সাবেক প্রতিমন্ত্রী ড. রেদোয়ানসহ গ্রেফতার ৪

সংগৃহীত ছবি

সাবেক প্রতিমন্ত্রী ড. রেদোয়ানসহ গ্রেফতার ৪

অনলাইন ডেস্ক

কুমিল্লার চান্দিনায় ছাত্রলীগ ও এলডিপির পাল্টাপাল্টি ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানকে কেন্দ্রে করে সাবেক প্রতিমন্ত্রী ড. রেদোয়ান আহমেদের গুলিতে দুজন আহতের ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় ড. রেদোয়ান আহমেদসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) মহাসচিব সাবেক প্রতিমন্ত্রী ড. রেদোয়ান আহমেদ (৬৯), মহিচাইল গ্রামের রবিউল্লাহর ছেলে আলী (৩৭), হারং গ্রামের আব্দুল মবিনের ছেলে বাকি বিল্লাহ (৩৯) ও রেদোয়ান আহমেদের গাড়িচালক সিরাজগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার মেছড়া খামারখাতা গ্রামের রেজাউল করিম (৫৫)।  

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম তানভীর বলেন, পাল্টাপাল্টি সমাবেশ শুরু হওয়ার আগেই রেদোয়ান আহমেদ গাড়ি থেকে গুলি ছোড়েন।

প্রাথমিকভাবে রেদোয়ান আহমেদ গুলি ছোড়ার সত্যতার প্রমাণ মিলেছে। কাজী আখলাকুর রহমান জুয়েল নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। ওই ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।  

এর আগে সোমবার দুপুর আড়াইটায় চান্দিনা উপজেলা সদরের রেদোয়ান আহমেদ কলেজ ক্যাম্পাস-২ মমতাজ আহমেদ ভবনের মিলনায়তনে এ ঘটনা ঘটে।

এলডিপির ঈদ পুনর্মিলনী ও ছাত্রলীগ-স্বেচ্ছাসেবক লীগের যৌথ কর্মিসভাকে কেন্দ্রে করে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর ড. রেদোয়ান আহমেদ চান্দিনা থানায় গেলে থানা ঘেরাও করে ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মীরা। পরে তাঁকে আটক করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।  

এ ঘটনায় আহতরা হলেন, চান্দিনা পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ নেতা রূপনগর এলাকার বাসিন্দা মো. জাহাঙ্গীর আলম সরকারের ছেলে মাহমুদুল হাসান জনি সরকার (২৮)। তিনি কুমিল্লা উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। অপরজন হলেন চান্দিয়ারা গ্রামের নূরুল ইসলামের ছেলে নাজমূল হোসেন নাঈম (২৮)। তিনি বরকইট ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কর্মী। আহত দুজনকে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সামিরুল খন্দকার রবি জানান, চান্দিনা রেদোয়ান আহমেদ কলেজ ছাত্রলীগ ঈদের পূর্ব থেকে আজ ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান করতে প্রস্তুতি নিয়েছে। এরই মধ্যে পৌর এলডিপিও একই দিন একই স্থানে ঈদ পুনর্মিলনীর আয়োজন করে। সোমবার দুপুর থেকে ছাত্রলীগের আয়োজনে যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীরা যখন মমতাজ আহমেদ ক্যাম্পাসে আসতে শুরু করেন। দুপুর আড়াইটায় দিকে রেদোয়ান আহমেদ গাড়ি নিয়ে ওই ক্যাম্পাসের সামনে আসেন। এ সময় তিনি গাড়ি থেকে ২টি গুলি করে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে থানায় গিয়ে আশ্রয় নেন। রেদোয়ান আহমেদের গুলিতে জনি ও নাজমুল গুলিবিদ্ধ হন।

পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা কাজী আখলাকুর রহমান জুয়েল বলেন, রেদোয়ান আহমেদ রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তার করতে আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর অমানবিক ভাবে গুলি চালায়।

সাবেক প্রতিমন্ত্রী ড. রেদোয়ান আহমেদ বলেন, আমাদের পূর্ব নির্ধারিত প্রোগ্রাম ছিল। আমাকে প্রধান অতিথি করে চিঠির মাধ্যমে পৌর এলডিপি কার্যক্রম পরিচালনা করে। এরই মধ্যে আমাদের প্রধান ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগকে প্রোগ্রাম করার জন্য অনুমতি দেওয়া হয়। আমরা ক্যাম্পাস-২ মমতাজ আহমেদ ভবনে পূর্বনির্ধারিত প্রোগ্রাম করার কথা। দুপুরে আমি ক্যাম্পাস-২ এর সামনে গেলে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের লোকজন আমার গাড়িতে হামলা করে। আমি আত্মরক্ষার্থে আমার লাইসেন্স করার শটগান দিয়ে গুলি চালাই। কার গায়ে গুলি লেগেছে আমি বলতে পারব না। পরে আমি থানায় এসে আশ্রয় নেই।

এ ব্যাপারে কুমিল্লার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (দাউদকান্দি সার্কেল) মো. ফয়েজ ইকবাল বলেন, পাবলিক রোষানলে রেদোয়ান আহমেদ থানায় আশ্রয় নিতে আসলে আমরা তাকে আটক করি। এই ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হলে ড. রেদোয়ান আহমেদসহ চারজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

news24bd.tv/আলী