গাড়িচাপায় মৃত্যু হয় ছোট ভাইয়ের। ২ বছরের শিশুটির ময়নাতদন্ত হয় হাসপাতালে। মরদেহ নিয়ে যাওয়ার মত অর্থ ছিলো না ১০ বছরের বড় ভাইয়ের। তাই উপায় না দেখে ছোট ভাইয়ের মরেদেহ কোলে নিয়ে যাত্রা শুরু করে বড় ভাই । শনিবার (২৭ আগস্ট) ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের উত্তরপ্রদেশের বাগপতের জেলা হাসপাতালে।
ইন্ডিয়া টিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গাড়ির নিচে পিষ্ট হয়ে মৃত্যুর পর গত শনিবার উত্তরপ্রদেশের বাগপতের জেলা হাসপাতালে ময়নাতদন্ত হয় কালা নামে ২ বছর বয়সী ওই শিশুটির। ময়নাতদন্তের পরে মরদেহ বাড়ি নেয়ার জন্য বহু অনুরোধ করেও কোনো গাড়ির ব্যবস্থা করতে পারেনি মৃতের পরিবার।
বাধ্য হয়ে কালার মরদেহ হাতে তুলে হাঁটতে শুরু করে তার ১০ বছর বয়সী বড়ভাই। পেছনে হাঁটছিলেন তার বাবাও। একপর্যায়ে স্থানীয়রা ভিডিও করা শুরু করলে এবং কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি নিয়ে সতর্ক করা হলে তাদেরকে একটি গাড়ির ব্যবস্থা করে দেয়া হয়। মরদেহ কোলে নিয়ে হাঁটার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নিহত শিশু কালার বাবার নাম প্রবীণ কুমার। তিনি বাগপতের একজন দিনমজুর। বাগপতের জেলা হাসপাতাল থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে শামলি জেলার লিলনখেডিতে নিজেদের পারিবারিক গ্রামে যাওয়ার জন্যই তারা একটি গাড়ি খুঁজছিলেন। তবে সেটি ভাড়া করার জন্য এক হাজার রুপির প্রয়োজন ছিল, যা প্রবীণ কুমারের কাছে ছিল না।
যে কিশোরটি নিজের কোলে সাদা কাপড়ে মোড়া শিশুটিকে নিয়ে হাঁটছিল সেই শিশুটি তার ভাই। বয়স মাত্র দু’বছর। শিশুটি কান্না করায় সৎমা তাকে রাস্তায় চলন্ত গাড়ির নিচে ছুঁড়ে ফেলেন। এতে চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় শিশুটির। খবর পেয়ে পুলিশ এসে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে বাগপত হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। ছেলের মৃত্যুতে শোকে পাথর প্রবীণ কুমার তার বছর দশেকের ছেলে সাগরকে নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন। সন্তানের ময়নাতদন্ত হওয়ার পর মরদেহ তুলে দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
গাড়ি ভাড়ার টাকা না থাকায় বাধ্য হয়েই সন্তানের মরদেহ নিয়ে বাড়ির পথে হাঁটতে শুরু করেন তারা। কিছু দূর যাওয়ার পর সন্তানের দেহ ছেলে সাগরের কোলে তুলে দেন প্রবীণ।
এক কিশোরকে শিশুর মরদেহ কোলে নিয়ে হাঁটতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। হাসপাতালের সাথে যোগাযোগ করা হয়। এরপরই গাড়ির ব্যবস্থা হয়।
news24bd.tv/আলী