মায়ের কোলে চড়ে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হওয়া সেই ইফতু আর নেই

শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কাছে হার না মানলেও, নিউমোনিয়ার কাছে হার মানতেই হলো মো. ইমতিয়াজ কবির ইফতুকে। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ২০১৭-১৮ সেশনের এই শিক্ষার্থী মারা গেছেন।  

গতকাল বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে চট্টগ্রামের এভারকেয়ার হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকাকালীন ইমতিয়াজ ইফতুর মৃত্যু হয় বলে জানা গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে, শাবিপ্রবি কর্তৃপক্ষ।

কখনো মা-বাবার কোলে চড়ে, কখনো বন্ধুদের কাঁধে হাত রেখে, কখনো আবার হুইলচেয়ার বা স্টিলের লাঠিতে ভর করে বেড়ে ওঠা ইফতুর। শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) থেকে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন তিনি।  

জানা যায়, জন্মগতভাবেই ইমতিয়াজের ডান পা বাঁকা ছিল। পরে দেশে-বিদেশে তার চিকিৎসা করানো হয়। পায়ে দেওয়া হয় প্লাস্টার। কিন্তু প্লাস্টার খোলার সময় তার পা ভেঙে যায়। পরে তার দুই পায়েই সমস্যা দেখা দেয়। মেরুদণ্ডের হাড়েও সমস্যা দেখা দেয়। ইমতিয়াজ সোজা হয়ে বসতে পারেন না। হাতেও পুরোপুরি শক্তি পান না। তবুও বিভিন্ন শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও ইফতু ২০১৫ সালে চট্টগ্রাম স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান কলেজিয়েট স্কুল থেকে এসএসসি এবং ২০১৭ সালে চট্টগ্রাম কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৭-১৮ সেশনে কম্পিউটার সায়েন্সে ভর্তি হয় ইমতিয়াজ।

সেখান থেকে স্নাতক শেষ করে গত বছরের জুন মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাত ভিত্তিক জাপানি তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি কোডল্যাব এফজেডসির ঢাকা অফিসে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। ছেলে ইমতিয়াজ চাকরি পাওয়ায় পর নতুন করে স্বপ্ন দেখা শুরু করে তার বাবা-মা। চাকরির পর স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনযাপন শুরু করলেও নিউমোনিয়া এসে থমকে দিলো তার পরিবারের স্বপ্ন।

ইমতিয়াজের বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠী মো. হাসিবুর রহমান বলেন, ইফতুর কষ্ট শেষে এখন সুখ শুরু হওয়ার কথা ছিল আন্টি আর ইফতুর। কিন্তু সৃষ্টিকর্তার পরিকল্পনায় হয়তো অন্য কিছু ছিল। দীর্ঘ দুই মাস অসুস্থতার সাথে যুদ্ধ করে আমাদের বন্ধু পরপারে চলে গেছেন।  

আশরাফুল আলম নামের আরেক সহপাঠী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেন, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন একজন মানুষ হওয়ার সত্যেও আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সাইন্স বিভাগ পড়াশোনা শেষ করে নবীন প্রকৌশলী হয়েছিল মাত্র। তার অদম্য ইচ্ছে শক্তি এবং জ্ঞানের কারণে আমরা তাকে স্টিফেন হকিংয়ের সঙ্গে তুলনা করতাম।

তিনি লিখেন, তার মা তাকে নিয়ে অনেক কষ্ট করেছেন। কোলে নিয়ে নিয়ে স্কুল-কলেজ পড়িয়েছেন। মানুষের কথাকে কোন তোয়াক্কা না করে ইফতুকে মানুষের মতো মানুষ বানিয়েছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালে তার হুইল চেয়ার ঠেলতে ঠেলতে রাস্তা পার করতে করতে তার সাথে আড্ডা দেয় নাই এমন মানুষ খুব কম আছে। আজ ইফতু না ফেরার দেশে চলে গেছে। আর হবে না দেখারে বন্ধু, আর হবে না দেখা।

এদিকে ইমতিয়াজ কবির ইফতুর অকাল মৃত্যুতে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারে নেমে আসে শোকের ছায়া। এতে তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীা।  

ইমতিয়াজের বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠী মো. হাসিবুর রহমান বলেন, ইফতুর কষ্ট শেষে এখন সুখ শুরু হওয়ার কথা ছিল আন্টি আর ইফতুর। কিন্তু সৃষ্টিকর্তার পরিকল্পনায় হয়তো অন্য কিছু ছিল। দীর্ঘ দুই মাস অসুস্থতার সাথে যুদ্ধ করে আমাদের বন্ধু পরপারে চলে গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আল্লাহ আমার বন্ধুকে বেহেশত নসিব করুক।

আশরাফুল আলম নামের আরেক সহপাঠী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেন, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন একজন মানুষ হওয়ার সত্যেও আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সাইন্স বিভাগ পড়াশোনা শেষ করে নবীন প্রকৌশলী হয়েছিল মাত্র। তার অদম্য ইচ্ছে শক্তি এবং জ্ঞানের কারণে আমরা তাকে স্টিফেন হকিংয়ের সাথে তুলনা করতাম।

তিনি লিখেন, তার মা তাকে নিয়ে অনেক কষ্ট করেছেন। কোলে নিয়ে নিয়ে স্কুল-কলেজ পড়িয়েছেন। মানুষের কথাকে কোন তোয়াক্কা না করে ইফতুকে মানুষের মতো মানুষ বানিয়েছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালে তার হুইল চেয়ার ঠেলতে ঠেলতে রাস্তা পার করতে করতে তার সাথে আড্ডা দেয় নাই এমন মানুষ খুব কম আছে। আজ ইফতু না ফেরার দেশে চলে গেছে। আর হবে না দেখারে বন্ধু, আর হবে না দেখা।

এদিকে ইমতিয়াজ কবির ইফতুর অকাল মৃত্যুতে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারে নেমে আসে শোকের ছায়া। এতে তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

news24bd.tv/SHS