<p>চ্যাম্পিয়নস লিগ</p>

সিটির ৭-এ হাল্যান্ডের ৫

<p>লাইপজিগকে বিধ্বস্ত করে কোয়ার্টারে ম্যানচেস্টার সিটি</p>

চ্যাম্পিয়নস লিগে লাইপজিগের বিপক্ষে শেষ ষোলোর প্রথম লেগ শেষে ম্যানচেস্টার সিটি কোচ পেপ গার্দিওলা মজা করেই বলেছিলেন, ইতিহাদে পরের লেগে ৯ স্ট্রাইকার নামিয়ে দিতে পারেন তিনি। লাইপজিগের মাঠে ১-১ গোলে ড্রয়ে সিটিজেনরা যখন হতাশ, তখন এ রসিকতা করেন তিনি।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে ইতিহাদে ফিরতে লেগে লাইপজিগের বিপক্ষে মোটেও ৯ স্ট্রাইকার নামাননি গার্দিওলা। তবে আর্লিং হাল্যান্ড থাকতে তার প্রয়োজনই বা কী! এই নরওয়েজিয়ান তারকা যে একাই করলেন পাঁচ গোল! হাল্যান্ডের গোল উৎসব করার দিন লাইপজিগকে ৭-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে সিটিজেনরা। ৮-১ গোলের অগ্রগামিতায় কেটেছে কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট।

বরুসিয়া ডর্টমুন্ড থেকে ম্যানচেস্টার সিটিতে আসার এসেই গোলের পসরা সাজিয়ে বসেন হাল্যান্ড। তবে মৌসুমের মাঝপথে একটু ছন্দহীনতায় ভুগছিলেন তিনি। সেটা তিনি কাটালেন গতকাল লাইপজিগকে গোলের সাগরে ভাসিয়ে। মৌসুমের পঞ্চম হ্যাটট্রিক তুলে নেওয়ার দিন দুটি মধুর ইতিহাসও গড়েছেন তিনি। একটি লিওনেল মেসি ও লুইজ আদ্রিয়ানোর পাশে বসে। অপরটি প্রায় এক শ বছরের পুরনো রেকর্ড ভেঙে।

রেকর্ডের রাতে হাল্যান্ডের গোল উৎসব শুরু হয় ২২ মিনিটে। পেনাল্টি থেকে গোল করেন তিনি। সিটির আক্রমণে বেসামাল হয়ে ডি-বক্সের ভেতর হ্যান্ডবল করে স্বাগতিকদের পেনাল্টি উপহার দিয়েছিলেন বেনজামিন হেনরিখস। মিনিটখানেক পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন হাল্যান্ড। ডি-বক্সের বাইরে থেকে কেভিন ডি ব্রুইনের বুলেট শট বারে লেগে ফিরে আসার পর ফিরতি বলে হেড দিয়ে বল জালে জড়ান তিনি।

প্রথমার্ধেই বল বাসায় নিয়ে যাওয়ার বন্দোবস্ত করে ফেলেন হাল্যান্ড। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে তিনি করেন হ্যাটট্রিক। এবারও তার গোলে অবদান ছিল ডি ব্রুইনের। তার কর্নার থেকে জোরালো হেডে গোল প্রায় পেয়ে যাচ্ছিলেন ডিফেন্ডার রুবেন ডিয়াজ। কিন্তু ডিয়াজের হেড গোললাইন থেকে ফেরার পর দৌড়ে এসে বলকে জালের দিকে ঠেলে দেন হাল্যান্ড।

বিরতির পর আরও দুটি গোল করেন হাল্যান্ড। তবে দ্বিতীয়ার্ধে গোল উৎসবে আগে নাম লেখান ইলকায় গুনদোয়ান। জ্যাক গ্রিলিশের সহায়তায় এই জার্মান মিডফিল্ডার স্কোরশিটে তোলেন নাম। এরপরই এক শ বছরের পুরনো ইতিহাস সামনে আনেন হাল্যান্ড। ৫৩ মিনিটে নিজের চতুর্থ গোলটি করেন তিনি। এটি ছিল মৌসুমে তার ৩৮তম গোল। প্রায় এক শ বছর আগে সবশেষ সিটির হয়ে এতো গোল করেছিলেন কেউ। ১৯২৮-২৯ মৌসুমে সিটির হয়ে এই রেকর্ড করেছিলেন টমি জনসন।

তবে গোলের নেশায় পেয়ে বসা হাল্যান্ড একটু পরেই রেকর্ডটাকে এককভাবে নিজের করে নেন। ৫৭ মিনিটে তিনি করেন পঞ্চম গোলে, যে গোলে মেসি-আদ্রিয়ানোর পাশে বসেন এই স্ট্রাইকার। চ্যাম্পিয়নস লিগ ইতিহাসে এক ম্যাচে ৫ গোল করা তৃতীয় খেলোয়াড় এখন হাল্যান্ড। এর আগে ২০১২ সাালে বেয়ার লেভারকুসেনের বিপক্ষে বার্সেলোনার হয়ে লিওনেল মেসি এবং ২০১৪ সালে বরিসভের বিপক্ষে শাখতার দোনেৎস্কের হয়ে এই কীর্তি গড়েছিলেন লুইজ আদ্রিয়ানো।  

দারুণ দুটি রেকর্ডের পর হাল্যান্ডকে অবশ্য তুলে নেন গার্দিওলা। তার পরিবর্তে ৬৩ মিনিটে মাঠে নামানো হয় হুলিয়ান আলভারেজকে। বদলি নেমে আলভারেজ গোল না পেলেও, পুরো ম্যাচে দুর্দান্ত খেলা ডি ব্রুইনা ইনজুরি সময়ে লাইপজিগের কফিনে ঠুকে দেন শেষ পেরেকটি। ফলে ৭-০ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে সিটিজেনরা। চ্যাম্পিয়নস লিগ ইতিহাসে যা ইংলিশ ক্লাবটির যৌথভাবে সবচেয়ে বড় ব্যবধানের জয়ও বটে।   

সিটির গোল উৎসবের রাতে পর্তুগিজ ক্লাব এফসি পোর্তোর সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেও শেষ আটের টিকিট নিশ্চিত করেছে ইন্টার মিলান। প্রথম লেগে নিজেদের মাঠে ১-০ গোলে জিতেছিল ইন্টার। পরের লেগে ঘরের মাঠে চেষ্টা করেও পারেনি পোর্তো। কাছাকাছি গিয়েও ফিরতে হয়েছে খালি হাতে। শেষ পর্যন্ত কেউ গোল না পেলে দুই লেগ মিলিয়ে ১-০ গোলে জিতে কোয়ার্টার ফাইনালে গেছে ইন্টার।

news24bd.tv/SHS