বাংলাদেশে এক বছরে নতুন প্রায় দেড় লাখ মানুষের ক্যান্সার শনাক্ত হয় যার মাঝে সাত হাজারের বেশি লোক রক্তের বিভিন্ন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন। নন হজকিন ও হজকিন লিম্ফোমা, লিউকেমিয়া, মায়েলোমা রক্তের ক্যান্সারের অন্তর্গত। ধরণ ভেদে চিকিৎসায়ও ভিন্নতা হয়ে থাকে এবং রোগের পর্যায় বা ঝুঁকি বিবেচনা করে রোগের চিকিৎসা দেয়া হয়। রক্তের অনেক ক্যান্সারের ক্ষেত্রেই সুচিকিৎসার মাধ্যমে দীর্ঘদিন ভালো থাকা যায়।
শুক্রবার বিশ্ব ক্যানসার দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্বিবিদ্যালয়ের হেমাটোলজি বিভাগের উদ্যোগে এক ওয়েবিনারে বক্তরা এ তথ্য জানান। হেমাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডাক্তার সালাউদ্দিন শাহ এর সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএসএমএমইউ এর ভিসি ডাঃ মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ।
উক্ত সেমিনারে বিশেষজ্ঞ প্যানেলে উপস্থিত ছিলেন প্রো ভিসি অধ্যাপক ডাঃ ছয়েফউদ্দীন আহমেদ, মেডিসিন অনুষদের ডীন অধ্যাপক ডা: মাসুদা বেগম, হেমাটলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা: এ বি এম ইউনুস, অধ্যাপক ডা: মো: আব্দুল আজিজ, সহযোগী অধ্যাপক ডা: মো: রফিকুজ্জামান খান ও ডা: আমিন লুতফুল কবির। হেমাটোলজী বিভাগের রেসিডেন্ট ডা: মিলি দে, ডা: মারুফ রেজা কবির, ডা: স্বরূপ চন্দ্র পোদ্দার ও ডা: নাজিয়া শারমিন সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সহকারি অধ্যাপক ডা: মুজাহিদা রহমান ও রেসিডেন্ট ডা: কাজী ফজলুর রহমান। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্বিবদ্যালয়ে বিশ্ব ক্যান্সার দিবস উদযাপন ক্যান্সার সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী সচেতনতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যেই প্রতি বছর ৪ ফেব্রুয়ারি এ দিবসটি পালন করা হয়ে থাকে। এ বছর দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে 'সেবার সীমাবদ্ধতা কমিয়ে আনা'।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, গ্লোবোক্যান ২০২০ এর প্রক্ষেপণ অনুযায়ী ২০২০ সালে সারা পৃথিবীতে প্রায় ১ কোটি ৯০ লক্ষ মানুষের ক্যান্সার শনাক্ত হয়েছিল। এর মধ্যে নন হজকিন ও হজকিন লিম্ফোমা, লিউকেমিয়া, মায়েলোমা সহ রক্তের বিভিন্ন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন ১২ লাখেরও বেশি মানুষ। একই পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশে এক বছরে নতুন প্রায় দেড় লাখ মানুষের ক্যান্সার শনাক্ত হয় যার মাঝে সাত হাজারের বেশি লোক রক্তের বিভিন্ন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন।
তারা বলেন, নন হজকিন ও হজকিন লিম্ফোমা, লিউকেমিয়া, মায়েলোমা রক্তের ক্যান্সারের অন্তর্গত। ধরণ ভেদে চিকিৎসায়ও ভিন্নতা হয়ে থাকে এবং রোগের পর্যায় বা ঝুকি বিবেচনা করে রোগের চিকিৎসা দেয়া হয়। রক্তের অনেক ক্যান্সারের ক্ষেত্রেই সুচিকিৎসার মাধ্যমে দীর্ঘদিন ভালো থাকা যায়। মুখে খাবার ঔষধ, কেমোথেরাপি, টার্গেটেড থেরাপি, ইমিউনোথেরাপি এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে রেডিয়েশন থেরাপির মাধ্যমে রোগের চিকিৎসা করা হয়।
রোগ মনিটরিং এর মাধ্যমে ঔষধের কার্যকারিতা পর্যবেক্ষণ করা হয় এবং প্রয়োজনে ঔষধের ডোজ পরিবর্তন করা হতে পারে। রোগ বৃদ্ধি পেলে প্রয়োজনে হেমাটোপয়েটিক সেল ট্রান্সপ্লান্টেশন বা বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশনের মাধ্যমে রোগের দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা সম্ভব।
অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে ক্যান্সারমুক্ত দেশ গড়তে চায় সরকার। সেজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিটি বিভাগে ক্যান্সার হাসপাতাল নির্মাণ করছেন।
তিনি বলেন, দেশে চিকিৎসা ব্যবস্থা আরো উন্নত করতে হবে। কোনো রোগী যেন চিকিৎসার জন্য বিদেশে না যায় তার ব্যবস্থা করতে হবে।
অধ্যাপক ডাঃ মোঃ সালাহউদ্দীন শাহ বলেন, রোগীদের রেজিস্ট্রি তৈরি, সকল রোগী যাতে সহজে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পেতে পারেন এবং হেমাটোপয়েটিক সেল ট্রান্সপ্লান্টেশন বা বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশন সহ ক্যান্সার চিকিৎসার সর্বাধুনিক সুবিধাদি সহজলভ্য করার ব্যাপারে সরকারী-বেসরকারী সকল পর্যায়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। এজন্য তিনি বিশ্বিবদ্যালয় প্রশাসনের সহায়তা কামনা করেন।
news24bd.tv/আলী