পুলিশের মারধরে যুবকের মৃত্যু, ক্লোজড এসআই 

সংগৃহীত ছবি

পুলিশের মারধরে যুবকের মৃত্যু, ক্লোজড এসআই 

অনলাইন ডেস্ক

লালমনিরহাটে পুলিশের লাথিতে রবিউল ইসলাম খান (২৪) নামে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত লালমনিরহাট সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হালিমকে ক্লোজড করা হয়েছে। নিহত রবিউল মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের কাজিচওড়া গ্রামের দুলাল খানের ছেলে। শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরের দিকে ওই থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।  রবিউল ইসলাম খান হারাটি ইউনিয়নের কাজিরচওড়া গ্রামের দুলাল খানের জ্যেষ্ঠ সন্তান।

চার ভাই ও তিন বোনের মধ্যে সবার বড় ছিলেন রবিউল। স্থানীয় বাজারে বাবার ফার্নিচার ব্যবসা ও বাড়িতে খড়ির ব্যবসা দেখাশোনা করতেন।  

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে মহেন্দ্রনগর বাংলাবাজার এলাকায় মেলা বসায় স্থানীয়রা। মেলাকে ঘিরে রাতে জুয়ার আসর বসলে গোপন খবরে সেখানে অভিযান চালিয়ে রবিউলসহ দু’জনকে আটক করে পুলিশ।

তবে সে সময় রবিউল জুয়া খেলেনি দাবি করে পুলিশভ্যানে উঠতে আপত্তি জানালে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে রবিউলকে মারধর ও জোর করে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। পথে রবিউল অসুস্থবোধ করলে তাকে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসকরা রংপুর মেডিকেলে নেওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু রংপুর পাঠানোর প্রস্তুতিকালে সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে তার মৃত্যু হয়। এরপি সেই খবর ছড়িয়ে পড়লে আন্দোলনে নামে এলাকাবাসি।

এরপর দিনগত রাতেই লালমনিরহাট-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করে অভিযুক্ত এসআই হালিমের শাস্তি দাবি করেন স্থানীয়রা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে পুলিশভ্যানে হামলা ও ভাঙচুর করে অবরোধকারীরা।  

একই দাবিতে শুক্রবার সকালেও অবরোধ করে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের কঠোর শাস্তির দাবি জানান এলাকাবাসী। অবশেষে অভিযুক্ত এসআই হালিমকে দুপুরের দিকে পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়।

রবিউলের মা ছাফিয়া বেগম বলেন, ‘আমার ভালো ছেলেকে পুলিশ পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। যারা মেরেছে আমি তাদের ফাঁসি চাই। ’ 

রবিউলের চাচা মনছুর আলী বলেন, ‘আমার ভাতিজা জীবনে জুয়া খেলাতো দূরে থাক, জুয়া কী জিনিস জানে না। পুলিশ তাকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। ওই পুলিশ কর্মকর্তার শাস্তি চাই। ’ 

লালমনিরহাট সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরি নির্দেশনায় এসআই হালিমকে পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে। পুরো ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে।

লালমনিরহাট পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা বলেন, এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আতিকুল হককে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

news24bd.tv/আলী