রাস্তায় চলাচলে করণীয়

প্রতীকী ছবি

রাস্তায় চলাচলে করণীয়

আলেমা মারিয়া মিম 

দুর্ঘটনা এড়িয়ে যেতে প্রয়োজন চতুর্দিকে দৃষ্টি রেখে চলা। প্রয়োজন না হলে দৃষ্টি অবনত রেখে কুদৃষ্টি থেকে বেঁচে থাকাই শ্রেয়। পুরুষদের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তারা যেন দৃষ্টি অবনত রাখে এবং লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। এটাই তাদের জন্য উত্কৃষ্ট পন্থা।

তারা যা কিছু করে আল্লাহ সে সম্পর্কে পরিপূর্ণ অবগত। ’ আর নারীদের প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘এবং মুমিন নারীদের বলে দিন, তারা যেন দৃষ্টি অবনত রাখে এবং লজ্জাস্থানের হেফাজত করে এবং নিজেদের ভূষণ প্রকাশ না করে। ’ (সুরা : নুর, আয়াত : ৩০-৩১)

অসহায় ও বিপদগ্রস্তদের সাহায্য করা

একবারের ঘটনা, এক ব্যক্তি নবীজি (সা.)-এর কাছে এসে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমি পথে বিপদে পড়েছি (অর্থাৎ আমার বাহন মারা গেছে), আমার জন্য একটি বাহনের ব্যবস্থা করে দিন। নবীজি (সা.) বলেন, তোমাকে দেওয়ার মতো কোনো বাহন আমার কাছে নেই।

তবে তুমি অমুকের কাছে যাও। আশা করি সে তোমাকে বাহনের ব্যবস্থা করে দেবে। অতঃপর সে ওই ব্যক্তির কাছে গেল এবং সে বাহনের ব্যবস্থা করে দিল। পুনরায় সে (পথিক) নবীজি (সা.)-এর কাছে এলো এবং তা জানাল। তখন রাসুল (সা.) বললেন, যে ব্যক্তি (যেকোনো উপায়ে) কোনো সৎকর্মের পথ দেখাবে সে ওই সৎকর্মকারীর সমান প্রতিদান পাবে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৫১২৯)

পথহারাকে পথ দেখানো

চলার পথে এমন অনেক পথিক থাকে, যারা গন্তব্যের রাস্তা ভুলে যায় এবং অনেক অন্ধ, শিশু, বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধী থাকে, যারা কারো সাহায্য ছাড়া রাস্তা পারাপার হতে পারে না। তাদের সাহযোগিতা করাও ইসলামের বিশেষ একটি নির্দেশনা। হাদিস শরিফে তাদের এই সহযোগিতাকে আল্লাহর রাসুল (সা.) সদকা বলেছেন। ইরশাদ হয়েছে, পথ না চেনা ব্যক্তিকে পথ দেখিয়ে দেওয়া তোমার জন্য একটি সদকা। (তিরমিজি, হাদিস : ১৯৫৬)

বোঝা বহনকারীর সাহায্য করা

সফরে বের হলে অনেকেই ভারী বোঝা বহন করে থাকে। বোঝা বহন কষ্টসাধ্য না হলেও অনেক সময় দেখা যায় যানবাহনে বোঝা ওঠানো-নামানোর সময় কারো প্রয়োজন দেখা দেয়। যে পথিক ওই মুহূর্তে তার সাহায্য করবে ইসলামে তার জন্য রয়েছে বিশেষ পুরস্কার।

এক হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, কোনো ব্যক্তিকে সওয়ারির ওপর আরোহণে সাহায্য করা অথবা তার মালামাল সওয়ারির ওপরে তুলে দেওয়াও একটি সদকা। (মুসলিম, হাদিস : ২২২৫)

অহংকার ও দম্ভভরে না চলা

রাস্তাঘাটে অহংকার ও দম্ভভরে না চলা, এটা ইসলামের নির্দেশনা। যেমন—রাস্তায় কাউকে নিজের সামনে যাওয়ার সুযোগ না দেওয়া, অন্যের চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা, যানবাহন আটকে রেখে নিজের পথ প্রশস্ত করা, দম্ভভরে হাঁটা ইত্যাদি। এসবই বর্জনীয়। কারণ আল্লাহ তাআলা এসব শ্রেণিকে সম্বোধন করে বলেছেন, ‘ভূপৃষ্ঠে দম্ভভরে চোলো না। তুমি তো পদভারে ভূমিকে বিদীর্ণ করে ফেলতে পারবে না এবং উচ্চতায় পাহাড় পর্যন্তও পৌঁছতে পারবে না। ’ (সুরা : বনি ইসরাঈল, আয়াত : ৩৭)

মহান আল্লাহ আমাদের রাস্তার হকসমূহ মেনে চলার তৌফিক দান করুন।

 

এই রকম আরও টপিক