ভারতের ধর্ষকগুরু রাম রহিমের ইচ্ছা না থাকলেও কারাগারে তাকে দেখতে গেলেন স্ত্রী হরজিৎ কৌর। এমনকি খাইয়ে এলেন দীপাবলির মিষ্টি। দিয়ে এলেন শীতের পোশাক।
হিন্দুস্তান টাইমস অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ধর্ষণের দায়ে সাজা পাওয়ার ৫০ দিন পর গত সোমবার বিকেলে কারাগারে ভারতের কথিত ধর্মগুরু গুরমিত রাম রহিম সিংয়ের সঙ্গে দেখা করেছেন তাঁর স্ত্রী হরজিৎ কৌর। পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে হরজিৎ রোহতকের সানোরিয়া কারাগারে তাঁর স্বামীর সঙ্গে দেখা করেন। কারাগারে রাম রহিমের সঙ্গে পরিবারের সদস্যরা আধা ঘণ্টা সময় কাটিয়েছেন। এ সময় তাঁরা রাম রহিমকে দীপাবলির মিষ্টি ও শীতের পোশাক দিয়ে গেছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, হরজিৎ কৌরের সঙ্গে ছিলেন তাঁদের ছেলে জসমিত ইনসান, পুত্রবধূ হুসানপ্রীত ইনসান, মেয়ে চরণপ্রীত ও মেয়ে অমরপ্রীতের স্বামী রুহ-ই-মিত। কারাগারে থাকা রাম রহিমের সঙ্গে পরিবারের অন্য সদস্যদের এটা তৃতীয় সাক্ষাৎ হলেও স্ত্রী হরজিতের এটাই প্রথম দেখা।
যদিও রাম রহিম সিং কারাগারে দৃশ্যত স্ত্রী হরজিৎ কৌরের সঙ্গে দেখা করতে চাননি। পালিত কন্যা হানিপ্রীত ইনসানের সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছার কথা তিনি জানিয়েছিলেন অনেকবার। এমনকি হানিকে তার সঙ্গে কারাগারে থাকতে দেওয়ার অনুমতিও চেয়েছিলেন। হানিপ্রীতও বাবার সঙ্গে জেলে থাকতে চেয়েছিলেন। তবে সে সুযোগ মেলেনি তাদের।
টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, কারাগারে যাঁদের সঙ্গে রাম রহিম নিয়মিত দেখা করতে চান, এমন ১০ জনের একটি তালিকা সানোরিয়া কারা কর্তৃপক্ষের হাতে দিয়েছেন রাম রহিম। ওই তালিকায় স্ত্রী হরজিৎ কৌরের নামই নেই। তবে প্রথমদিকেই রয়েছে হানিপ্রীতের নাম। রাম রহিমের দেওয়া তালিকায় তাঁর মা নসিব কৌর, পালিত কন্যা হানিপ্রীত, ছেলে জসমিত ইনসান, পুত্রবধূ হুসানপ্রীত ইনসান, মেয়ে অমরপ্রীত ও চরণপ্রীত, জামাই শান-ই-মিত ও রুহ-ই-মিত, ডেরার ব্যবস্থাপক বিপাসনা এবং দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত দান সিংহের নাম রয়েছে।
কারাগারে দেখা করতে চাওয়া স্বজনদের তালিকায় নাম না থাকা সত্ত্বেও হরজিত কৌরকে কীভাবে রাম রহিমের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হলো—সানোরিয়া কারা তত্ত্বাবধায়ককে কয়েকবার এ প্রশ্ন করা হলেও তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।
গত ২৫ আগস্ট দুই নারী ভক্তকে ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের হওয়া দুটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত করা হয় রাম রহিমকে। এরপর নেওয়া হয় রোহতক শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরের সানোরিয়া কারাগারে। এতে রাম রহিমের সমর্থকেরা পঞ্চকুলা এলাকায় তাণ্ডব শুরু করেন। পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে ৩১ জন নিহত ও ২৫০ জন আহত হন। পরে ২৮ আগস্ট রাম রহিমকে দুটি মামলায় ১০ বছর করে ২০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন সিবিআই আদালত।