাত বাংলাদেশি মধ্যে পাঁচজনই মাদারীপুর জেলার।

সুনির্দিষ্টভাবে তাদের পরিচয় শনাক্ত করে মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আবেদন করতে আহ্বান করেছেন দূতাবাস। মৃত ব্যক্তিরা হলেন- মাদারীপুর জেলার সদর উপজেলার পশ্চিম পেয়ারপুর এলাকার মো. ইমরান হাওলাদার কালু (২৩), একই ইউনিয়নের বরাইল বাড়ি এলাকার প্রেমানন্দ তালুকদারের ছেলে জয় তালুকদার (১৮), মস্তফাপুর ইউনিয়নের চতুরপাড়া এলাকার শাহজালাল মাতুব্বরের ছেলে জহিরুল ইসলাম শুভ (২০), রাজৈর উপজেলার ইশিবপুর ইউনিয়নের উমারখালী এলাকার সাফায়েত মোল্লা (২০) ও বাপ্পি, সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার সাজ্জাদ ও কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার সাইফুল।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাসেদুজ্জামান বলেন, কামরুল হাসান বাপ্পী নামের যে ছেলে ইতালিতে মারা গেছে তার বাড়ি মাদারীপুর দেখানো হয়েছে। তবে নড়িয়ার একটি পরিবারের আবেদন আমরা পেয়েছি। লাশটি আসার পর সনাক্ত করা হবে। পরে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন


দুর্নীতি করে কেউ পার পাবে না : ওবায়দুল কাদের

news24bd.tv এসএম