বাগরহাটের রামপাল ও মোংলা উপজেলায় ভাইরাসজনিত কারণে মরতে শুরু করেছে চিংড়ি মাছ। এর ফলে মৌসুমের শুরুতে এ দুই উপজেলায় চিংড়ি শিল্পে শতকোটি টাকার ক্ষতির আশংকা করছেন চিংড়ি চাষিরা। এমন অবস্থায় বাগদা চিংড়ির ভরা মৌসুমে চিংড়ি মাছ মরতে থাকায় আর্থিক ক্ষতির মুখে পরেছেন চাষিরা।
রামপাল ও মোংলা উপজেলায় চিড়িং চাষি রয়েছে কয়েক হাজার।
এ দুই উপজেলায় ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ২০ হাজার চিংড়ি ঘের রয়েছে। গত এক সপ্তাহর ব্যবধানে এ দুই উপজলার বিভিন্ন এলাকায় চিংড়ি ঘেরে হঠাৎ করে মাছ মরতে শুরু করে। তবে কি কারণে চিংড়ি মরছে চাষিরা তার সঠিক কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না।রামপাল উপজেলার ভোজপাতিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা চিংড়ি ঘের ব্যবসায়ী নুরুল আমিন বলেন, আমাদের ইউনিয়নের ৯৮ ভাগ চিংড়ি ঘেরে মড়ক লেগে চিংড়ি মরে গেছে।
মোংলা উপজেলার সোনাইলতলা ইউনিয়নের বাসিন্দা জসিম উদ্দিন সরদার বলেন, বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে আমার তিন বিঘা জমিতে মাছ ছেড়েছিলাম। গত ৪ দিন ধরে মাছ মরতে শুরু করেছে। ঘের থেকে মরা মাছ উঠিয়ে দেখি প্রতিটি মাছের গায়ে সাদা সাদা স্পট রয়েছে। কি রোগে মাছ মরছে, তা তো বুঝতে পারছি না। এমন অবস্থা চলতে থাকলে আমার তো পথে বসা লাগবে।
একই উপজেলার সুন্দরবন ইউনিয়নের কাটাখালি এলাকার বাসিন্দা মারুফ হাওলাদার বলেন, এর আগেও ঘেরে মাছ মরেছে, কিন্তু এত দ্রুত কখনও মাছ মরতে দেখিনি। সব মাছ মরে ঘেরের পানির তলায় রয়েছে। ঘেরে নামার পর হাতিয়ে মরা মাছ উঠছে। এই ভাবে মরতে থাকলে সব মরতে আর সময় লাগবে না।
এ বিষয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস. এম. রাসেল বলেন, জেলার রামপাল ও মোংলা উপজেলার প্রায় ২০ হাজার চিংড়ি ঘেরের ৪০ শতাংশ ঘেরের মাছ মারা গেছে বলে আমরা তথ্য পেয়েছি। চাষিদের পক্ষ থেকে ক্ষতির পরিমান ১০০ কোটি বলা হচ্ছে। তবে কি কারণে চিংড়ি মারা যাচ্ছে, সেটিসহ ক্ষতির প্রকৃত পরিমান বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা ধারনা করছি অতিরিক্ত গরম, হোয়াইট স্পট সিনড্রম ভাইরাস বা মৌসুমের শেষে ভাইরাস যুক্ত চিংড়ি ঘেরে ছাড়ার কারণে এমনটা হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, জেলার অধিকাংশ ঘের প্রস্ততির আগে চাষিরা ব্লিচিং পাউডারসহ ভাইরাস মুক্তকরণের যে সব পদ্ধতি আছে তা প্রয়োগ না করে গতানুগতিক ভাবে ঘের প্রস্তত করে চিংড়ি ছাড়েন। এছাড়া চিংড়ি পোনা ছাড়ার আগে পোনা ভাইরাস মুক্ত কিনা তা পিসিয়ার পরীক্ষা না করে পোনা ছাড়ার কারণে এমনটা হতে পারে বলে জানান তিনি।
news24bd.tv/কামরুল