নাটোরে এমপি শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

তিন বছর আগে এক সালিশে নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুলের মারধরে এক ব্যক্তির মৃত্যুর অভিযোগ এনে আদালতে মামলা হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার মামলার বাদী মৃত আইয়ুব আলীর স্ত্রী শাহনাজ পারভীন (৫০) নাটোরে বাগাতিপাড়া আমলী আদালতে বকুলসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেন। পরে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবু সাঈদ মামলটি গ্রহণ করে পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ১৫ জুন দিন ধার্য্য করেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, মামলার প্রধান আসামি নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলামের নির্দেশে বাগাতিপাড়া উপজেলার অপর চার বাসিন্দা মহিদুল ইসলাম (৩৬) মিজানুর রহমান (৩৬) মাইনুল ইসলাম (৩২) ও আব্দুল মজিদ (৫৫) বাদীর স্বামীকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যান।

ওই দিন সকাল অনুমান ১০টার দিকে অন্যান্য আসামিরা তার স্বামীকে প্রধান আসামি শহিদুল ইসলামের বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে তাকে দেনাদার সাব্যস্ত করে শহিদুল ইসলাম তার কাছ থেকে লিখিত কাগজপত্র করে নেওয়ার হুকুম দেন। বাদীর স্বামী তাতে আপত্তি করলে সংসদ সদস্য তাকে মারপিট করে বস্তায় ভরে নদীতে ফেলে দেওয়ার হুকুম দেন। এ সময় অন্যান্য আসামিরা তাকে মারধর করেন।

এতে বাদীর স্বামী জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে তাকে ভ্যানে করে বাগাতিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।   এ ঘটনায় নিহতের ছেলে সোহাগ আলী বাদী হয়ে বাগাতিপাড়া থানায় লিখিত এজাহার জমা দিলেও অদ্যাবধি তা মামলা হিসাবে নেওয়া হয়নি।

পুলিশ নিহতের সুরতহাল তৈরি করে এবং নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করে মৃতদেহ দাফনের অনুমতি দেয়। তবে এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়নি বা বিচার শুরু করা হয়নি।

বাদী লিখিত এজাহারে জানান, প্রধান আসামি একজন সংসদ সদস্য হওয়ায় তার চাপে এ ব্যাপারে এতদিন আইনি পদক্ষেপ নিতে পারেননি। যে কারণে বিলম্বে মামলা করছেন। এরপর আদালত লিখিত অভিযোগটি মামলা হিসাবে গ্রহণ করেন এবং আদেশের জন্য ১৬ জুন তারিখ নির্ধারণ করেন।

বাদীর আইনজীবী সুফি মো. মমতাজ রায়হান মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আদালত বাদী জবানবন্দি গ্রহণ করেছেন এবং আইনানুগ আদেশ প্রদানের জন্য দিন ধার্য্য করেছেন। আমরা আদেশের জন্য অপেক্ষা করবো।

এ ব্যাপারে মামলার বাদী শাহনাজ আরও জানান, আমার দুই ছেলেকে সরকারী চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন এমপি। দেয়নি বলে মামলা করেছি। দিলে মামলা করতাম না।  

এ ব্যাপারে সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলামের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি জানান, মামলার কথিত ঘটনার সাথে তার কোনো সম্পৃক্ততা নাই। তাছাড়া বিষয়টি বহু পুরাতন ও নিষ্পত্তিকৃত। তিনি রাজনীতি করেন। তার প্রতিপক্ষ রয়েছে। সামনে নির্বাচন। নির্বাচনে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের জন্য তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে অন্যায় ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করছেন। তিনি আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।

news24bd.tv/SHS