কে এই ক্ষমতাধর নেতা পুতিন? জানুন

ভ্লাদিমির পুতিন

কে এই ক্ষমতাধর নেতা পুতিন? জানুন

অনলাইন ডেস্ক

বিশ্বের সবচেয়ে বড় দেশ রাশিয়া। আর দেশটির সবচেয়ে ক্ষমতাধর নেতা হচ্ছেন ভ্লাদিমির পুতিন। ৬৯ বছর বয়সী এই পুতিন ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের নেতৃত্বে রয়েছেন। রাশিয়ায় গত দুই দশকের বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় রয়েছেন তিনি।

পশ্চিমাদের কোনো হুমকি-ধামকিকে তোয়াক্কা না করেই ইউক্রেনের ওপর আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছেন পুতিন।

রাশিয়ার সবচেয়ে বেশি বিক্রির ক্যালেণ্ডারে শোভা পেয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর নেতা পুতিনের ছবি।  

পুতিনের জন্ম ১৯৫২ সালের ৭ই অক্টোবর। সেসময় তার বাবা একটি কারখানায় কাজ করতেন।

তার দাদা ছিলেন একজন বাবুর্চি। ছোটবেলায় পুতিন জুডো খেলা রপ্ত করেন।   

স্কুলের পড়ালেখা শেষ করার আগেই পুতিনের স্বপ্ন ছিল তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবিতে কাজ করার। আইন শাস্ত্র নিয়ে পড়াশুনা করেন তিনি।  বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষ করেই তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবিতে যোগ দেন।

১৯৯৭ সালে বরিস ইয়েলেৎসিন যখন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট তখন ভ্লাদিমির পুতিন ক্রেমলিনে আসেন এবং তাকে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সার্ভিসের প্রধান হিসেবে নিয়োগ করা করা হয়। ১৯৯৯ সালে নতুন বছরের শুরুতে ইয়েলেৎসিন প্রেসিডেন্টের পদ থেকে পদত্যাগ করেন এবং ভ্লাদিমির পুতিনকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা করেন।
২০০০ সালে প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পুতিন জয়লাভ করেন।

২০০৪ সালে তিনি দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় আসীন হন। ২০১২ সালে তিনি তৃতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়লাভ করেন।

২০১৩ সালে পুতিনের সঙ্গে তার স্ত্রীর ৩০ বছরের দাম্পত্য জীবন শেষ হয়। স্ত্রীর অভিযোগ ছিল, পুতিন শুধুই কাজের মধ্যে ডুবে থাকতেন। কাজই ছিল তার নেশা।

পুতিন দেশের বাইরে যুদ্ধ চালিয়েছেন, দেশের ভেতরে পেনশন ব্যবস্থার সংস্কার করেছেন। প্রতিবেশী ইউক্রেনের একটি অংশ দখল করে নিয়ে তিনি রাশিয়ার সীমানা বাড়িয়েছেন। নতুন করে আবারও ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে নেমেছেন।

সম্প্রতি পুতিন নিজ দেশটির সংবিধানে ব্যাপক সংস্কারের প্রস্তাব করেছেন। যাতে ক্ষমতার ভারসাম্যে পরিবর্তন আনা যায়। নিয়োগ করেছেন নতুন এক প্রধানমন্ত্রীও।

সংবিধানের সংস্কারের কারণ হিসেবে পুতিন দাবি করেন, এর মাধ্যমে রাশিয়াকে আরও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করা যাবে। আসলেই কী তাই?

পুতিন জানান, তিনি সরকারের হাতে আরও ক্ষমতা দিতে চান। যেমন মন্ত্রী নিয়োগ বা এ ধরণের ক্ষমতা। অন্যদিকে তিনি প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা সীমিত করতে চান। কিন্তু বাস্তবে আসলে পুতিন এখন চতুর্থ মেয়াদের জন্য ক্ষমতায় আসীন। রাশিয়ার বর্তমান সংবিধান অনুসারে তিনি আর নতুন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকতে পারেন না। কারণ সংবিধান অনুযায়ী পর পর দু'বারই কেবল ক্ষমতায় থাকা যায়।  

কিন্তু পুতিন টানা দু'বার প্রেসিডেন্ট থেকে এরপর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে গিয়ে আবার টানা দুই মেয়াদে প্রেসিডেন্টের পদে আছেন। এরপরও পুতিন যে রাশিয়ার ক্ষমতার মঞ্চ থেকে সরে যাবেন তা মনে হচ্ছে না।

এ ব্যাপারে রাশিয়ার রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা, পুতিন রাশিয়ার রাষ্ট্রক্ষমতায় তার নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার নতুন কোনো কৌশল আঁটছেন।  

সংবিধানের এক সংক্রান্ত বিধিনিষেধ বাতিল করে বিশ্বের অনেক দেশের নেতাই ক্ষমতার মেয়াদ নিজেরাই বাড়িয়ে নিয়েছেন। পুতিন ইতোমধ্যে এই কাজ একবার করেছেন। ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য আবারও হয়তো নতুন কোন কৌশলে যাবেন।

রাশিয়ায় 'স্টেট কাউন্সিল' নামে একটি পরিষদ আছে, যার প্রধান তিনি নিজে। এখন পর্যন্ত এর ক্ষমতা এবং উদ্দেশ্য খুবই সীমিত। কিন্তু এখন এই 'স্টেট কাউন্সিল'কে সাংবিধানিক মর্যাদা দেয়া হচ্ছে। এটির পাওয়ার ব্যবহার করেই আবার ক্ষমতায় টিকে থাকার সম্ভাবনা কিন্তু একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

ভ্লাদিমির পুতিন ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্টের পদে থাকতে পারবেন। কিন্তু তার পর কে আসলে দায়িত্ব নেবেন, সেটা নিয়ে অনেক জল্পনা-কল্পনা আছে।  সূত্র : বিবিসি

news24bd.tv রিমু