চাঁপাইনবাবগঞ্জে দেশি গরুতেই জমে উঠেছে হাট

দাম কিছুটা বেশি হলেও এবার শেষ মুহূর্তে দেশি গরুতেই চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার হাটগুলো জমে উঠেছে। বেশ কিছুদিন ধরে জেলার বিট-খাটালগুলো দিয়ে ভারতীয় গরু না আসায় জেলার খামারে লালন-পালন করা গরুগুলোই হাটে বেচা-কেনা হচ্ছে। তবে দাম কিছুটা বেশি। তারপরও দেশি গরু কিনে সন্তুষ্টির ঠেকুর তুলছেন ক্রেতারা। আর বিক্রেতারাও বেশি লাভ করতে পেরে খুশি।

জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে আনা গরু মূলত বিক্রি হয় জেলার অন্যতম পশুহাট শিবগঞ্জ উপজেলার তর্তিপুরে, সদর উপজেলার বটতলাহাটে এবং নাচোল উপজেলার সোনাইচন্ডি হাটে।

তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, জেলার অধিকাংশ বিট-খাটালগুলো প্রকৃত মালিকের দখলে না থাকার সুযোগ নিয়ে একটি সিন্ডিকেট প্রতিজোড়া গরুতে ১০ থেকে ১১হাজার টাকা চাঁদা আদায় করছিল। এতে গরুর দাম বেড়ে যাওয়ায় এবং লাভ কম হওয়ায় গরু ব্যবসায়ীরা ভারত থেকে গরু আনা প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে। পাশাপশি গরুর সঙ্গে অস্ত্র আসছে আশঙ্কায় বিজিবি সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ার ফলে গবাদীপশুর বিট খাটালগুলো বন্ধ। সেই সঙ্গে সীমান্তে বিএসএফ ও বিজিবির কড়াকড়ির কারণে এখন ভারত থেকে গরু আসছে না।

তবে ভারত থেকে গরু আসা বন্ধ হলেও জেলার বাজারে পশু সংকট হবে না বলে জানান জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: আনন্দ কুমার অধিকারী।

তিনি জানান, জেলায় এবার কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ১লাখ ৬০ হাজার। কিন্তু জেলার ৫ উপজেলায় ৫হাজার ৮৭৯ টি খামারে ৭৮ হাজার ৯৮৭ টি গবাদিপশু প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া পারিবারিকভাবে পালন করা হচ্ছে বাকি গবাদিপশু। তাই এবার ভারত থেকে গরু না আসলেও এর তেমন প্রভাব পড়বে না, কিন্তু দাম হয়তো কিছুটা বেশি।

এদিকে জেলার পশুহাটগুলো ঘুরে দেখা গেছে, গতবারের চেয়ে এবার দেড়গুণ থেকে দ্বিগুণ বেশি দামে গরু বিক্রি হচ্ছে। গতবার যে মাঝারি আকারের গরু ৩৫ থেকে ৪০হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে, তা এবার ৪৫ থেকে ৫০হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর বড় গরু বিক্রি হচ্ছে ৮০হাজার থেকে এক লাখ টাকায়। কিন্তু গতবার গরুগুলোর দাম ছিল ৭০ থেকে ৮০হাজার টাকা। ফলে ক্রেতারা অসন্তোষ প্রকাশ করছে। তবে ভারতীয় গরু না আসা প্রসঙ্গে ভারতীয় গবাদিপশু আমদানি ও বিট সেশন, বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুস সামাদ খান জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার বিট-খাটালগুলোর বৈধ মালিকানা না থাকায় অবৈধ দখলদাররা অতিরিক্ত চাঁদাবাজি করছে। ফলে ভারতের গরু ব্যবসায়ীরা আস্থা রাখতে পারছে না। তাই তারা সীমান্ত পথে গরু না দেওয়ায় এই সংকট সৃষ্টি হয়েছে।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/রফিকুল/তৌহিদ)