দুই প্রেমিকাকে একসঙ্গে বিয়ে করে মহা বিপাকে রনি

দুই প্রেমিকাকে একসঙ্গে বিয়ে করে মহা বিপাকে রনি

অনলাইন ডেস্ক

মমতা রানী (১৮) ও ইতি রানী (২০) নামে  দুই প্রেমিকাকে এক সঙ্গে বিয়ে করে মহা বিপাকে পাড়েছেন রোহিনী চন্দ্র বর্মণ (২৫) নামে সেই যুবক। উপার্জনের কোনো পথও না থাকায় কীভাবে নতুন সংসার চলবে। তা ভাবতে ভাবতে রনির কপালে এখন চিন্তার ভাঁজ।

বুধবার (২০ এপ্রিল) রাতে পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়নের লক্ষীদ্বার এলাকায় মমতা ও ও ইতিকে পাশে বসিয়ে বিয়ে করেন রোহিনী।

রোহিনী চন্দ্র বর্মণ ওই এলাকার যামিনী চন্দ্র বর্মণের ছেলে।

সূত্র জানায়, দুই প্রেমিকাকেই একসঙ্গে সিঁদুর পরিয়েছেন প্রেমিক রোহিনী চন্দ্র বর্মন রনি। তাদের বিয়েও হয়েছে তিন পরিবারের সম্মতিতে। খুশিও তারা।

দুই কনের বাড়িও একই এলাকায়। পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে মেকানিক্যাল ট্রেডে ডিপ্লোমা করেছেন রনি। পড়ালেখা এখনো বাকি। এক ভাই এক বোনসহ চারজনের সংসারে যোগ হয়েছে আরো দুই নতুন মুখ। নিজে এখনো উপার্জন করতে না পারায় চিন্তিত রনি।

রোহিনী চন্দ্র বর্মন রনি বলেন, ‘তারা দুজনই আমাকে ভালোবাসে। তাই দুজনকেই বিয়ে করেছি। এই বিয়েতে আমরা খুশি। তবে চিন্তার বিষয়, আমি এখনো উপার্জন করতে পারি না। এখন চাকরি খুঁজতে হবে। ’

দুই স্ত্রী ও বাবা-মায়ের সঙ্গে রনি।

জানা যায়, ইতি রানীর ও মমতা রানীর সঙ্গে প্রেম চলছিল রনির। এর মধ্যে ইতির সঙ্গে তিন বছর এবং মমতার সঙ্গে পাঁচ মাসের প্রেম। দুজনকেই মন থেকে ভালোবাসেন। বিষয়টি জানাজানি হলে বুধবার রাতে দুই প্রেমিকার সিঁথিতে একসাথে সিঁদুর পরান এই যুবক।

স্থানীয়রা জানান, বলরামপুর ইউনিয়নের গাঠিয়াপাড়া এলাকার গিরিশ চন্দ্রের মেয়ে ইতি রানীর (২০) সঙ্গে রোহিনীর দীর্ঘ দিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এক পর্যায়ে তারা মন্দিরে গিয়ে বিয়ে করেন। বিয়ের বিষয়টি গোপন রেখেছিলেন দুজনই। বিয়ের কয়েক দিনের মধ্যে নতুন করে লক্ষীদ্বার গ্রামের টোনো কিসর রায়ের মেয়ে মমতা রানীর (১৮) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে বর্মনের। প্রেমের সূত্র ধরে গত ১২ এপ্রিল মমতার সঙ্গে দেখা করতে যান রোহিনী। দুজনকে একত্রে দেখে আটকে রেখে বিয়ে দেন মমতার পরিবারের লোকজন।

এদিকে, রোহিনীর বিয়ের খবর শুনে তার বাড়িতে অনশন শুরু করেন ইতি রানী। পরে বুধবার রাতে পুনরায় আনুষ্ঠানিকভাবে দুই বিয়ে একসঙ্গে সম্পন্ন হয়।

রোহিনীর বাবা যামিনী চন্দ্র বর্মণ বলেন, দুজনকে একসঙ্গে ঘরে তুলতে আমাদের আপত্তি ছিল না। তবে আগের বিয়ের বিষয়ে যেহেতু জানা ছিল না, তাই নতুন করে আবার বিয়ের আয়োজন করেছি।

দুই মেয়েকে এক সঙ্গে বিয়ে ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে রনির বাবা বলেন, ‘ঘটনাক্রমে এমনটি হয়ে গেছে। এখন আমরা দুই মেয়েকেই মেনে নিয়েছি। তাদের নিজের মেয়ের মতো করে গ্রহণ করেছি। তারা সুখে থাকলে আমরাও সুখি। তবে ছেলেটির একটা চাকরি হলে ভালো হতো। ’

ইতি রানীর বাবা গিরিশ চন্দ্র বলেন, আমাদের কোনো অভিযোগ নেই। রোহিনীর বাড়িতে আনুষ্ঠানিক বিয়েতে আমরা তিন পরিবারের লোকজনই ছিলাম।

স্থানীয় বাসিন্দা সুশীল চন্দ্র বর্মন বলেন, ‘আমাদের সমাজে সচরাচর এমন ঘটনা দেখা যায় না। দুই মেয়েই যেহেতু এক ছেলেকে চাচ্ছে, কেউ ছাড় দিচ্ছে না। তাই একসঙ্গেই তাদের বিয়ে দিয়েছে তাদের পরিবার। ’

বলরামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন বলেন, বিষয়টি জেনেছি। তবে এ ব্যাপারে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। তাই বিষয়টি নিয়ে আমরাও আর কোনও কিছু করিনি।

news24bd.tv/তৌহিদ