রোহিঙ্গা ইস্যু: পার্বত্যাঞ্চলের সম্প্রীতি রক্ষায় চাকমা রাজার আহ্বান

রোহিঙ্গা ইস্যু: পার্বত্যাঞ্চলের সম্প্রীতি রক্ষায় চাকমা রাজার আহ্বান

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

মিয়ানমারের রোহিঙ্গা ইস্যুকে কেন্দ্র যাতে কেউ পার্বত্যাঞ্চলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও শান্তি বিনষ্ট করতে না পারে সে দিকে সকলকে সজাগ থাকার আহবান জানিয়েছেন রাঙামাটির চাকমা সার্কেল চিফ রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়।  

তিনি বলেন, রাখাইন রাজ্যের শরণার্থীদের প্রতি তাঁদের স্বদেশে অত্যাচার ও বাংলাদেশে তাঁদের আগমনকে ঘিরে নানা প্রচার, অপ-প্রচার, গুজব এবং সীমিত পর্যায়ের হিংসাত্মক ঘটনার কথা আমরা জানতে পেরেছি। বার্মার সংখ্যা-গুরু সম্প্রদায় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী, এবং শরণার্থীদের সিংহভাগ মুসলিম ধর্মাবলম্বী। বিষয়টাকে অহেতুক সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্ব হিসেবে কোন কোন মহল থেকে অপব্যাখ্যা প্রদান করা হচ্ছে।

এসবের অসংযত বহিঃপ্রকাশের ফলে সাম্প্রদায়িকতা বেড়ে যাচ্ছে। পার্বত্যাঞ্চলে বসবাসরত পাহাড়ি-বাঙালির মধ্যে কোন রকম অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটতে পারে তার জন্য জনসচেনতা বাড়াতে হবে। একইসাথে রহিঙ্গাদের প্রতি বার্মার সরকারের বৈষম্যমূলক, হিংসাত্মক এবং মানবাধিকার-বিরোধী ও মানবতা-বিরোধী কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই।

রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাঙামাটি চাকমা রাজার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় এসব কথা বলেন।

চাকমা রাজা আরও বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে কয়েক লক্ষ ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নারী, পুরুষ ও শিশুর মর্মান্তিক অবস্থায় বাংলাদেশে আগমনে আমরা গভীরভাবে উদ্ভিগ্ন। তাই মানবিক কারণে রহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া সরকারের ও দেশের মানুষের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। তিনি বলেন, একটি সম্প্রদায়িক মহল দেশের বৌদ্ধদেরকেও রাখাইন রাজ্যের নিপীড়নের জন্য দায়ী করছে। কিন্তু মিয়ানমার সরকারের সামরিক শাসনামলে নিপীড়নের শিকার শুধু মুসলিমরা নয়। শ্যান, রাখাইন, মোন, ক্যারেনসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নর-নারীও অত্যাচার-বৈষম্যের শিকার হয়েছেন।

 ১৯৩০, ১৯৪৪-৪৫ ও ১৯৬২ সালে ঐতিহাসিকভাবে দেখা যায় বার্মায় ভারতীয় ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নিপীড়নমূলক কর্মকাণ্ডের ফলে হাজার হাজার মুসলিম, হিন্দু, শিখ ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মানুষ বার্মা থেকে বিতাড়িত হয়েছিল। তাই বাংলাদেশে বসবাসরত নাগরিকদের মধ্যে- বাঙালি- উপজাতিসহ মুসলমান, হিন্দু, খ্রিস্টান,
বৌদ্ধ ও অন্যান্য ধর্ম বা আধ্যাত্মিকতায় বিশ্বাসী সম্প্রদায়গুলোর মধ্যেও যাতে সম্প্রীতি বিনষ্ট না হয় সেদিকে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে।

সম্পর্কিত খবর