বাংলাদেশ থেকে ৬টি ফেরি কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেছে ইরানের টিটি তেজারত গোস্টারেস কিস নামের একটি কোম্পানি। তেহরানে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের কাছে এসব রো-রো ফেরি কেনার প্রস্তাব করেছে কোম্পানিটির মূল প্রতিষ্ঠান কিস মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন। একইসঙ্গে একটি যাত্রীবাহী জাহাজ ভাড়া নিতে চায় কোম্পানিটি।
সামনে কাতার ফুটবল বিশ্বকাপ।
সম্প্রতি তেহরান দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর ড. জুলিয়া মঈন চিঠি দিয়ে দেশের ব্যবসায়ীদের সংগঠন চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, অ্যাসোসিয়েশন অব এক্সপোর্ট ওরিয়েন্টেড শিপবিল্ডিং ইন্ডাস্ট্রিজ অব বাংলাদেশ এবং জাহাজ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের কাছে ৬টি ফেরি ও যাত্রীবাহী জাহাজ সরবরাহ করার বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। তিনি চিঠিতে লিখেছেন, রো রো ফেরিগুলো কমপক্ষে ২০০ ব্যক্তি ও ৬০টি গাড়ি ধারণক্ষমতা সম্পন্ন হতে হবে। যে জাহাজটি ভাড়া করা হবে তার ধারণক্ষমতা হবে ৩০০ থেকে ৫০০ জন। এই জাহাজটি ফুটবল বিশ্বকাপ সময়ের জন্য ভাড়া নেবে ইরানের কোম্পানিটি। জাহাজের নাবিকসহ অন্যান্য স্টাফ তারা নিজস্ব উপায়ে ব্যবস্থা করবে।
ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, ইরানি কোম্পানি তেহরান দূতাবাসের মাধ্যমে যোগাযোগ করেছে। কোম্পানিটি বাংলাদেশ থেকে ফেরির কারিগরি দিক ও দাম বিষয়ে ধারণা নিতে চেয়েছে। সে ধারণা দেওয়া হয়েছে। এখন কোম্পানিটি আগ্রহী হলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তিনি বলেন, এর আগেও বাংলাদেশ থেকে ডেনমার্ক ও পাকিস্তানে ফেরি সরবরাহ করা হয়েছে। সেখানে ভালোভাবেই চলছে ফেরিগুলো। নিউজিল্যান্ড ও ডেনমার্কে যাত্রীবাহী জাহাজ সরবরাহের অভিজ্ঞতা রয়েছে বাংলাদেশের শিপবিল্ডারদের। এছাড়া ভারতে বাল্ক্ক ক্যারিয়ার, জার্মানিতে মাল্টিপারপাস জাহাজ রপ্তানি করা হয়েছে। ফলে ইরানি কোম্পানির চাহিদা অনুযায়ী ফেরি সরবরাহ করা কঠিন নয়।
বাংলাদেশ ইতোমধ্যে জাহাজ রপ্তানিতে সুনাম অর্জন করেছে। দেশে গড়ে উঠেছে সমুদ্রগামী জাহাজ নির্মাণের কিছু প্রতিষ্ঠান। যদিও গত দুই বছর ধরে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে বিশেষ অর্ডার আসেনি। তবে সংশ্নিষ্টরা আশা করছেন, করোনাপরবর্তী বাড়তি চাহিদার ফলে পণ্য পরিবহন জোরদার হবে। ফলে বাংলাদেশে সমুদ্রগামী জাহাজের নতুন অর্ডার আসবে।
জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থার সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, জাহাজ নির্মাণশিল্পে বাংলাদেশ ৫ বছরে ১৩ ধাপ এগিয়ে বর্তমানে বিশ্বে ১৪ নম্বরে অবস্থান করছে। বৈশ্বিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের এ সাফল্যের পেছনে কাজ করেছে দেশের কয়েকটি বড় শিল্প গ্রুপের জাহাজ নির্মাণশিল্পে বিনিয়োগ। কয়েকটি গ্রুপের যৌথ বিনিয়োগে জাহাজ নির্মাণশিল্পে গড়ে উঠেছে ডেলটা শিপইয়ার্ড। এ শিপইয়ার্ড থেকে বড় বড় মালবাহী জাহাজ তৈরি করা হচ্ছে। জাহাজের ধারণক্ষমতা তিন থেকে পাঁচ হাজার টন।
news24bd.tv/কামরুল