‘আল্লাহ দিচ্ছেন, আমি নিচ্ছি’

পাকিস্তানের জনসংখ্যা এরই মধ্যে ২০ কোটি ছাড়িয়েছে, যেটা দেশটির একটি জাতীয় সমস্যায় পরিণত হয়েছে।

তবে এসব নিয়ে মাথাব্যথা নেই এক ব্যক্তির। তিনি পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বান্নু শহরের বাসিন্দা গুলজার হোসেন। ৩৮ সন্তানের বাবা হয়েও আল্লাহর ওপর তার আস্থা ও ভরসা অটুট। তিনি আরও সন্তান চান।  

তার ভাষ্য, ‘আল্লাহ-ই ব্যবস্থা করবেন। রিজিকের ব্যবস্থা তার কাছেই রয়েছে’।

দক্ষিণ এশিয়ায় শিশু জন্মের হারে শীর্ষে পাকিস্তান। দেশটির প্রত্যেক বিবাহিতা ৩ সন্তানের জন্ম দেন। বিশ্ব ব্যাংক ও সরকারের প্রাথমিক তথ্য থেকে অনুমান- এই জন্মের হার অপরিবর্তিত রয়েছে।  

তবে ৫৭ বছরের গুলজার তার পরিবারের সদস্য সংখ্যা বাড়াতে আরও উদগ্রীব। তার স্ত্রী ৩জন। তিন স্ত্রীর ৩৮টি বাচ্চার পরেও তৃতীয় স্ত্রী সন্তান সম্ভবা।

৩৮জন ছেলে-মেয়ের সম্পর্কে গুলজার বলেন, ‘আল্লাহ গোটা দুনিয়া মানুষের জন্য বানিয়েছেন। কেন আমি বাচ্চা হওয়ার এই প্রক্রিয়া থামাবো? ইসলামে পরিবার পরিকল্পনা করতে বারণ করা হয়েছে। আমরা আরও শক্তিশালী হতে চাই। '

২৩টি বাচ্চাকে পাশে বসিয়ে তার রসিক মন্তব্য, ‌‘ওদের ক্রিকেট খেলার জন্য বন্ধুদের দরকার পড়বে না’।

তার ভাই মস্তান ওয়াজির খানও কম যাননি। তার ২২টি ছেলে-মেয়ে। তিনিও ৩টি বিবাহ করেছেন। ওয়াজিরের কথায়, ‘আমার নাতি-নাতনির সংখ্যা অনেক। সেটা বলতে পারবো না। আল্লাহ তো বলেছেন, তিনিই সব কিছু দেবেন। তাঁকে বিশ্বাস করি আমি’।  

এদিকে, পাকিস্তানের সর্ববৃহৎ প্রদেশ বেলুচিস্তানের বাসিন্দা জান মোহাম্মদেরও ছেলে-মেয়ের সংখ্যা ৩৮! তিনি এখন ১শটি বাচ্চার বাবা হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। এজন্য তিনি ৪র্থ বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে পছন্দের মেয়ে পাচ্ছেন না। পেলেই বিয়ে করবেন।  

জান মোহাম্মদ বলেন, ‘মুসলিমদের জনসংখ্যা বাড়া উচিত। আমার ইচ্ছে ‘সেঞ্চুরি’ হাঁকানো।

পাকিস্তানে বহুবিবাহ আইনসিদ্ধ বিষয়। ইসলামের রীতি অনুসারে ৪টি বিয়ে করতেই পারেন একজন পুরুষ, যদি তার সক্ষমতা থাকে। তবে তেমন ঘটনা খুব কম।  

পাকিস্তানের অর্থনীতিবিদরা বলছেন, অর্থনীতি কঠিন অবস্থার মধ্যে জনসংখ্যা এভাবে বাড়তে থাকলে দুর্ভোগ বাড়বে। তাই জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের পরামর্শ দিচ্ছেন কিছু তারা।  

তবে এসব মানতে নারাজ গুলজার হোসেন, মস্তান ওয়াজির খান ও জান মোহাম্মদ। তারা জানাচ্ছেন, ‘আল্লাহ্ই ব্যবস্থা করবেন, বেশি সন্তান কেন দারিদ্রতার কারণ হবে? এর মাধ্যমে বরং আরও তাড়াতাড়ি ধনী হওয়া যায়’।

সূত্র: দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট, স্টিমিট অরিন▐ NEWS24