মেয়ের স্বপ্ন ছিল ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। কিন্তু এর আগেই বসতে হবে বিয়ের পিঁড়িতে। না হয় বাবার সংসার ছাড়তে হবে মাকে। বাবার এমন চাপে বিয়েও করেন।
তার বাড়ি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নে। দশম শ্রেণিতে থাকতেই বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয় তাকে। কিন্তু বিয়ের আগে নিজের স্বপ্নভঙ্গের কথা লিখে রেখেছিলেন তিনি।
ওই ছাত্রী বলেন, শিশুরা যখন স্বপ্ন দেখতে শুরু করে, সে সময়ই অনেক মেয়েকে সেই স্বপ্ন ফেলে শ্বশুরবাড়ি চলে যেতে হয়। শুধু শিশু নয়, অনেক কিশোরী ও তরুণীকেও তাদের শৈশবের লালিত স্বপ্নের কথা ভুলে যেতে হয়। হয়তো তারা শ্বশুরবাড়ি গিয়ে আবার নতুন কোনো স্বপ্নে জড়িয়ে পড়ে। বাল্যবিয়ে হলো গরিব হয়ে জন্মানোর প্রায়শ্চিত্ত।
ওই ছাত্রীর শিক্ষক বলেন, মেয়েটি এত বড় স্বপ্ন দেখতে পারে, এটা কিছুতেই বিশ্বাস হয়নি। প্রান্তিক কৃষক পরিবারের মেয়েটি ছাত্রী হিসেবে ছিল মধ্যম সারির। এ পর্যায়ে থেকে কীভাবে এত দূর চিন্তা করতে পারে! শিশুদের মনোজগত সম্পর্কে আমাদের ধারণা যথেষ্ট নয়।
২১ মার্চ ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের গোবিন্দ নগর মহল্লার শামিম হোসেনের সঙ্গে ভুক্তভোগীর বিয়ে হয়। এ বিয়ের মধ্যস্থতা করেন ভুক্তভোগীর বড় বোনের স্বামী ফারুক। দেড় লাখ টাকা যৌতুকের বিনিময়ে বিয়েতে মত দেয় শামিমের পরিবার। যৌতুকও দেওয়া হয়। তবে বিয়ের পরদিন ভুক্তভোগী ছাত্রী বাবার বাড়িতে গেলে তাকে আর ঘরে তোলেননি স্বামীর পরিবার।
ভুক্তভোগীর মা বলেন, এ বিয়েতে আমার মত ছিল না। আমার স্বামীর ইচ্ছায় বিয়ে হয়। তবে ভুক্তভোগীর বাবা বলেন, আমার এক ছেলে, তিন মেয়ে। বয়স হয়েছে। ছেলেটি সবার ছোট। গ্রামের পরিবেশ ভালো না। কখন যে, কী হয়- এ ভেবে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু পোড়া কপাল। আমার মেয়ের নাকি ঘ্যাগ (গলগণ্ড) আছে। ৮ মে ছেলেটি আমার মেয়েকে তালাকপত্র পাঠিয়েছে। আমার মেয়ে সুস্থ। তার কোনো রোগ নেই।
ভুক্তভোগীর স্বামী শামীম হোসেন জানান, তিনি তার স্ত্রীকে ঘরে তুলবেন না। কারণ তার রোগ লুকানো হয়েছে।
news24bd.tv/আলী