জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর জন্ম পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. শেখ মেহেদী হাসান। এর পর ওই শিক্ষার্থী অভিমানে ফেসবুক লাইভে এসে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বৃহস্পতিবার বিকাল চারটার দিকে ফেসবুক লাইভে এসে ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে সে। বর্তমানে তিনি ময়মনসিংহ মেডিকেলে চিকিৎসাধীন।
ওই শিক্ষার্থীর নাম শামীম সিদ্দিকী। তিনি ইংরেজী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। এ ঘটনার পর উত্তাল হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস।জানাযায়, ফেসবুক লাইভে এসে একই বিভাগের শিক্ষক ড. শেখ মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলেন ওই শিক্ষার্থী।
আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনাটি ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে সন্ধ্যা থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক ড. শেখ মেহেদী হাসানের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনে নামেন সহপাঠী ও শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের জয়বাংলা মোড় চত্ত্বর ও প্রশাসনিক ভবনের সামনে টায়ারে অগ্নিসংযোগ করে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থী। এসময় অভিযুক্ত শিক্ষকের পদত্যাগ ও শাস্তির দাবী জানায় আন্দোলনকারীরা। রাত আটটার দিকে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করতে থাকে তারা।
এ ব্যাপারে ড. শেখ মেহেদী হাসান বলেন, শামীমকে যা কিছু বলেছি সবকিছু ছিল মোটিভেশনাল। আসলে জন্মের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন ছিলনা। প্রাসঙ্গিক অনেক কথায় হয়েছে। তাকে হেয় করার মত কোন কথা আমি বলিনি বরং আমি পড়াশোনায় মনযোগী হওয়ার ব্যাপারে তাগিদ দিচ্ছিলাম। এটা আমার বিরুদ্ধে একটা ষড়যন্ত্র হতে পারে।
ইংরেজী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ইমদাদুল হুদা বলেন, খবর পেয়ে আমরা হাসপাতালে গিয়েছি। তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আগে ওই শিক্ষার্থী সুস্থ হয়ে উঠুক, তারপর আলোচনা ও তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর উজ্জল কুমার প্রধান জানান, শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে আমরা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করছি। শিক্ষার্থী সুস্থ হলে এ ব্যাপারে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ফেসবুক লাইভে এসে শামীম সিদ্দিকী বলেন, ‘তোমার বাবা কি করেন। আমি বললাম শিক্ষকতা করেন কলেজে। জানতে চাইলেন পদবি কি। আমি সেটা না বলতে পারায়, তিনি বললেন, তুমি তোমার বাবার কেমন ছেলে ? জিজ্ঞেস করলেন তোমার বাবার বয়স কত, বললাম ৪৫ হবে, তোমার বয়স কত, বললাম ২২। এরপর তিনি এ নিয়ে তিনি বিশ্লেষন শুরু করলেন। তিনি বললেন, চাকরি নেয়ার পর উনি বিয়ে করলে, হিসেব তো মিলে না। তাহলে তুমি কবে হইছো ?’
এমন প্রশ্ন মেনে না নিতে পেরে, কষ্টের কথাগুলো সবাইকে জানাতে ফেসবুক লাইভে এসে ঘুমের বড়ি খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ওই শিক্ষার্থী। লাইভ দেখে, সহপাঠীরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। খবর পেয়ে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছুটে যান ছাত্র বিষয়ক পরামর্শক ড. তপন কুমার সরকার, ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের শিক্ষকরা।
news24bd.tv/আলী