স্বাস্থ্যসম্মত ইফতার নিয়ে বিশেষজ্ঞ পরামর্শ

সংগৃহীত ছবি

স্বাস্থ্যসম্মত ইফতার নিয়ে বিশেষজ্ঞ পরামর্শ

ডা. ইসমাইল আজহারি

একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দৈনিক প্রায় ২০০০-২৫০০ ক্যালোরি সমপরিমাণ খাবার গ্রহণ করতে হয়। তবে রোজার সময় ১০০০ থেকে ১৫০০ ক্যালোরি খাবার গ্রহণই যথেষ্ট। কারণ রোজায় অল্প খাবার গ্রহণ করলেই ‘অটোফ্যাজি’ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শরীরের ক্ষতিকর কোষ সমূহ পরিষ্কার হয়। তাই অন্যান্য সময় যে পরিমাণ খাবার খাওয়া যায়, রোজায় তার চেয়ে এক তৃতীয়াংশ কম খেতে হবে।

 

ইফতারে যা খাবেন
ইফতারিতে ৬০০ ক্যালোরি পাওয়া যায় এমন সব খাবার খান।

খেজুর : খেজুর দিয়ে ইফতার করা সুন্নত। শর্করা জাতীয় খাবারের মধ্যে খেজুর অন্যতম। এর মধ্যে শর্করা ছাড়াও প্রায় সব ধরনের ভিটামিন ও খনিজ উপাদান রয়েছে।

৪টি মাঝারি সাইজের (৩৫ গ্রাম) খেজুরের  মধ্যে প্রায় ১০০ ক্যালোরি রয়েছে। ইফতারে ৪-৫টি খেজুর খাওয়া যেতে পারে।

ফল : ইফতারে কলা খান। একটি কলায় প্রায় ১০৫ ক্যালোরি রয়েছে। অন্যান্য ফল যেমন তরমুজ, আপেল, কমলা এসব পানিশুন্যতা রোধে উপকারী।

ছোলা-বুট : ইফতারে ছোলা-বুট খাওয়া যেতে পারে। ৫০ গ্রাম ছোলা-বুটে প্রায় ১৮০ ক্যালোরি রয়েছে। তবে ছোলা-বুট অল্প পরিমাণে খাবেন। ২০-২৫ গ্রামের চেয়ে বেশি না খাওয়াই ভালো। কারণ এটা হজম হতে দীর্ঘ সময় লাগে।

ডিম : ইফতারে একটি ডিম খাওয়া যেতে পারে যা থেকে পাওয়া যায় ৮০ ক্যালোরি।

ডাবের পানি : ডাবের পানি, ইসপগুলের ভুসি, লেবুর শরবত ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে। এগুলোও রোধ করবে পানিশূন্যতা।

যা পরিহার করবেন
অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার :
ইফতারে অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার কিংবা তেলে ডুবিয়ে যেসব খাবার তৈরি করা হয় যেমন পেঁয়াজু, আলুর চপ, বেগুনি, চিকেন ফ্রাই, জিলাপি ইত্যাদি যতটুকু সম্ভব পরিহার করা ভালো। কারণ এই খাবারগুলো গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা তৈরি করে।

বেশি খাবার নয় : ইফতারে একসাথে অনেক বেশি খাবার খেয়ে ফেলা যাবে না।

সাবধানে খান টকজাতীয় খাবার : টকজাতীয় ফলে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি থাকে, আবার সাইট্রিক অ্যাসিডও থাকে। তাই রোজার সময় টক ফল সাবধানতার সাথে খেতে হবে। ভালো হয়,  রাতের খাবার শেষ করে খেলে। কারণ সাইট্রিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার অ্যাসিডিটির পরিমাণ বৃদ্ধি করে। তাই সতর্কতা অবলম্বন দরকার।

টমেটো বেশি নয় : ইফতারের  অনেকের প্রিয় খাবার টমেটো । তবে এতে প্রচুর পরিমাণে সাইট্রিক অ্যাসিড ও ম্যালিক অ্যাসিড থাকে যা পাকস্থলীতে ইরিটেশন তৈরি করে। তাই টমেটো বেশি পরিমাণে না খাওয়াই ভালো।

ঝাল কম : ঝাল খাবার পাকস্থলীতে অ্যাসিডিটির পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। তাই কাঁচা মরিচ কিংবা অতিরিক্ত ঝাল খাবার পরিহার করে চলতে হবে।

পরিহার করুন গরম খাবার : গরম খাবার যেমন চা, কফি ইত্যাদি পাকস্থলীতে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড ক্ষরণের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। তাই রোজার সময় চা, কফি ইত্যাদি পরিহার করে চলাই ভালো।  

রোজার মাসে যেহেতু আমাদের খাদ্যাভ্যাস ও সময়ের পরিবর্তন হয় সেহেতু সবার উচিত স্বাস্থ্য সচেতন হওয়া। উপরের পরামর্শ গুলো অনুসরণ করলে রোজার মাসেও সুস্থ থাকা সম্ভব।

লেখক : মেডিসিন বিভাগ, ঢাকা কমিউনিটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, মগবাজার, ঢাকা

পরিচালক, সেন্টার ফর ক্লিনিক্যাল এক্সিলেন্স এন্ড রিসার্চ।

news24bd.tv/arkabul