গণবিলুপ্তির পথে হাঁটছে পৃথিবী, যা বলছেন গবেষকরা

বলা হয়ে থাকে, পৃথিবীতে কোনো প্রাণী বা প্রজাতিই স্থায়ী নয়। একদিন না একদিন তাদের বিলুপ্তি ঘটবেই। এটাই প্রকৃতির নিয়ম। কিন্তু পৃথিবীর ইতিহাসে কোনো কোনো সময় গণবিলুপ্তি ঘটেছে। যাকে 'ম্যাস এক্সটিংশন' বলা হয়ে থাকে। সহজভাবে বলতে গেলে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা মহাকাশের গ্রহাণু পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়ে বহু প্রজাতির বিলুপ্তি ঘটালে তাকে 'ম্যাস এক্সটিংশন' বলে।

পৃথিবীর বুকে এ পর্যন্ত ৫ বার এরকম বিপর্যয় ঘটেছে যা গ্রাস করেছিলো গোটা প্রাণীকুলকে। এতে অধিকাংশ স্থল প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যায়। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য গণবিলুপ্তিটি ঘটেছিলো ৬৬ মিলিয়ন বছর আগে। একটি গ্রহাণুর আঘাতে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিলো ডাইনোসর প্রজাতি। পৃথিবীর বুকে হেঁটে বেড়ানো এই প্রজাতির বিলুপ্তি নিয়ে এখনও গবেষণা চলছে বিভিন্ন দেশে।

কিন্তু বর্তমান বিজ্ঞানীরা বলছেন, ওটাতেই শেষ নয়, আমরা পার করছি আরেকটি গণবিলুপ্তির সময়।

সিএনএনের বরাতে একদল গবেষক জানিয়েছেন, আমরা এখন ৬ষ্ঠ গণবিলুপ্তির মধ্যে অবস্থান করছি। এর কারণ কোনো গ্রহাণু নয় বরং মানব সভ্যতা নিজেই। কারণ মানুষ নিজেই বাসযোগ্য এ পৃথিবীকে অবসবাসযোগ্য করছে। ভবিষ্যতে এই পরিস্থিতি আরও গুরুতর হবে বলে তাদের ধারণা।

এ বছরের নভেম্বরে প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রাণীকুলের বিভিন্ন প্রজাতি তার স্বাভাবিক গতির চেয়ে ৩৫ গুন বেশি গতিতে বিলুপ্তির পথে হাঁটছে।

প্রত্যেক বিলুপ্তির সময় অনেক প্রজাতি হারিয়ে যায় অন্যদিকে কিছু কিছু প্রজাতি টিকে থাকে। বিজ্ঞানী এবং গবেষক দলগুলোর মতামত, মানুষ যদি মনে করে যে হারিয়ে যাওয়ার এই চক্রে শুধু তারাই বেঁচে থাকবে, তাহলে এই ধারণা ভুল।

সমীক্ষাটির সহকারী লেখক জেরার্ডো সেবেলোস বলেছেন, পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাওয়া এই শূন্যস্থান অবশ্যই পূরণ হয় কিন্তু প্রকৃতির জীববৈচিত্র্যের মধ্যে কারা টিকে থাকবে আর কারাই বা হারিয়ে যাবে তা বলা কষ্টসাধ্য।  

news24bd.tv/SC