রুশ গোলরক্ষকের কাছেই হারলো স্পেন

জয়ের পর রাশিয়ান ফুটবলারদের উচ্ছ্বাস। ছবি: এএফপি

রুশ গোলরক্ষকের কাছেই হারলো স্পেন

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

কার হাতে উঠবে এবার বিশ্বকাপ? একে একে বড় দলগুলো বিদায় নিচ্ছে। প্রথম রাউন্ডেই ব্যর্থতা নিয়ে রাশিয়া ছাড়লো পরাক্রমশালী জার্মানি। দ্বিতীয় রাউন্ডে এসে প্রথম দিনে বিদায় নিলো আর্জেন্টিনা ও পর্তুগাল। এরপর স্পেন।

লিওনেল মেসি, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পর এবার বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেলেন আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা। অবিশ্বাস্য দক্ষতায় টাইব্রেকারে স্পেনের দুটো শট রুখে দিয়ে ম্যাচের নায়ক হয়ে উঠলেন রাশিয়ার গোলরক্ষক ইগর আকিনফিভ। এছাড়া পুরো ম্যাচেই দক্ষতার সঙ্গে স্পেনের অনেকগুলো আক্রমনে দেয়ালের মতো বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন আকিনফিভ। ফলে নকআউট পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হলো শক্তিশালী স্পেনকে।

এদিন ফলাফল না আসায় অতিরিক্ত সময়ে গড়ায় ম্যাচটি। ১২০ মিনিটের পরও ফলাফল  ছিল ১-১। ফলে খেলা গড়ায় ট্রাইব্রেকারে। এ বারের বিশ্বকাপের প্রথম টাইব্রেকারে রাশিয়া জিতল ৪-৩ গোলে। স্পেনকে মোট ৫-৪ গোলে হারিয়ে আয়োজক দেশ রাশিয়া উঠল কোয়ার্টার ফাইনালে। আজকের দ্বিতীয় খেলায় ক্রোয়েশিয়া ও ডেনমার্কের মধ্যে যারা জিতবে তাদের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে নামবে স্বাগতিক রুশরা।

আরও পড়ুন:বিজয় উল্লাসের পর ম্যারাডোনা হাসপাতালে!

টাইব্রেকারে স্পেনের হয়ে ইনিয়েস্তা, পিকে, র‌্যামোস গোল করলেও ব্যর্থ হলেন কোকে ও ইয়াগো আসপাস। ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পিকের পর তিন নম্বরে মারতে আসা কোকের শট আটকে দিলেন আকিনফিভ। রাশিয়ার হয়ে ফেদর স্মোলেভ, সের্জেই ইগনাশেভিচ, আলেকসান্ডার গোলোভিন, ডেনিস চেরিশেভরা সকলেই গোল করায় আসপাস যখন মারতে এলেন, তখন লুঝনিক স্টেডিয়াম উত্তেজনায় ফুটছে। মিস করলেই রাশিয়া উঠবে, স্পেন শিবিরে তখন মহা টেনশন। এই চাপেরই শিকার হলেন আসপাস। আকিনফিভ অবিশ্বাস্য দক্ষতায় পড়তে পড়তেও পা চালিয়ে আসপাসের শটকে বের করে দিলেন বাইরে। সেই সঙ্গে বেজে উঠলো স্পেনের বিদায়ঘণ্টা।

তিকিতাকা বনাম পাসিং ফুটবল। স্পেন বনাম রাশিয়া ম্যাচকে এভাবেই দেখছিল ফুটবলবিশ্ব। পাশাপাশি, স্পেনের দুর্বল রক্ষণ নিয়েও ছিল নানা কথা।

আরও পড়ুন:খেলা দেখেও মোটা অঙ্কের টাকা পেলেন ম্যারাডোনা!

এদিন ম্যাচের ১২ মিনিটে এগিয়ে গিয়েছিল স্পেন। ফ্রি-কিক থেকে আসা বলে সের্জেই র‌্যামোসকে আটকাতে গিয়ে আত্মঘাতী গোল করে বসেছিলেন সের্গেই ইগনাশেভিচ। তাঁর পায়ে লেগেই বল জালে জড়ায়। এবারের বিশ্বকাপে এটা রাশিয়ার দ্বিতীয় আত্মঘাতী গোল। এরপর স্পেন প্রথমার্ধের প্রায় পুরো সময়ই নিয়ন্ত্রণ করে ম্যাচ। বলের দখল রাখা, ছোট ছোট পাসে আক্রমণ গড়া সবই করেছিল। কিন্তু, দ্বিতীয়বার রাশিয়ার জালে আর বল পাঠাতে পারেনি স্পেন। ইনিয়েস্তাকে রিজার্ভ বেঞ্চে রেখে প্রথম এগারোয় আসেনসিওকে নামিয়েছিলেন স্পেন কোচ ফার্নান্দো হিয়েরো। আক্রমণে গতিই আনাই ছিল উদ্দেশ্য। হতাশ করেননি আসেনসিও। তবে স্পেন ব্যবধান বাড়াতে পারেনি। বরং বিরতির আগে পেনাল্টি থেকে ১-১ করে লড়াইয়ে ফিরেছিল রাশিয়া। ৪১ মিনিটে আর্তেম ডিজিউবা পেনাল্টি থেকে সহজেই গোল করলেন ডেভিড দি গিয়াকে উল্টো দিকে ফেলে।

বিরতির পর রণকৌশল পালটে ডাইরেক্ট ফুটবলে ঝুঁকল স্পেন। বক্সে তোলা হচ্ছিল বল। উদ্দেশ্য ছিলেন স্ট্রাইকার দিয়েগো কোস্তা। কিন্তু, আক্রমণে তীক্ষ্ণতার অভাব ধরা পড়ছিল। কারণ, বল দখলে থাকলেও সৃষ্টিশীলতা থাকছিল না। গোলমুখ খোলাও যাচ্ছিল না। ৬৫ মিনিট পর্যন্ত ৬০০ পাস খেলে ফেলেছিল স্পেন। রাশিয়া সেখানে ২০০ পাসও নয়। তবে লাভ হয়নি।

নির্ধারিত সময় ১-১ থাকার পর নকআউটে প্রথমবারের মতো শুরু হল অতিরিক্ত সময়। ১২০ মিনিটে কোন জালেই বল না জড়ানোয় ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। আর সেখানে রাশিয়ার পরিত্রাতা হয়ে উঠলেন আকিনফিভ। অধিনায়কের মতোই দলকে নিয়ে গেলেন কোয়ার্টার ফাইনালে।

সম্পর্কিত খবর