আহমেদ স্বপন মাহমুদের ৩ কবিতা

বায়োস্কোপ

কি চমৎকার দেখা গেল!

এখন আর আগের সেই বায়োস্কোপ দেখা যায় না। ছোটবেলায় আমরা অনেক দেখেছি সাবঅল্টার্ন বায়োস্কোপ।

এখন বাক্সপেটরা সমেত কিছু নেই চোখ রাখতে হয় না কোনো দৃশ্যে চোখের উপর দৃশ্য এসে এখন হুমড়ি খায় রং মেখে সঙ সেজে তামাশায়;

এখন মানুষ উড়ে যাচ্ছে বন্দুকের গুলির সাথে এ ওর ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে যুক্তি নামাচ্ছে;

গণতন্ত্র আউড়াচ্ছে, সংবিধান ঠাওরাচ্ছে তামাশা করছে;

আমরা দেখছি বাহবা দিচ্ছি, দিচ্ছি না;

মানুষে মানুষে রক্তপাত বাড়ছে টিভিপর্দায় দেখছি, পত্রিকায় পড়ছি এই শীতে ঠোঁট ফেটে যাচ্ছে জেল দিচ্ছি, লিপস্টিক মাখছি।

মানুষ দেখলেই উস্কানি আসছে বিভেদে জড়াচ্ছে শিয়াল ও সিংহের গল্প অকারণ শত্রু মনে হচ্ছে জেলখানা ভরে যাচ্ছে, মার হচ্ছে, গুলি চলছে;

গণতন্ত্র রেললাইনে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে একচুলও নড়ে নাই!

কী চমৎকার শুনা গেল!

পোস্টমডার্ন বায়োস্কোপ!

গলাটা ভিজাই

তোমাদের দেখে বিরক্ত লাগছে। অশ্রাব্য খিস্তিখেউড় যথেষ্ট হয়েছে অনুচিত বিভেদ অনেক করেছে খুন- নিরপরাধ শিশু-নারী-পৌঢ়-বয়স্কা সমীচীন অভিশম্পাত করছে।

তোমরা যাও এবার, থামাও গোলযোগ আমি এই অন্ধকারে বসে একাকী তরলে গলাটা ভিজাই।

মনে হচ্ছে অতীতকালে বেঁচে আছি দাস হয়ে, বন্দী হয়ে অত্যাচারী সম্রাটের রক্তচোখের শাঁসানির ভিতর--

ইল্যুশন মনে হচ্ছে চারপাশ, পৃথিবী। সূর্য উঠছে মানুষের রক্তের লাল নিয়ে প্রতিদিন রাত্রি নামছে রক্ত থামছে না তথাপি।

বিরক্ত লাগছে, তোমরা থামাও চালবাজি অনুচিত বিভেদ ও রক্তপাত ঘুমাব একটু, চূড়ান্ত জেগে উঠবার আগে তোমরা যাও, তোমরা সরে দাঁড়াও,দূরহও।

সন্ধ্যাতারা

সন্ধ্যার বাতাস ধীরে বহে।

ধীরে বহে যমুনার জল পদ্মা মেঘনা নিষ্পৃহ থাকে বঙ্গের সায়র অতল--

মনমরা হয়ে আছে পাখিরাও গাছে গাছে নাই তারাও কি উড়িবার তরে গেছে ফেরা-না-ফেরা সমান বৃথাই!

যারা বের হলো কাল রাতে সকাল হয় নি তবু আজ সাজ সাজ বাহিনির যৌথ অভিঘাতে হাঁক-ডাক নাই, দেহ রক্তরাজ--

পড়ে আছে, পড়ে নাই ভেসে গেছে জলে ডুবে গেছে নাও, পৈতা ছাড় রেহাই না হলে--

তোমরাও যেকোনো অশ্রাব্য মাতাল হিংসায় ডুবে আছো, তামাশার চাল!

সন্ধ্যার বাতাস ধীরে বহে--

সন্ধ্যাতারা জ্বলিতেছে রক্তের লালে!

news24bd.tv/ডিডি