শিশু ফারিহাকে ধর্ষণের পরে হত্যা, আলামত নষ্টে অপহরণ নাটক

কক্সবাজারের টেকনাফের হ্নীলায় অপহৃত  ফারিহা খানম জেরিনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। অপহরণ, ধর্ষণ ও হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১৫। হত্যাকারী মোহাম্মদ এরফান (১৭) টেকনাফ হ্নীলা ইউনিয়নের পূর্ব পানখালী এলাকার মুঃ আলী আহমদের ছেলে।

কক্সবাজার র‌্যাবের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও সিনিয়র সহকারী পরিচালক (ল’ এন্ড মিডিয়া) মো. আবু সালাম চৌধুরী গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) সন্ধ্যায় টেকনাফ থানাধীন হ্নীলা ইউনিয়নের পশ্চিম সিকদারপাড়া এলাকা থেকে তৃতীয় শ্রেণির মাদ্রাসা পড়ুয়া শিশু ফারিহা খানম জেরিনকে (০৮) অপহরণ করা হয়। পরে ভিকটিমের মায়ের নিকট ফোন দিয়ে মুক্তিপণ হিসেবে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে এবং মুক্তিপণ না দিলে সকালে মেয়ের লাশ পাবে বলে জানায়।  

অপহরণের খবরটি বেশকিছু সংবাদপত্রে প্রকাশ এবং একই সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত হওয়া মাত্রই র‌্যাবের একাধিক আভিযানিক দল ভিকটিমকে উদ্ধারসহ অপহরণকারীকে গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায় ও অভিযান শুরু করে।  

এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার (২৮ জুলাই) র‌্যাব ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভিকটিমের লাশ উদ্ধার এবং ঘটনার সাথে জড়িত মোহাম্মদ এরফানকে দারুস সুন্নাহ মাদ্রাসা থেকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সে দারুস সুন্নাহ মাদ্রাসার ভাইস প্রিন্সিপাল আলী আহমদের ছেলে। আসামি এবং ভিকটিম  ফারিহা খানম জেরিন ওই মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও দুঃসম্পর্কের মামা-ভাগ্নী। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় ফারিয়া বাড়ির পাশের একটি দোকানে গেলে আসামি এরফান খাবারের প্রলোভন দেখিয়ে সু-কৌশলে দারুস সুন্নাহ মাদ্রাসায় তার বাবার অফিস কক্ষে নিয়ে যায় এবং দরজা বন্ধ করে হাত-পা বেঁধে তাকে ধর্ষণ করে। এতে ভিকটিমের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হলে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার জন্য আসামি এরফান নাইলন দড়ি দিয়ে শ্বাসরোধ করে ভিকটিমকে হত্যা করে।  

পরবর্তীতে ভিকটিমের কাপড়-চোপড় পলিথিনে করে আসামি এরফানের বাসার পাশের একটি নালায় লুকিয়ে ফেলে এবং গভীর রাতে লাশটি গুমের উদ্দেশ্যে উক্ত মাদ্রাসার পিছনে একটি নর্দমায় ফেলে চলে আসে। এরফান আরো জানায়, সে বিষয়টিকে ধামাচাপা দেয়ার জন্য অপহরণের ঘটনা সাজিয়ে মুক্তিপণের টাকা দাবি করে।  

তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তারকৃত আসামির বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য  টেকনাফ মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।