গ্যাসের নতুন দাম তুলনামূলক অনেক বেশি: বিটিএমএ

নির্বাহী আদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও শিল্প-কারখানায় ব্যবহৃত গ্যাসের দাম বাড়াল সরকার। শিল্প মালিকরা বলছেন, নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ হলেও এই দাম অযৌক্তিক। এটা চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ তাদের।

বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিল অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, এ দামে গ্যাস কিনে শিল্প টিকিয়ে রাখা কঠিন হবে অনেকের জন্য। তিনি বলেন, এর ফলে দেশের শিল্প কারখানাগুলো হুমকির মুখে পড়বে। দেশের অন্যান্য শিল্পগুলোর ভর্তুকি এ খাতের ওপর চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ তার।

অন্যদিকে, ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাব এর সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, কোনো যাচাই বাছাই ছাড়া নির্বাহী আদেশে জ্বালানীর দাম বৃদ্ধি গ্রহণযোগ্য নয়।

ক্যাবের সাথে সুর মেলালেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডি'র সিনিয়র ফেলো ড. তৌফিকুল ইসলাম খান। তার মতে, একবারে এত দাম না বাড়িয়ে ধাপে ধাপে বাড়ালে সবার ওপরই চাপ কম হতো।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানী খাতে ভর্তুকি কমিয়ে আনতে বেশ কিছুদিন ধরেই সরকারকে পরামর্শ দিয়ে আসছিলো আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল, বিশ্ব ব্যাংকসহ উন্নয়ন অংশীজনরা। সেই পরামর্শ মেনে গেলো সপ্তাহেই গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দেয় সরকার।

এর মধ্যে বিদ্যুতে বেড়েছে সর্বোচ্চ ১৮০ শতাংশ। অন্যদিকে সব ধরনের শিল্প উৎপাদন ও বাণিজ্যিক ব্যবহারে দ্বিগুণের বেশি দাম বৃদ্ধি করে, একই হার প্রতি ঘনমিটার ৩০ টাকা নির্ধারণ করেছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ।

বুধবার (১৮ জানুয়ারি) প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সবচেয়ে বেশি ১৮০ শতাংশ দাম বাড়ছে বিদ্যুৎ উৎপাদনে। এখন থেকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য প্রতি ঘনমিটার গ্যাস কিনতে হবে ১৪ টাকায়। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে বেড়েছে ১৭৮ শতাংশ, বৃহৎ শিল্পে ১৫০, ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ৮৮ শতাংশ এবং বাণিজ্যিক বিদ্যুতের দাম বাড়ছে ১৩ শতাংশ। এমনকি বড়ো-মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প এবং বাণিজ্যিক ব্যবহারে একই হারে প্রতি ঘনমিটার ৩০ টাকা দরে কিনতে হবে গ্যাস।

তবে পরিবহন খাতে ব্যবহৃত সিএনজি এবং বাসাবাড়ির গ্যাসের দাম বাড়ায়নি সরকার। অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে সার ও চা বাগানে ব্যবহৃত গ্যাসের দামও।

হিসেব বলছে, দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৫০ শতাংশের বেশি আসে গ্যাসচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে। তাই গ্যাসের দাম বাড়ায় আরেক দফা বাড়তে পারে বিদ্যুতের দাম, এমন আশংকা বিশ্লেষকদের।

news24bd.tv/FA