রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে কী ভাবছে বাংলাদেশের মানুষ? জানুন

সংগৃহীত ছবি

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে কী ভাবছে বাংলাদেশের মানুষ? জানুন

অনলাইন ডেস্ক

ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পরাশক্তি রাশিয়া। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোর থেকে এই অভিযান শুরু হয়। তৃতীয় সপ্তাহে গড়িয়েছে এই অভিযান। রাশিয়ার ছোঁড়া বোমা আর রকেটে কেঁপে উঠছে ইউক্রেনের বিভিন্ন শহর।

এরইমধ্যে ইউক্রেনের বেশ কয়েকটি নগরী দখলে নিয়েছে রুশ বাহিনী। রাশিয়ার ক্রমাগত হামলার ফলে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হচ্ছে ইউক্রেন। দেশ ছেড়েছেন প্রায় ২৫ লাখেরও বেশি ইউক্রেন নাগরিক।  

ইউক্রেনে অভিযান চালানোর কারণে রাশিয়ার বিরুদ্ধে একজোট হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপ, এশিয়া এবং আফ্রিকার অধিকাংশ দেশ।

রুশ আগ্রাসনের প্রতিবাদস্বরূপ একের পর এক নিষেধাজ্ঞা বাড়াচ্ছে পশ্চিমা বিশ্ব।

তবে চীন, ভারত, বাংলাদেশ এক্ষেত্রে নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছে। জাতিসংঘে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাবে ভোটদানে বিরত থাকার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ তার কূটনৈতিক অবস্থান জানায়। কিন্তু সাধারণ মানুষের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে মিশ্র মতামত রয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন বাংলাদেশের উচিত রাশিয়ার অবস্থানের বিপক্ষে অবস্থান নেয়া।  

ইউক্রেন থেকে প্রায় ছয় হাজার কিলোমিটার দূরের দেশ বাংলাদেশের মানুষও অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছে যুদ্ধ পরিস্থিতির দিকে। সংবাদমাধ্যম আর সামাজিক মাধ্যমের কল্যাণে যুদ্ধের খবর এখন নিয়মিত পাচ্ছে মানুষ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন জায়গায় যুদ্ধ নিয়ে তাদের মাঝে দেখা যাচ্ছে নানারকমের মতামত আর অবস্থান।  

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় শ্রেণী পেশার মানুষের সাথে কথা বলে দেখা যায় তাদের মধ্যে রাশিয়াকে সমর্থন করছেন অনেকে। ছাড়া বাংলাদেশের সামাজিক মাধ্যমেও রাশিয়ার অবস্থান এবং কার্যক্রমের পক্ষে জোরালো মতামত রয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র সামিউল ইসলাম বলছেন, "আমার কাছে মনে হয় পশ্চিমারা ইউক্রেনকে দাবার গুটি হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছিল। কিন্তু এখন দেখছে হিতে বিপরীত হয়ে গেছে। ''

"এখন ইউক্রেনকে তারা না নেটোতে নিচ্ছে, না ইউরোপীয় ইউনিয়নে নিচ্ছে। আমার মনে রাশিয়ার দৃষ্টিকোণ থেকে যুদ্ধটা ঠিকই আছে। "

অন্যদিকে কয়েকজন শিক্ষার্থী যুদ্ধের বিপক্ষে। জানান, তারা যুদ্ধের ভয়াবহতা নিয়ে চিন্তিত, তাই তারা যুদ্ধ চান না।

সুনয়না রিমঝিম নামে একজন শিক্ষার্থী বলেন, "যুদ্ধের ক্ষতিটা তো অপূরণীয়, অনেকে মারা যাচ্ছে, অনেকে আহত হচ্ছে। যুদ্ধ একদিন শেষ হবে, এই ক্ষতিটা কিন্তু আর পূরণ করা যাবে না। "

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের রুমানা লায়লা মনে করেন, ইউক্রেনের সাথে অন্যায় আচরণ করেছে রাশিয়া।

তিনি বলেন, "এটা অন্যায়ই হচ্ছে, ইউক্রেনের সাথে। মহিলা এবং শিশুরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, দেশ ছেড়ে পরিবার ছেড়ে চলে যেতে হচ্ছে অন্য দেশে শরণার্থী হয়ে, সেটা খুব করুণ লাগছে আমার কাছে। এ জন্যই আমি যুদ্ধ চাই না। "

হুমায়রা আক্তার নামে এক ছাত্রীেআবার ভিন্নমত পোষণ করেন, তিনি মনে করেন ইউক্রেনের প্রতি মিডিয়া বেশি সহানুভূতি দেখাচ্ছে।

তিনি বলছেন, "মানুষের সিমপ্যাথি দেখা যাচ্ছে ইউক্রেন নিয়ে বেশি, কিন্তু সিরিয়া বা ফিলিস্তিনের ক্ষেত্রে একই রকম ঘটনা দেখি না আমরা। "

তবে যুদ্ধের মানবিক ক্ষতির বিষয়ের সাথে পারমাণবিক যুদ্ধের আশংকার কথাও জানিয়েছেন একয়েকজন।

এক শিক্ষার্থী বলেন, "আমরা চাই না একটা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হোক, পারমাণবিক যুদ্ধ হোক। যেহেতু পশ্চিমা বিশ্ব এবং রাশিয়া উভয়েই পারমাণবিক শক্তিধর, আমাদের শঙ্কা আছে এই পরিস্থিতি নিয়ে। "

আবার যুদ্ধের অর্থনৈতিক দিকটি নিয়েও অনেকেই চিন্তিত।  যুদ্ধের প্রভাব ইতিমধ্যেই দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারে পড়েছে। দেশের বাজারে বেড়েছে নিত্যপণ্যের দাম। সূত্র : বিবিসি

news24bd.tv রিমু