সাভার থানা রোড এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পথে দেখা মিলবে ক্যাফে মেট্রো নামের একটি রেঁস্তোরার। যেখানে খেতে গিয়ে জানা যায় এক সময়ের মেরিন ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুজ্জামানের (৫১) সফল শেফ হয়ে ওঠার গল্প। রেঁস্তোরার দেয়ালে তার জীবনীর বিভিন্ন ফটোগ্রাফ দেখে আগ্রহ হয় তার সম্পর্কে জানার। নিউজটুয়েন্টিফোরকে নিজেই বললেন তার সংগ্রাম এবং সফলতার গল্প।
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামের মরহুম হযরত আলী সরকারের সন্তান আশরাফুজ্জামান পেশায় ছিলেন পুরোদমে মেরিন ইঞ্জিনিয়ার। নারায়ণগঞ্জ মেরিন টেকনোলজি ইন্সটিটিউটে পড়াশোনা শেষে লাইটার জাহাজে যোগ দেন শিক্ষানবিশ ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে।
১৯৯১ সালের ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে প্রতিষ্ঠানের মাদার ভ্যাসেল ডুবে যায়। তার মা তখন চান ছেলের জীবন বেঁচে গেলে এই চাকরি আর নয়।
শিপইয়ার্ডে চাকরির সুবাদে দেশে-বিদেশে ঘোরার সুযোগ পান আশরাফুজ্জামান। শখের বশেই ঘুরতে ঘুরতে ২০০১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি যান যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে। সেখানে প্রথমে ফাস্টফুড ডেলিভারির কাজ করেন। পরে তার ব্যাকগ্রাউন্ড জেনে তাকে কাউন্টারে বসানো হয়। আর সেখান থেকেই তার মেরিন ইঞ্জিনিয়ার পেশা ছেড়ে শেফ হিসেবে সফলতার গল্পের যাত্রা শুরু।
প্রথমে কিছু ড্রিংকস আইটেম এবং ফাস্টফুড নিয়ে ছোট্ট কফিশপ থেকে শুরু হয় তার যাত্রা। ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে আশরাফুজ্জামানের হাতের খাবার। এরপর বাড়তে থাকে তার বিস্তার। এখন ক্যাফে মেট্রো একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্ট যেখানে সব ধরনের খাবার রয়েছে। মেরিন ইঞ্জিনিয়ার পেশা ছেড়ে এই পেশায় এসে কখনো আফসোস হয়েছে কিনা জানতে চাইলে আশরাফুজ্জামান বলেন, আমি এই কাজটা ভালোবেসে করি। আমার সব শ্রম, ভালোবাসা এখন এই কাজের জন্য। আমি মনে করি আমি মানুষকে সেবা দিতে পারছি। তাই কখনোই এমনটা মনে হয়না। বরং অনেক ভালো আছি। অনেকের কাজের সুযোগ হয়েছে আমার এখানে। ক্যাফে মেট্রো ছাড়াও সাভারে তার একটি কনভেনশন সেন্টারও রয়েছে।
পরিশ্রম এবং অধ্যাবসায় দিয়েই আজ আশরাফুজ্জামান একজন সফল উদ্যেক্তা।
news24bd.tv/এমি-জান্নাত