ভারতে পি কে হালদার ৩ দিনের রিমান্ডে

সংগৃহীত ছবি

ভারতে পি কে হালদার ৩ দিনের রিমান্ডে

অনলাইন ডেস্ক

প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটির বেশি টাকা আত্মসাৎ করে কয়েক বছর ধরে পালিয়ে থাকা প্রশান্ত কুমার হালদার বা পি কে হালদারসহ পাঁচ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৩ দিনের রিমান্ড দিয়েছে ভারতের একটি আদালত। গতকাল শনিবার পশ্চিমবঙ্গের ব্যাঙ্কশাল আদালত তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সংবাদ প্রতিদিনের তথ্য মতে, পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা থেকে পি কে হালদারসহ ছয় জনকে গ্রেপ্তার করে ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। পরে তাদেরকে পশ্চিমবঙ্গের ব্যাঙ্কশালের আদালতে নেওয়া হলে পি কে হালদারসহ পাঁচজনের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

এছাড়া গ্রেপ্তার আমানা সুলতানা ওরফে শর্মি হালদারকে আদালত ১৭ মে পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয়।

যাদের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে- প্রশান্ত কুমার হালদার, তার ভাই গণেশ হালদার, ইমাম হোসেন, স্বপন মৈত্র, উত্তম মৈত্র।

ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, পিকে হালদার নাম পাল্টে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বসবাস করতেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গে অশোকনগরের একটি বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন।

শনিবার পিকে হালদারসহ মোট ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অশোকনগরে তিনটি বড় ভবন রয়েছে সুকুমার মৃধার। এলাকাবাসী তাকে মাছ ব্যবসায়ী হিসেবে চেনেন।

ভারতে পিকে হালদারের পাচার করা টাকায় গড়া বিপুল সম্পদের খোঁজ পেয়েছেন গোয়েন্দারা। পাওয়া গেছে বেশ কয়েকটি বিলাসবহুল বাড়ি ও কয়েকশ বিঘা মূল্যবান সম্পত্তি।  একইসঙ্গে তল্লাশিতে কলকাতা ও এর আশপাশের বিভিন্ন জেলায় বেআইনি আর্থিক লেনদেন, ব্যাংক অ্যাকাউন্টের হদিস মিলেছে।  

ইডি সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট তথ্য ও বার্তা পেয়েই তল্লাশিতে সক্রিয় হয়েছে ভারতীয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। বাংলাদেশ থেকে পলাতক প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদারের পাঠানো বেআইনি অর্থ সুকুমার মৃধা নামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন শহরে সম্পত্তি কিনতে ব্যয় করা হয়েছিল। মূলত পিকে হালদারের খবর জানতে গিয়েই এদিন অশোকনগরে সুকুমার নামের ওই মাছ ব্যবসায়ীর বিপুল সম্পত্তির হদিস পায় ইডি।

বাংলাদেশের পিকেকাণ্ডে যুক্ত অপরাধীদের নাগাল পেতে কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনার বহু এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে কয়েকজনকে আটক করা হয়। সীমান্তের কাছে অশোকনগর, দমদম, বাইপাসের কাছে একাধিক জোনে চলে এই তল্লাশি। এর মধ্যে শুধু অশোকনগরেই বাংলাদেশ থেকে হাওলার মাধ্যমে আসা টাকায় তৈরি তিনটি বাড়িতে তল্লাশি চালান গোয়েন্দারা। বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে তল্লাশি চালান ইডি কর্মকর্তারা। এদিন উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরে তিনটি জায়গায় একসঙ্গে অভিযান চালান তারা।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অশোকনগরের মাছ ব্যবসায়ী সুকুমার মৃধা মূলত বাংলাদেশে থাকেন। পিকে হালদার মারফত বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সাতটি ভুয়া সংস্থার নামে টাকা তোলা হতো। ব্যাংক থেকে ৩০০ কোটি টাকা বেআইনি লেনদেন হয়।  

উল্লেখ্য, দেশের বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচার করেন পি কে হালদার। দুদক তার ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ৩৪টি মামলা করেছে। এসব মামলায় এক ডজনেরও বেশি ব্যক্তি কারাগারে রয়েছেন। তাদের মধ্যে ১১ জন দোষ স্বীকার করে জবানবন্দিও দিয়েছেন।

news24bd.tv/রিমু