ডেসটিনির গ্রাহকদের টাকা ফিরিয়ে দিতে কমিটি গঠনের নির্দেশ

সংগৃহীত ছবি

ডেসটিনির গ্রাহকদের টাকা ফিরিয়ে দিতে কমিটি গঠনের নির্দেশ

অনলাইন ডেস্ক

অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের মামলায় ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীন, প্রেসিডেন্ট সাবেক সেনাপ্রধান এম হারুন-অর রশীদসহ ৪৬ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডের পাশাপাশি অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রফিকুলকে ১২ বছরের কারাদণ্ড ও চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেনকে ১০বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। এছাড়া ৪৬ আসামীকে ২৩শো কোটি টাকা অর্থদন্ড দিয়েছেন আদালত। একইসাথে গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে ৬ সদস্যের কমিটি গঠনের আদেশ দিয়েছেন।

বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি।

প্রায় ৭ বছর বিচার প্রক্রিয়া শেষে বৃহস্পতিবার (১২ মে) আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন আদালত। আসামিদের করা হয়েছে ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা অর্থদণ্ড।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভের নামে ডেসটিনি বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ১ হাজার ৯০১ কোটি টাকা সংগ্রহ করে।

সেখান থেকে আত্মসাৎ করা হয় ১ হাজার ৮৬১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। যার কারণে ক্ষতির মুখে পড়েন সাড়ে ৮ লাখ বিনিয়োগকারী।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মীর আহমেদ আলী সালাম বলেন, জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে আসামিরা ১ হাজার ৯০১ কোটি টাকা অপরাধলব্দ আয় হিসেবে অর্জন করেছিলেন। সেখান থেকে তারা বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় ১ হাজার ৮৬১ কোটি টাকার বেশি স্থানান্তর করে মানি লন্ডারিংয়ের অপরাধ করেছেন। দুদক থেকে যথেষ্ট প্রমাণাদি দিয়ে মামলাটি প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। এতে ৪৬ জন আসামির প্রত্যেকেই সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন।    

তিনি আরও বলেন, যাদের টাকা এখানে বিনিয়োগ হয়েছিল, তাদের জন্য করণীয় ও ক্ষতিপূরণ দেয়ার বিষয়ে ছয় সদস্যের একটি কমিটি গঠনের নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত। কমিটির প্রধান হবেন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি। এ ব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতার জন্য দুদককে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

তবে কতদিনের মধ্যে কমিটি গঠন ও গ্রাহকদের টাকা ফিরিয়ে দেয়া হবে, সে বিষয় কোনো নির্দেশনা আদালত দিয়েছেন কি না, সে বিষয়ে মীর আহমেদ আলী সালাম বলেন, মামলার রায় এক হাজার পৃষ্ঠার। পূর্ণাঙ্গ রায় হাতে না পাওয়া পর্যন্ত বিস্তারিত বলা সম্ভব নয়।

অন্যদিকে ডেসটিনির আইনজীবী ব্যারিস্টার উজ্জ্বল ভৌমিক বলেন, আমরা রায়ে সংক্ষুব্ধ। আমাদের ক্লায়েন্টের নির্দেশনা পেলে উচ্চ আদালতে এ রায়ের বিরুদ্ধে যথাযথ প্রতিকার নেব।

মানি লন্ডারিং আইনের দুটি মামলায় ২০১৪ সালের ৪ মে চার্জশিট দাখিল করে দুদক। চার্জশিটে কো-অপারেটিভ সোসাইটির মামলায় ৪৬ জন এবং ট্রি প্ল্যানটেশন মামলায় ১৯ জনকে আসামি করা হয়। ডেসটিনির এমডি রফিকুল আমিনসহ ১৪ জনের নাম দুই মামলায় থাকায় মোট আসামি ৫১ জন।

যাদের মধ্যে রফিকুল আমিন, প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেন ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মো. দিদারুল আলম ১০ বছর ধরে কারাগারে আছেন। জামিনে রয়েছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) হারুন-অর-রশিদ, মিসেস জেসমিন আক্তার (মিলন), জিয়াউল হক মোল্লা ও সাইফুল ইসলাম রুবেল। বাকি ৪৪ জন এখনো পলাতক।

ডেসটিনির রায়কে ঘিরে সকাল থেকেই আদালত প্রাঙ্গণে জড়ো হন কয়েকশ’ বিনিয়োগকারী। ডেসটিনির বিরুদ্ধে বৃক্ষ রোপণের নামে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আরেকটি মামলা বিচারাধীন।  

news24bd.tv/আলী