ছেলের মারধরে বাবার মৃত্যু

প্রতীকী ছবি

ছেলের মারধরে বাবার মৃত্যু

অনলাইন ডেস্ক

সাবেক ইউপি সদস্যের ছেলে সুলতান মাহমুদ দেওয়ানের (৪৭) মারধরে পিতা আবদুল কাদের দেওয়ানের (৭০) মৃত্যু হয়েছে। নিহত ব্যক্তি জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলায় আটাপুর ইউনিয়নের সদস্য ছিলেন।  

মারধরের সময় নিহতের স্ত্রী আরজিনা বেগম পাশের ঘরে ছিলেন। এ সময় তিনি নিজেকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেননি বলে জানা গেছে।

পুলিশ ঘাতক ছেলে সুলতান মাহমুদকে আটক করেছে। আজ রোববার ভোররাতে এ ঘটনা ঘটে।  

জানা যায়, আটাপুর ইউনিয়নের বরন গ্রামের মৃত জমির উদ্দিনের ছেলে আব্দুল কাদের দেওয়ান। তার তিন সন্তান―বড় ছেলে সুলতান মাহমুদ দেওয়ান ও ছোট ছেলে সাগর দেওয়ান এবং এক মেয়ে পান্না আক্তার।

স্বামী আবদুল কাদেরের সাথে বনিবনা না হওয়ায় ছোট ছেলে আর মেয়েকে নিয়ে স্ত্রী আরজিনা বেগম পৃথকভাবে থাকতেন। পাশের লাগোয়া ঘরে বড় ছেলে সুলতান মাহমুদ তার স্ত্রী নাছিমা বেগম ও ছোট ছেলে সাফিউল ইসলামকে নিয়ে  থাকেন। সুলতান মাহমুদ টাকার জন্য প্রায়ই তার বাবা, মা ও স্ত্রীর সঙ্গে কলহে জড়িয়ে পড়তেন। স্ত্রী, সন্তান ও বাবাকে মারধরও করতেন তিনি।  

গতকাল শনিবার দিনের বেলায় সুলতান মাহমুদ তার স্ত্রীকে টাকার জন্য নির্যাতন চালান। এ সময় পিতা এগিয়ে এলে তার গলা চিপে ধরেন সুলতান। রাতে আব্দুল কাদের ঘরের বাইরে উনুনের পাশে শুয়ে ছিলেন। এ কারণে আজ রোববার ভোররাতে সুলতান তার বাবাকে মারধর শুরু করেন। তার চিৎকারে স্ত্রী, ভাই, ভাতিজাসহ প্রতিবেশীরা কেউ সুলতানের ভয়ে এগিয়ে আসেননি। তার মারধরে আব্দুল কাদেরের মৃত্যু ঘটে বলে জানায় এলাকাবাসী। ছেলে অবশ্য বাবার হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয়েছে বলে প্রচার করলেও গ্রামবাসী তাকে আটক করে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ সুলতানকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সামছুল আরেফিন চৌধুরী আবু জানান, সুলতান মাহমুদ এলাকাসহ পরিবারের সবার সঙ্গে খারাপ আচরণ করতেন। তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ থাকলেও কোনো ব্যবস্থা কেউ নেয়নি। চেয়ারম্যান জানান, আব্দুল কাদের দেওয়ানকে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে দেওয়া ঘরবাড়ি তার ছেলে সব ভেঙে বিক্রি করলেও  প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তার বিরুদ্ধে আগে থেকেই ব্যবস্থা নিলে এ রকম ঘটনা ঘটত না।  

নিহত আবদুল কাদেরের স্ত্রী আরজিনা বেগম ছেলের ফাঁসি দাবি করেন। বলেন, 'আমার কুপুত্র যেন জেল থেকে না বের হতে পারে। ' ঘাতক সুলতান মাহমুদের স্ত্রী নাছিমা বেগম তার স্বামীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।  

ঘটনাস্থলে থাকা পাঁচবিবি থানার অফিসার ইনচার্জ পলাশ চন্দ্র দেব জানান, এই পরিবারে কলহের কারণে একাধিকবার পুলিশ পাঠিয়ে সমস্যা মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, আবদুল কাদেরের মাথার পেছনে কাঠের বাটাম দিয়ে আঘাত করায় রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে। ঘাতক ছেলেকে আটক করা হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে মামলা দায়ের করা হবে।

news24bd.tv/কামরুল