রাস্তা ছাড়াই সেতু!

ফসল পরিবহনে দুর্ভোগ কৃষকদের

রাস্তা ছাড়াই সেতু!

নাটোর প্রতিনিধি

২১ লাখ টাকা ব্যয়ে নাটোরের বাগাতিপাড়ায় নির্মান করা হয় একটি সেতু। কিন্তু সেতুতে উঠার রাস্তা না থাকায় সেই সেতু নির্মাণের চার বছরেও কোনও কাজে আসছে না স্থানীয় কৃষকদের।

সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়, উপজেলার জামনগর ইউনিয়নের কালিকাপুর মাঠের মধ্যে সড়ক থেকে অনেক উঁচু হয়ে আছে সেতুটি। যার কারণে চলাচল ও মাঠের ফসল পরিবহনে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন তিন গ্রামের মানুষ।

প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কালিকাপুর-চাপাপুকুর সংযোগ রাস্তায় তিন গ্রামের মানুষের সহজ যোগাযোগের জন্য নির্মাণ করা হয় এই সেতুটি। ২৬ ফুট দীর্ঘ সেতুটি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়।

স্থানীয় লোকজন জানান, প্রায় চার বছর আগে নির্মাণ করা হলেও প্রথম থেকেই সেতুটির দুই পাশে পর্যাপ্ত মাটি ভরাটের কাজ হয়নি। এতে সড়কটির নামমাত্র অস্তিত্ব দেখা গেলেও চলাচলের একেবারে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

এতে ফসল পরিবহনে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন এলাকাবাসী।

জানা গেছে, কালিকাপুর, চাপাপুকুর এবং কৈচরপাড়া এলাকা কৃষিপ্রধান হওয়ায় গ্রামের কৃষকেরা মাঠের ফসল পরিবহনে ভ্যান, পাওয়ার ট্রিলার এবং মহিষের গাড়ি ব্যবহার করেন, যা এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করা সম্ভব হচ্ছে না। মাঠের ফসল কৃষকদের মাথায় করে পরিবহন করতে হয়। তাই দ্রুত মাটি ভরাটের মাধ্যমে রাস্তাটি চলাচলের উপযোগী করার দাবি জানান তাঁরা।

সরেজমিন দেখা গেছে, সমতল থেকে অনেক উঁচু এই সেতুর গোড়ায় কিছুটা মাটি দিয়ে বাকি রাস্তায় নামমাত্র মাটি দেওয়া হয়েছে। ফলে ওই রাস্তাটি মানুষের হাঁটা ছাড়া আর কোনো কাজেই আসছে না।

চাপাপুকুর গ্রামের কৃষক আনিছুর রহমান বলেন, চার বছর আগে যখন সেতুটি নির্মাণ করা হয় তখন এলাকাবাসী একটু নিচু করতে বলেছিলেন। কিন্তু তা করা হয়নি। রাস্তাটিতে মাটি না ফেলায় ও সংস্কার না করায় ওই সেতুর ওপর দিয়ে শুধু হেঁটে যাওয়া ছাড়া আর কোনো যানবাহন যাওয়া সম্ভব হয় না। ফলে ওই মাঠের ফসল বাড়িতে নিতে গিয়ে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন তাঁরা।

জামনগর ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান গোলাম রাব্বানী বলেন, তিনি সবে দায়িত্ব নিয়েছেন। সেতুটি সম্পর্কে ওই এলাকার কয়েকজন মোবাইল ফোনে জানিয়েছেন। ইতিমধ্যে তিনি সেটি দেখতে গিয়েছিলেন এবং ওই এলাকার ইউপি সদস্যকে বিষয়টি সমাধানের জন্য নির্দেশও দিয়েছেন।

প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নুরুন্নবী সরকার বলেন, তিনি কিছুদিন আগে এই উপজেলায় যোগ দিয়েছেন। সেতুটি সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন না। তবে খোঁজ নিয়ে দেখবেন, যদি মানুষের যাতায়াতে সমস্যা হয় তা হলে সমাধানের ব্যবস্থা করবেন।

news24bd.tv/আলী