ইউনেস্কোর ‘ট্রি অব পিস’ পুরস্কার নিয়ে ড. ইউনূসের প্রতারণা

শ্রমিকের পাওনা বুঝিয়ে না দিয়ে শ্রম আদালতে শাস্তি পাওয়া শান্তিতে নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আরও একবার জালিয়াতির আশ্রয় নিলেন। এবার বিষয়টি নিশ্চিত করলো ইউনেস্কোর ঢাকা অফিস। জাতিসংঘের সংস্থা ইউনেস্কোর পুরস্কার পাওয়া নিয়ে মিথ্যাচার করেছেন তিনি যার তথ্য সরবরাহ করা হয় ইউনূস সেন্টার থেকে।

গত বৃহস্পতিবার ইউনূস সেন্টারের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান হয়, একাদশ গ্লোবাল বাকু সম্মেলনের শেষ দিনে ড. ইউনূসের হাতে ‘দ্য ট্রি অব পিস’ সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়। এ সম্মেলনে বিশেষ বক্তা হিসেবে ভাষণ দিয়েছেন তিনি। সম্মেলনের আয়োজক ছিল নিজামি গানজাভি ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার। এদিকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ইউনেস্কোর ‘দ্য ট্রি অব পিস’ পুরস্কার পাওয়ার খবরটি সত্য নয় বলে জানিয়েছে ইউনেস্কোর ঢাকা অফিস। বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশন (বিএনসিইউ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। সেখানে এই ঘটনাকে 'প্রতারণামূলক এবং পরিকল্পিত মিথ্যাচার' হিসেবে বর্ণনা করা হয়।

প্রতিষ্ঠানটি বলছে- প্যারিসের ইউনেস্কো সদর দফতর ড. ইউনূসের এই পুরস্কার পাওয়ার বিষয়ে একেবারেই অবহিত নয়।

আজারবাইজানের এনজিও 'নিজামি গনজভি ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারের একটি উদ্যোগ 'গ্লোবাল বাকু ফোরাম'। গত ১৫ ও ১৫ মার্চ এ ফোরামের একাদশ সভা হয় আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে। নিজামি গনজভি ট্রাস্ট পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী ট্রাস্টগুলোর একটি। আয়োজনেও থাকে জাকজমক, অংশগ্রহণকারীদের দেওয়া হয় নানা সুযোগসুবিধা। এ কারণে নিজামি সেন্টারের আয়োজনে যোগ দেন বিশ্বের খ্যাতনামা অনেকেই।

এবারের একাদশ গ্লোবাল বাকু ফোরামে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বর্তমান ও সাবেক মন্ত্রী, সরকারপ্রধান, রাজনীতিবিদ, এনজিও প্রতিনিধি, কবি, শিল্পী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, সমাজসেবক প্রমুখ। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন নোবেলজয়ীও ছিলেন।

অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস, নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী কৈলাস সত্যার্থী, রবার্ট এফ কেনেডি হিউম্যান রাইটসের প্রেসিডেন্ট কেরি কেনেডি।

নোবেল পুরস্কারজয়ী ড. ইউনুস সেখানে উপস্থিত থেকে বক্তব্যও রাখেন। সম্মেলনকালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেত্রেয়াসুস ও জাতিসংঘের অন্যতম আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল উইনি বিয়ানইমা, আজারবাইজানের প্রধানমন্ত্রী আলী আসাদভের সঙ্গে কুশল বিনিয়ময় করেন ড. ইউনুস।

ইসরায়েলি শিল্পী-ভাস্কর হেডভা সের ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক কূটনীতির শুভেচ্ছাদূত। দ্য ট্রি অফ পিস হলো হেডভা সেরের একটি ভাস্কর্য। শিল্পকর্মটি হলো গাছের ডালে আকাশের দিকে মুখ করে থাকা একটি পাখি যা জাতিসংঘের শান্তির মূলাবোধকে প্রকাশ করে।

২০১২ সাল থেকে এটি ইউনেস্কোর অফিসিয়াল ট্রফি হিসেবে স্বীকৃত। বিশ্বের শান্তিপ্রিয় বাক্তিকে ইউনেস্কো মহাপরিচালক কর্তৃক এই ট্রফি দেওয়া হয়। ২০১৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এই পুরস্কার/ট্রফি দেন ইউনেস্কোর তৎকালীন মহাপরিচালক ইরিনা বোকোরা। ২০২১ সালের ৮ জুন ইউনেস্কো মহাপরিচালক অস্ত্রে আজুলে আলজেরিয়ার শিল্পী রশিদ কোরায়শীকে এই পুরস্কার দেন।

একাদশ গ্লোবাল বাকু কনফারেন্দে বিশ্ব নেতাদের উদ্দেশে প্রফেসর ইউনুসের বিশেষ ভাষণ, ইউনেস্কা থেকে 'সি ট্রি অব পিস' পুরস্কার গ্রহণ শিরোনামে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রচার করে ইউনূস সেন্টার।

অথচ ইউনেস্কোর কোনো প্রতিনিধি বাকু ফোরামে অংশগ্রহণ করেনি, যা ইউনেস্কোর আজারবাইজানের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ নিশ্চিত করেছেন।

তাহলে ইউনুসকে ট্রি অব পিস কে দিলো?  শিল্পী হেডভা সের নিজামী সেন্টারের ১০৫ জন (নির্বাহী) সদস্যের তিনি একজন। কাজেই নিজামী সেন্টার আয়োস্ট্রিত সভায় তিনি আয়োজকদের পক্ষ থেকেই উপস্থিত ছিলেন।

শিল্পী হেডভা সের কয়েক বছর ধরেই তার 'ট্রি অব পিস'-এর প্রচারণা চালাচ্ছেন। ইজরায়েল, আবুধাবি, চীন সহ বিভিন্ন দেশে এই ভাস্কর্য স্থাপন করেছেন। পৃথিবীর বিভিন্ন ব্যক্তির হাতে এর রেপ্লিকা তুলে দিয়েছেন।

বাকু ফোরামে ইউনুসের হাতে এই রেপ্লিকা তিনিই তুলে দেন। একই দিনে তিনি আরো কয়েকজনের হাতে এই ভাস্কর্য তুলে দেন। তবে মজার ব্যাপার হলো, তার টুইটার (এক্স) হ্যান্ডেলে কয়েকজনের হাতে এই রেপ্লিকা তুলে দেওয়ার কথা উল্লেখ করলেও ইউনুসের নাম উল্লেখ করেননি।

ফোরামের সমাপনী ও ডিনার অধিবেশনে ৩৪ সেকেন্ডের সংক্ষিপ্ত আয়োজনে ইউনুসের হাতে এই ট্রফি তুলে দেওয়ার সময় উল্লেখ করা হয়, যেডভা সের তাঁর শান্তির প্রতীক ট্রি অব পিস' তুলে দিচ্ছেন ইউনুসের হাতে।  

কন্যাশিশু ও নারী শিক্ষার উন্নয়নে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ইউনেস্কো প্রধানমন্ত্রী শেষ হাসিনাকে 'ট্রি অব পিস' সম্মাননা দেওয়া হয়। ইউনেস্কোর মহাপরিচালক ইরিনা বোকোভা শেখ হাসিনাকে এ পদক তুলে দেন। সেখানে কেন শেখ হাসিনাকে অফিসিয়ালি এ পুরস্কার দেওয়া হলো তা উল্লেখ করা হয়েছে।

ইউনেস্কোর ওয়েবসাইটে পুরস্কারের যে ছবি দেওয়া হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, পুরস্কারের গায়ে লেখা থাকবে, 'ইউনেস্কোর মাননীয় মহাপরিচালকের পক্ষ থেকে সম্মাননা'। লিংক)। যা শেখ হাসিনার পুরস্কারেও লেখা রয়েছে, রশিদ কোরায়শীর পুরস্কারেও লেখা রয়েছে।

অথচ ইউনূসকে দেওয়া রেপ্লিকাতে লেখা আছে তাঁর নাম ও তিনি কত সালে নোবেল পেয়েছিলেন। ইউনেস্কো অফিসিয়ালি তাকে এ পুরস্কারে ভূষিত করছে, এমন কোনো কথা লেখা নেই।

ইউনেস্কোর আজারবাইজান কান্ট্রি রেপ্রেজেন্টেটিভ নিশ্চিত করেছেন ইউনেস্কোর কোনো প্রতিনিধি এবারের গ্লোবাল ব্যকু ফোরামে অংশগ্রহণ করেননি।

ট্রি অব পিস পুরষ্কার প্রসঙ্গে প্যারিসে ইউনেস্কো সদরদপ্তরে যোগাযোগ করলে তারা জানায়, এ ধরনের কোনো পদক ড. ইউনূস পাননি।

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে নতুন নতুন কৌশল ব্যবহার করে চলেছেন ড. ইউনূস। আন্তর্জাতিক অঙ্গনের বন্ধুদের কাছ থেকে বিবৃতি আনা, সেই বিবৃতি মোটা অংকের টাকা দিয়ে বিজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করা। সর্বশেষ একজন শিল্পীর কাছ থেকে রেপ্লিকা নিয়ে, সেটিকে অফিসিয়াল পুরস্কার হিসেবে প্রচার করা ইউনুসের সর্বশেষ ধাপ্পাবাজি।

বাংলাদেশে যেমন স্বাধীনতা পদকের ডিজাইন করা শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী ব্যক্তিগতভাবে কাউকে তার ডিজাইনের রেপ্লিকা দিলে সেটিকে স্বাধীনতা পুরস্কার প্রাপ্তি হিসেবে প্রচার করা হলে প্রতারণা করা হবে। তেমনিভাবে ড. ইউনূসের এই কার্যক্রমকে অনেকের 'ধূর্ততা' বলে মন্তব্য করছেন। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখেন, যতবারই ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে কোন আইনি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে ততবারই তিনি নানাভাবে আন্তর্জাতিক মহলকে সক্রিয় করতে চেষ্টা করেছেন। উল্লেখ্য, দেশে বিচার বিভাগের মাধ্যমে আইনি প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার চিঠি সহ তারও ৪০ জন বৈশ্বিক নেতাকে দিয়ে বিবৃতি বিজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করা হয়।

ড. ইউনূসের প্রতারণার বিষয়টি স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে ইউনেস্কোর ঢাকা অফিসের বিবৃতিতেও। বিএনসিইউ-এর ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল জুবাইদা মান্নানের সাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়- ‘সম্প্রতি ঢাকার কয়েকটি দৈনিক পত্রিকায় এবং ইউনুস সেন্টারের অফিসিয়াল ওয়েব পেজে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ইউনেস্কো কর্তৃক ‌‘ট্রি অব পিস’ পুরস্কার প্রদানের সংবাদটিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়াধীন বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশনের (বিএনসিইউ) দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। ইউনূস সেন্টার থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তির বরাত দিয়ে পত্রিকায় যে সংবাদ ছাপা হয়েছে, তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৬ মার্চ আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে অনুষ্ঠিত ১১তম গ্লোবাল বাকু ফোরামে ড. ইউনূসকে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়। কিন্তু ইউনেস্কো ঢাকা অফিস জানিয়েছে, প্যারিসে ইউনেস্কো সদর দপ্তর এই বিষয়ে একেবারেই অবহিত নয়। ১১তম বাকু ফোরাম যেখানে এই সম্মাননা দেওয়ার সংবাদ প্রচার হয়েছে সেখানে ইউনেস্কোর কোনো অফিসিয়াল প্রতিনিধিত্বই ছিল না। ’

এতে আরও বলা হয়, ‘ইউনূস সেন্টার কর্তৃক দাবিকৃত সম্মাননা ইউনেস্কোর কোনো পুরস্কার বা সম্মাননাও নয়। ড. ইউনুসকে ‘ট্রি অফ পিস’ নামক একটি ভাস্কর্য স্মারক বা সম্মাননা প্রদান করেন ইজরাইলি ভাস্কর্য শিল্পী মিজ হেদভা সের। মিজ হেদভা নিজে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ‘ট্রি অফ পিস’ প্রদানে ইউনেস্কোর কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। নিজামী গনজবী ইন্টারন্যাশন্যাল সেন্টারের আমন্ত্রণে ইজরাইলি ভাস্কর্য শিল্পী মিজ হেদভা সের ড. ইউনূসকে এটি প্রদান করেন। মিস হেদভা সের ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক কূটনীতি বিষয়ক গুইউইল অ্যাম্বাসেডর, কিন্তু ইউনেস্কোর কোনো প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিনিধি নন এবং ইউনেস্কোর কোনো পুরস্কার বা সম্মাননা দেওয়ার এখতিয়ার রাখেন না। ’

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সুতরাং উল্লিখিত বাস্তবতার নিরিখে বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশন ড. মুহাম্মদ ইউনূস পরিচালিত ইউনূস সেন্টার কর্তৃক পাঠানো এবং প্রচারিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং প্রতারণামূলক বলে মনে করে তার নিন্দা জানাচ্ছে। বাংলাদেশ ইউনেস্কোর অন্যতম সক্রিয় সদস্য রাষ্ট্র। ভবিষ্যতে ইউনেস্কোর মতো জাতিসংঘের এমন একটি মর্যাদাপূর্ণ এবং সুখ্যাতিপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের নামের অপব্যবহার থেকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং ইউনূস সেন্টারকে সতর্ক করা হলো। এই বিষয়টি যেহেতু প্রতারণামূলক এবং পরিকল্পিত মিথ্যাচার সেহেতু তাদের বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তার ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। ’

এতে বলা হয়, ‘১ জানুয়ারি বাংলাদেশের আদালত ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং গ্রামীণ টেলিকমের আরও তিনজন সিনিয়র কর্মকর্তাকে শ্রম আইন লঙ্ঘনের দায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড এবং প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার সহযোগীরা এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন যা বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন। এছাড়া আয়কর আইন লঙ্ঘনের জন্য তার ব্যক্তিগত আয়কর দাবি আদালতে বিচারাধীন। সুতরাং তিনি যতদিন আদালত কর্তৃক নির্দোষ প্রমাণিত নন, ততদিন তাঁকে কোনো মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার কিংবা সম্মাননা প্রদান সমীচীন নয়। বাংলাদেশে ইউনেস্কোর সঙ্গে কার্যক্রমের জন্য সরকারের ফোকাল পয়েন্ট হচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়াধীন। বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশনের দায়িত্ব হচ্ছে, কেউ যাতে ইউনেস্কোর নামের অপব্যবহার কিংবা অপপ্রয়োগ না করতে পারে সেটি নিশ্চিত করা। সে হিসেবে ইউনেস্কোর নাম অপব্যবহারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশনের পক্ষ থেকে ইউনেস্কো ঢাকা অফিস এবং ইউনেস্কোতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধির সঙ্গে পরামর্শ করে ইউনেস্কো সদর দপ্তরকে অবহিত করা হবে। ’

news24bd.tv/আইএএম