কঠিন প্রতিশোধের হুমকি ইরানের

সামরিক বাহিনীর কুচকাওয়াজে ভয়াবহ হামলার জবাব দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইরানের রিভোল্যুশনারি গার্ড। ওই হামলায় চার হামলাকারীসহ ২৯ জন নিহত এবং আরও ৭০ জন আহত হয়েছে।  

ইরানের এই বিশেষ বাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, শনিবারের ওই হামলার পেছনে দায়ীদের ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে। ক্ষমার অযোগ্য এই অপরাধের জন্য নিকট ভবিষ্যতে তাদের ওপর ভয়াবহ প্রতিশোধ নেয়া হবে।

এই হামলার জন্য দু’টি উপসাগরীয় দেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেছে ইরান। ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে আরবের বিচ্ছিন্নতাবাদী দল ‘আল আহভাজিয়া’ সশস্ত্র গ্রুপ। ওই দলটিকে দুই উপসাগরীয় দেশ এবং যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন দিয়েছে বলে অভিযোগ এনেছে ইরান।

এই হামলার বিরুদ্ধে কঠিন প্রতিশোধের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। অপরদিকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আল খামেনি এই হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরানে তাদের মিত্রদের সম্পৃক্ততার অভিযোগ এনেছেন।

দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ বলেন, আঞ্চলিক সন্ত্রাসবাদে সমর্থনকারীরাই এই হামলার জন্য দায়ী। একই সঙ্গে সন্ত্রাসবাদে সমর্থনকারী প্রভু রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রও এজন্য দায়ী বলে উল্লেখ করেন তিনি।

উপসাগরীয় দেশগুলোর নাম সরাসরি উল্লেখ না করলেও সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ইসরায়েলকেই দায়ী করা হচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ এই দেশগুলোর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই ইরানের বৈরী সম্পর্ক বিরাজ করছে।

ইরানের সেনা মুখপাত্র আবুল ফজল শেকারচি বলেন, এই সন্ত্রাসীদের প্রশিক্ষণ এবং পরিচালনা করছে দুই উপসাগরীয় দেশ। এরা জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট বা অন্য কোন জঙ্গি সংগঠন নয়। তারা আমেরিকার সঙ্গে সম্পৃক্ত।

তবে ইরানের এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে আরব আমিরাত। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইরানে সন্ত্রাসী হামলার পেছনে কোনো বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেয়ার দায় অস্বীকার করেছে তারা।

এদিকে, ইরান সরকারকে দায়ী করে ওই হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন দূত নিকি হ্যালি বলেন, দেশটিতে দীর্ঘদিন ধরেই হাসান রুহানির সরকারের কাছে দেশের জনগণ নিপীড়নের শিকার হয়েছেন বলেই এমন ভয়াবহ হামলার ঘটনা ঘটেছে।

১৯৮০ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত ইরানের ওপর ইরাকের চাপিয়ে দেওয়া আট বছরের যুদ্ধের বার্ষিকী উপলক্ষ্যে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে এখন প্রতিরক্ষা সপ্তাহ চলছে। এ উপলক্ষ্যেই সপ্তাহব্যাপী নানা কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। প্রতিরক্ষা সপ্তাহ জুড়ে সামরিক খাতে ইরানের সাম্প্রতিক নানা সাফল্য প্রদর্শন করা হবে।

উল্লেখ্য, স্থানীয় সময় শনিবার সকালে আহভাজ শহরের ওই সামরিক মহড়ায় হামলা চালানো হয়। সেনা সদস্যরা সামরিক মহড়া শুরু করার পর কাছাকাছি একটি পার্ক থেকে সেনা বাহিনীর ইউনিফর্ম পরিহিত ৪ বন্দুকধারী এলোপাথাড়ি গুলি ছোড়ে। সূত্র: ইসলামিক রিপাবলিক নিউজ এজেন্সি, আল জাজিরা  অরিন▐ NEWS24