খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় এভার কেয়ারে দুই মার্কিন বিশেষজ্ঞ 

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও চিকিৎসায় রাজধানীর এভার কেয়ার হাসাপাতালে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রের দুজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। আজ বুধবার (২৫ অক্টোবর) রাত ১০টা ৫০ মিনিটে হাসপাতালে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন তারা।  বিএনপির পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক খুদে বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।     মার্কিন এই দুই চিকিৎসক হলেন আমেরিকার বিখ্যাত জনস হপকিনস হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ইন্টারভেনশনাল অনকোলজি বিভাগের পরিচালক ক্রিসটোস স্যাভাস জর্জিয়াডেস এবং একই  হাসপাতালের হেপাটোলোজি বিভাগের পরিচালক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, সহযোগী অধ্যাপক জেমস পিটার হ্যামিলটন।  

এর আগে বুধবার (২৫ অক্টোবর) রাত ৭ টা ৪০ মিনিটে ঢাকায় আসেন এই দুই চিকিৎসক। বিদেশে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি না মেলায় বিএনপি চেয়ারপারসন  খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় বিদেশ থেকে চিকিৎসক নিয়ে আসা হলো।  

প্রসঙ্গত, এর আগে খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় দেশে গঠিত মেডিকেল বোর্ড দুইবার সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, বিএনপি নেত্রীর চিকিৎসায় টিপস জরুরি। কিন্তু দেশে এটি করার মতো বিশেষজ্ঞ এবং যন্ত্রপাতি নেই।

গত ৯ আগস্ট থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি আছেন বিএনপি নেত্রী। গত আড়াই মাসে কয়েক দফা তাকে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।

৭৮ বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন আথ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, লিভার, কিডনি, ফুসফুস ও হদরোগে ভুগছেন দীর্ঘদিন ধরে। তবে এখন লিভার সিরোসিসের অনেক জটিলতা আছে জানিয়ে চিকিৎসকরা বলছেন, পেটে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। বারবার বুকে পানি চলে আসছে।

হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড চিকিৎসার বিষয়ে সার্বিক সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাহী আদেশে দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছরের সাজা স্থগিত হওয়ার পর ২০২২ সালের ২৫ মার্চ ছয় মাসের জন্য বাসায় ফেরেন। এরপর সাময়িক এই মুক্তির মেয়াদ আরও আট বার বাড়ানো হয়েছে।

সেই মুক্তির দুটি শর্তের মধ্যে একটি ছিল, সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। তবে ২০২১ সালের শেষে পরিবারের পক্ষ থেকে তার ‘জীবন সংকটে’ জানিয়ে বিদেশে নেওয়ার জন্য সুযোগ চেয়ে আবেদন করা হয়। সে সময় বিএনপি একই দাবিতে রাজপথে টানা কর্মসূচি পালন করে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের পক্ষ থেকে তখনও বলা হয়, দেশে চিকিৎসার সব সুযোগ শেষ হয়ে গেছে। বিদেশে নেওয়ার সিদ্ধান্তে দেরি হলে যে কোনো সময় যে কোনো কিছু হয়ে যেতে পারে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের পক্ষ থেকে সে সময় বক্তব্য আসে তাদের নেত্রী ‘জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে’।

সে সময় প্রায় তিন মাস হাসপাতালে থেকে খালেদা জিয়া বাসায় ফেরেন। এবার তিনি আবার হাসপাতালে আড়াই মাস ধরে।

গত ৯ অগাস্ট হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর পরিবারের পক্ষ থেকে গত ২৫ সেপ্টেম্বর সরকারের কাছে আবার বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ চেয়ে আবেদন করা হয়। এবারও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, আইনের যে বিধান ব্যবহার করে তার সাজা স্থগিত করা হয়েছে, সেটি দুইবার ব্যবহারের সুযোগ নেই।

বিদেশে যেতে চাইলে খালেদা জিয়াকে কারাগারে গিয়ে আদালতে আবেদন করতে হবে অথবা রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

news24bd.tv/আইএএম