মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানি জনসন অ্যান্ড জনসনের পণ্য ব্যবহারের কারণে ওভারিয়ান ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগকারী ২২ নারীকে ৪৭০ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত।
জনসনের ট্যালকম পাউডার ব্যবহারে ওভারিয়ান ক্যান্সার শরীরে বাসা বেঁধেছে; এমন অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ওই ২২ নারীকে প্রাথমিকভাবে ৫৫০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে জনসন অ্যান্ড জনসনকে নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির মিসৌরি অঙ্গরাজ্যের আদালত। এছাড়াও আরো ৪ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার দিতে হবে শাস্তিমূলক ক্ষতিপূরণ হিসেবে।
প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগে দায়ের হওয়া আরও অন্তত ৯ হাজার অভিযোগ আদালতে ঝুলছে। এর মধ্যে শিশুদের জন্য জনসনের তৈরি পাউডারের বিরুদ্ধেও মামলা রয়েছে। জনসন অ্যান্ড জনসন বলছে, তারা আদালতের এই রায়ে গভীরভাবে হতাশ এবং রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার পরিকল্পনা করছে।
ট্যালকম পাউডার তৈরির প্রধান উপাদান ট্যালক, যার রাসায়নিক নাম ম্যাগনেসিয়াম সিলিকেট; এটি প্রকৃতিতে প্রাপ্ত সবচেয়ে নরম খনিজ পদার্থ। উইকিপিডিয়া বলছে, এতে রয়েছে অ্যাসবেস্টস; অ্যাসবেস্টস হল প্রাকৃতিকভাবে প্রাপ্ত ছয় সিলিকেট খনিজের একটি সেট। যা তার সুবিধাজনক প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যর কারণে বাণিজিকভাবে ব্যবহৃত হয়। রেশম ও পশমের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে এই খনিজের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের অনেক মিল দেখা যায়।
-------------------------------------------------------- আরও পড়ুন :কাশ্মীরে হামলায় দুই ভারতীয় সৈন্য নিহত
--------------------------------------------------------
অ্যাসবেস্টস আঁশের দীর্ঘায়িত শ্বসন ফুসফুসের ক্যান্সার, মেসোথেলিয়মা, এবং অ্যাসবেস্টস এর মত গুরুতর অসুস্থতার সৃষ্টি করতে পারে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন অ্যাসবেস্টসের সকল প্রকার নিষ্কাশন, উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে।
আদালতের কাছে নারীদের অভিযোগের পক্ষে তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করে যুক্তরাজ্যভিত্তিক ওভারিয়ান ক্যান্সারবিষয়ক দাতব্য সংস্থা ওভাকাম। সংস্থাটি বলছে, নারীদের যৌনাঙ্গে ট্যালকম পাউডার ব্যবহারের কারণে ওভারিয়ান ক্যান্সার তৈরির ঝুঁকি রয়েছে বলে তারা বেশ কয়েক বছর উদ্বেগ প্রকাশ করে এসেছে। তবে তাদের এই শঙ্কা গবেষণায় প্রমাণিত হয়নি এবং এ বিষয়ে আরো গবেষণা প্রয়োজন।
জনসন এ অভিযোগে এখন পর্যন্ত যতগুলো মামলার মুখোমুখি হয়েছে তার মধ্যে এবারই সর্বোচ্চ পরিমাণ ক্ষতিপূরণের নির্দেশ পেলো।
এর আগে গত বছর একই ধরনের অভিযোগকারী এক নারীকে চারশ ১৭ মিলিয়ন (৪১ কোটি ৭০ লাখ) ডলার ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয় মার্কিন এই বহুজাতিক কোম্পানিকে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার একটি আদালত এ নির্দেশ দেন। তবে বেশ কয়েটি মামলায় আপিলের রায় জনসনের পক্ষে যায়।
(নিউজ টোয়েন্টিফোর/কামরুল)