আগামীতেও এই সম্পর্ক অটুট থাকবে, বিজয় দিবসে ভারতের বার্তা

৫২তম বিজয় দিবস উদযাপন করছে বাংলাদেশ। এই শুভক্ষণে সরকার ও দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রতিবেশী দেশ ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শংকর। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের জোরদার সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে তিনি জানিয়েছেন, আগামীতেও এই সম্পর্ক অটুট থাকবে।

শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) জয়শংকর এক টুইট বার্তায় বলেন, অতীতে আমাদের অভিন্ন আত্মত্যাগ এবং ভবিষ্যতের দৃষ্টিভঙ্গি ভারত-বাংলাদেশ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক জোরদারে অব্যাহত ভূমিকা রাখবে। বার্তায় তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন, বাংলাদেশ সরকার ও জনগণকে বিজয়ের শুভেচ্ছা জানান।

এদিকে বিজয় দিবসে ৫১ বছরে বাংলাদেশের নানা অর্জনের কথা তুলে ধরেছে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো। কলকাতাভিত্তিক বাংলা সংবাদপত্র আনন্দবাজার পত্রিকা তাদের সম্পাদকীয় পাতায় একটি মতামত প্রকাশ করেছে। সেখানে শুরুতেই লেখা হয়েছে- যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারের বয়স একশ বছরের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে। সুস্থ থাকলে তিনি নিশ্চয় গভীর আত্মগ্লানি বোধ করতেন। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের পর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানকে একটি  নতুন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে দেখে পঞ্চাশ বছর আগে তিনি উপহাস করে বাংলাদেশকে বলেছিলেন: ‘আ বটমলেস বাস্কেট কেস’। অথচ আজ, একান্ন বছরের স্বাধীন জীবন পার করে বাংলাদেশ যেখানে এসে দাঁড়িয়েছে, তাতে পৃথিবীতে একটি বিস্ময়কর দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে বললে অত্যুক্তি হয় না। ’

আনন্দবাজার লিখেছে, ‘বাইরের এবং ভেতরের নানা গভীর সামাজিক ও রাজনৈতিক সংকট, অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ – সবকিছু মোকাবিলা করে আজ বিভিন্ন উন্নয়ন সূচকে বাংলাদেশের যে সাফল্যময় অবস্থান, বহু উন্নয়নশীল দেশকে তা আত্মজিজ্ঞাসার আবর্তে নিক্ষেপ করতে পারে। গত তিন দশকে বিশ্বে সবচেয়ে স্থিতিশীল উন্নয়ন-গতিরেখা ধরে এগিয়েছে যেসব দেশ—বাংলাদেশ তাদের মধ্যে প্রথম দিকেই। ’

আনন্দবাজার আরও লিখেছে, ‘রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের আঁচ বাংলাদেশের অর্থব্যবস্থায় লেগেছে ঠিকই, তবে বিশ্ব অর্থনীতির প্রেক্ষিতে সেটিকে অস্বাভাবিক বলা চলে না। কিসিঞ্জার যখন মন্তব্যটি করেছিলেন, তার সামনে উপস্থিত পরিস্থিতির ভিত্তিতে। কারণ, তখন সদ্য স্বাধীন হওয়া বাংলাদেশ আফ্রিকার দরিদ্রতম দেশ চাদ, রুয়ান্ডা, বুরুন্ডির সঙ্গে এক কাতারেই ছিল। আর এখন মাথাপিছু আয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ভারতকে ছাড়িয়ে গিয়েছে। দারিদ্র্য কমেছে বিপুল হারে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ২০২৬ সালের মধ্যে নিম্ন হারের উন্নয়নশীল দেশসমূহের তালিকা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পথেই এগোচ্ছে বাংলাদেশ। ’

১৯৭১ সালের এই গৌরবময় দিনে নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ত্রিশ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ এবং দুই লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশের বিজয় সূচিত হয়। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয় এবং স্বাধীন দেশ হিসেবে বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। জাতি নানা আয়োজনের মধ্য দিয়েছে ৫২তম বিজয় দিবস পালন করছে।

news24bd.tv/আলী