প্রগতিশীল আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ছিলেন পঙ্কজ ভট্টাচার্য

প্রগতিশীল আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, গণমানুষের মুক্তি, স্বৈরচার বিরোধী, সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী, সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী আন্দোলনে দেশবরেণ্য ত্যাগী রাজনীতিবিদ, ঐক্য ন্যাপের সভাপতি জননেতা পঙ্কজ ভট্টাচার্য গতকাল রোববার রাত ১২ টা ২০ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হলোছিলো ৮৪ বছর।

১৯৫২ সালে ২২ শে ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম সরকারী কলেজের হাই স্কুল থেকে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি মিছিল। বের করেন। সেই থেকে তিনি আমৃত্যু মিছিলে, সংগ্রামে, মুক্তিযুদ্ধে ও সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নিবেদিত ছিলেন। স্কুল জীবন শেষে ১৯৬০ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। তখন তিনি বৈরী বৈষম্যমূলক সামরিক শাসনের প্রতিবাদে সোচ্চার হন।

১৯৬২ সালে শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। ১৯৬৩ সালে ছাত্র ইউনিয়নের সহসভাপতি নির্বাচিত হন এবং ১৯৬৩-৬৪ সালে ছাত্র ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৬ সালে পঙ্কজ ভট্টাচার্য্যের নেতৃত্বে ১৮ জন ছাত্রনেতা ন্যাপে যোগদান করেন। ১৯৬৭ সালে স্বৈরাচারী আয়ুইব খান তাঁর বিরুদ্ধে স্বাধীন বাংলার ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় তিনি ১৯ দিন হাজত বাস করেন।  

১৯৬৯ সালের গণঅভূত্থান, ১৯৭০ এর নির্বাচন ও ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে অন্যান্য ভূমিকা পালন করেছিলেন তিনি। মাত্র ৩৩ বছর বয়সে ১৯৭২ সালের এপ্রিলে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯০ সালে ৩ জোটের রূপরেখা তৈরীতেও তিনি মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। সবশেষ তিনি ঐক্য ন্যাপের সভাপতি ছিলেন।

তিনি সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন, সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গিবাদ বিরোধী মঞ্চসহ বিভিন্ন সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। আদর্শিক, অসাম্প্রদায়িক, ত্যাগ নিষ্ঠা, সততার রাজনীতিতে তাঁর অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

কর্মসূচি : ঐক্য ন্যাপের দপ্তর সম্পাদক প্রণব কুমার সাহা প্রেরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের জন্য পঙ্কজ ভট্টাচার্য্যের মরদেহ আগামীকাল ২৫ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকাল ৪টা থেকে ৬টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে রাখা হবে। শ্রদ্ধা জ্ঞাপন শেষে তাঁর মরদেহ শেষকৃত অনুষ্ঠানের জন্য পোস্তগোলা শ্মশানে নেয়া হবে।